পুরোপুরি তৈরি হওয়ার আগেই সু্যোগ চলে আসবে দেশের হয়ে খেলার। কিপিংয়ে অজস্র খুঁত খুঁজে পাবেন বিশেষজ্ঞরা, ব্যাটিংও তেমন একটা আহামরি নয়। ব্যাট হাতে ধারাবাহিকতার অভাব, এক্স ফ্যাক্টর না হতে পারা দল থেকে ছুঁড়ে ফেলে দেবে। দুর্ভাগ্য এতটাই, ঠিক সেইসময় উদয় হবে স্বয়ং মহেন্দ্র সিং ধোনি নামক কোনও এক মহাতারকার। আগামী ১৪ টা বছর জীবন সুযোগ দেবে না। জাতীয় দলে নিয়মিত হয়ে ওঠাও হবে না। মাঝে উথালপাতাল হবে জীবন। উত্তাল ঝড়ো হাওয়ায় বিবাহবিচ্ছেদ হবে। প্রাণপ্রিয় স্ত্রী হাত ধরবে অন্যতম প্রিয় বন্ধুটির সঙ্গে।
তবু এতকিছুর পরও হাসি থেকে যাবে মুখে। ধোনি ও তাঁর সমসাময়িকরা যখন অবসর নিয়ে ফেলেছেন। উনি তখনও টিম প্র্যাক্টিসে সবার আগে নেটে ঢুকবেন। ব্যাটিং সেরে কিপিংয়ের সময় ভুল ধরিয়ে দেবেন নতুন বোলারদের। তাঁর হাতেই নতুন করে কেরিয়ারের গ্রাফ উঠবে বরুন চক্রবর্তীর, নেট থেকেই খুঁজে আনা হবে প্রসিদ্ধ কৃষ্ণাদের। সোশ্যাল মিডিয়ায় ফ্যানবেস নেই, মিডিয়ার মাতামাতি নেই.. লোকে বলবে, শিং ভেঙে বাছুরদের দলে জুটেছেন।
তবুও দীনেশ কার্তিক খেলে যাবেন!
মানুষ নরম মাটিতে আঁচড়ায় বেশি, দীনেশের ক্ষেত্রে কথাটা যেন আরও বেশি করে বোঝা যায়। মনে আছে, কেকেআরের অধিনায়কত্ব পাওয়ার পর আনন্দবাজার কোহলির পাশে দীনেশ কার্তিককে ‘ফিশফ্রাইয়ের পাশে আলুর চপ’ বলেছিল। তবু ভালোবাসা কমবে না বাইশ গজের প্রতি, খেলার প্রতি, দলের প্রতি। বিনা কোনও বিতর্কে টুর্নামেন্টের মাঝে অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেবেন ডিকে।
এরই মাঝে কিছু নিদাহাস ট্রফির ফাইনাল, আজকের ব্যাঙ্গালোর বনাম রাজস্থান আসবে। আর ঠিক তখনই জ্বলে উঠবেন দীনেশ কার্তিক। রুবেল হুসেনের ১৯ তম ওভারে ২২ রান নেবেন। ম্যাচের শেষ বলে ছক্কা মেরে ম্যাচ জেতাবেন দেশকে। রবিচন্দন অশ্বিন, নভদীপ সাইনি, প্রসিদ্ধ কৃষ্ণাদের চাবকে ২৩ বলে ৪৪ করবেন।
বিশ্ব ক্রিকেটের ইতিহাসে তাঁর মতো অভাগা আর খুঁজলে পাওয়া যাবে কিনা জানা নেই। তবে এই ইনিংসগুলোর পরেও সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রেন্ড করবে না তাঁর ইনিংস৷ তিনি বরাবর ট্রোলারদের নিশানাই থেকে যাবেন।
ডিকে নিজের জীবনে কতটা সফল.., বিচার করার আমি কেউ নই। আর কী কী করলে গোটাবিশ্বের সামনে নায়ক হওয়া যায়, তাও ঠিক জানা নেই। শুধু বুঝি, দীনেশ কার্তিক হওয়া সহজ নয়। সারাজীবন ধরে নেগেটিভিটি মাঠের বাইরে স্কুপ করে পাঠিয়ে দেওয়া সবার কম্ম নয়।