লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন সাইফউদ্দিন। ইনজুরি কাটিয়ে নিজের ছন্দ ফিরে পাওয়ার চেষ্টায় তাঁর সঙ্গী মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম। সে সাথে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন লিগ হয়েছে তাঁর প্রত্যাবর্তনের মঞ্চ। বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলে আবার নিজের জায়গাটা ফিরে পেতে লড়াই করছেন ঘাম ঝড়াচ্ছেন সাইফউদ্দিন।
কোমরের এক ইনজুরিতে বাদ পড়েছিলেন জাতীয় দল থেকে। সে ইনজুরি কেড়ে নিয়েছে লম্বা একটা সময়, হয়েছে অস্ত্রপচারও। মাঝে নানান বিতর্কেও জড়িয়ে ফেলেছিলেন নিজেকে। কিন্তু এখন পুরোদস্তুর মনোযোগ দিচ্ছেন মাঠের ক্রিকেটে। ডিপিএলে ভাল একটা সময়ও পার করছেন তিনি।
এবারের ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে আবাহনীর হয়ে খেলছেন সাইফউদ্দিন। ব্যাট ও বল হাতে সমানতালে পারফর্ম করছেন তিনি ।একজন পেস বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে তাঁর বেশ একটা কদর রয়েছে বাংলাদেশের ক্রিকেটে। একটা ভারসাম্যপূর্ণ দল গঠনে তিনি বাড়তি এক স্বস্তিদায়ক পরিস্থিতিতে রাখেন টিম ম্যানেজমেন্টকে। বল হাতে স্লগওভারে বোলিং করা ছাড়াও ব্যাটটা দারুণ চালাতে জানেন সেই ইনিংসের শেষ দিকে।
তাই করে যাচ্ছেন এবারের ডিপিএলেও। তিনটি ইনিংসে ব্যাট করার সুযোগ পেয়েছেন সাইফউদ্দিন। স্বাভাবিকভাবেই ইনিংসের শেষ দিকে। একটি ইনিংসে মাত্র এক রানে ফিরে গিয়েছিলেন সাজঘরে। তবে বাকি দুই ইনিংসে নিজের ব্যাটিং সামর্থ্যের প্রমাণ রেখেছেন। এক ইনিংসে অপরাজিত ছিলেন ৪০ করে। আরেক ইনিংসেও ছিলেন শেষ অবধি, রান করেছিলেন ৪৩।
রান করার পাশাপাশি নিজের অন্যতম অস্ত্র বোলিংটাও বেশ শান দিয়ে নিচ্ছেন সাইফউদ্দিন। পাঁচটি ম্যাচ খেলেছেন তিনি। উইকেটের ঘরে পড়েছে সাতটি দাগ। মোদ্দাকথা নিজের সবটুকু দিয়ে আবার ফেরার সর্বোচ্চ চেষ্টাটা করে যাচ্ছেন সাইফউদ্দিন। নিজেকে ফিরে পেতে চেষ্টার কমতি নেই তাঁর।
সাইফের ফেরাটা বাংলাদেশের জন্যেও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে ক্ষুদ্র সংস্করণের ক্রিকেটের প্রেক্ষাপটে। চলতি বছরের শেষভাগে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে হতে চলেছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। সেখানে দল একজন বাড়তি পেসার খেলাতে গেলে একজন ব্যাটার সংকট হতে পারে। সেদিকটা বিবেচনা করলে সাইফউদ্দিন হতে পারেন একজন যথার্থ পছন্দ।
তাঁর পেস বোলিংটা খুব বেশি কার্য্যকর প্রমাণিত হতে পারে অস্ট্রেলিয়ার পেস বান্ধব উইকেটে। তাছাড়া ইনিংসের শেষের দিকে পাওয়ার হিট করবার মত যথেষ্ট পেশি শক্তি রয়েছে তাঁর। সে শক্তি কাজে লাগিয়ে অনায়াসে বলকে মাঠ ছাড়া করার সক্ষমতা রয়েছে তাঁর। একজন ফিনিশারের দায়িত্ব খুব ভালভাবেই পালন করতে পারবেন তিনি। এবারের ডিপিএলেই তো লেজেন্ড অব রুপগঞ্জের বিপক্ষে ২৯ বলের ৪৩ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলে তাঁর পেশিশক্তির প্রমাণ দিয়েছেন।
এখন দেখবার পালা যে নিজেকে ঠিক কতখানি মেলে ধরতে পারেন সাইফউদ্দিন। জাতীয় দলের নিজের হারানো জায়গা আবার ফিরে পেতে বেশ কাঠখড় পোড়াতে হবে তাঁকে সে বিষয় সন্দেহ নেই। তবুও হয়ত সকলের প্রত্যাশা তিনি আবার স্বরুপে ফিরবেন কিংবা ফিরবেন আরও বেশি পরিণত হয়ে।