ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগ টুর্নামেন্টটি মূলত ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ হিসেবেই বেশি পরিচিত। বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ টুর্নামেন্ট এটি৷ মিডিয়া কাভারেজের পাশাপাশি দর্শকদেরও বিশেষ আগ্রহ থাকে এই টূর্নামেন্টের প্রতি। সীমিত ওভারের এই টুর্নামেন্টের পারফরম্যান্স একজন ক্রিকেটারের আন্তজার্তিক ভবিষ্যৎ নির্ধারন করে দিতে পারে।
তাই তরুণ ক্রিকেটারসহ জাতীয় দলের আশেপাশে থাকা খেলোয়াড়দের জন্য ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি মঞ্চ। গত এক দশকের মত এবারের মৌসুমেও অনুষ্ঠিত হয়েছে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের আসর। ইতোমধ্যে প্রথম পর্বের খেলা শেষ হয়েছে। পয়েন্ট টেবিলের উপরের ছয়টি দল এবার খেলবে দ্বিতীয় পর্ব বা সুপার লিগে।
প্রথম পর্বে বল হাতে নজর কেড়েছেন বেশ কয়েকজন। এদের মধ্যে রাকিবুল হাসানের মত তরুণেরা যেমন আছেন, আছেন নাজমুল অপুর মত বাদ পড়া ক্রিকেটারও। তাদের মধ্যে সেরা কয়েকজন বোলার নিয়ে আজকের আয়োজন।
- পারভেজ রাসুল
ব্যাটসম্যানদের তালিকায় উপরের দিকে বিদেশিদের নাম তেমন না থাকলেও বোলিংয়ের সবচেয়ে উপরের নামটা ভারতের পারভেজ রাসুলের। ভারতীয় এই অলরাউন্ডার পুরো টূ্র্নামেন্টেই বল হাতে দাপট দেখিয়েছেন।
১০ ম্যাচে হাত ঘুরিয়ে তিনি উইকেট নিয়েছেন বিশটি৷ রান খরচে তার কৃপণতা রীতিমতো অবিশ্বাস্য, ওভার প্রতি খরচ করেছেন মোটে ২.৮৫ রান। শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকার অন্যতম কারন এই স্পিনারের এমন পারফরম্যান্স।
- রাকিবুল হাসান
২০২০ সালের বিশ্বকাপজয়ী অনূর্ধ্ব ১৯ দলের পরিচিত মুখ রাকিবুল হাসান। এবারের ডিপিএলেও বল হাতে নিজের নামের প্রতি সুবিচার করেছেন তিনি। ২২.৩৭ বোলিং গড়ে তিনি উইকেট শিকার করেছেন ১৯টি। ইকোনমি ৪.৪৩। টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই প্রাইম ব্যাংকের বোলিং আক্রমণের নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন এই বাঁহাতি স্পিনার।
- চিরাগ জানি
স্বদেশী পারভেজ রাসুলের মতই বল হাতে উত্তাপ ছড়িয়েছেন ভারতীয় মিডিয়াম ফাস্ট বোলার চিরাগ জানি। লিজেন্ড অব রূপগঞ্জের হয়ে খেলা চিরাগ জানি এবারের ডিপিএলে ১৮টি উইকেট নিয়ে উইকেট শিকারির তালিকায় তিন নম্বরে রয়েছেন।
মাত্র ২০.৩৭ বোলিং গড়ের পাশাপাশি চিরাগের ইকোনমি ৫.৫৩। লিজেন্ড অব রূপগঞ্জের ম্যানেজম্যান্টের ভরসার প্রতিদান দারুন ভাবে দিয়ে যাচ্ছেন এই ভারতীয় ক্রিকেটার।
- নাজমুল ইসলাম অপু
ভিন্ন রকম উদযাপন দিয়ে আগমনের পর থেকেই বাংলাদেশের ক্রিকেট পাড়ায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন নাজমুল অপু। জাতীয় দলে অভিষেকও হয়েছিল কিন্তু অফ ফর্মের কারনে বাদ পড়েছিলেন অনেক দিন আগেই।
তবে, এবারের ডিপিএলে ১০ ম্যাচে ১৭ উইকেট শিকার করে অপু প্রমান করেছেন তিনি ফুরিয়ে যাননি। এসময় ওভার প্রতি তিনি রান খরচ করেছেন মাত্র ৩.৬৪ এবং বোলিং গড়টা বিশের কাছেই।
- মাসুম খান টুটুল
ডানহাতি ফাস্ট বোলার মাসুম খান অনেকটাই অপরিচিত ঘরোয়া ক্রিকেটে। খেলাঘর সমাজকল্যাণ ক্লাব অবশ্য ভরসা রেখেছিল তার উপর। দারুন ভাবেই এবারের ডিপিএলে নিজেকে চিনিয়েছেন তিনি।
১৭ উইকেট শিকার করে টুর্নামেন্টের সেরা বোলারদের তালিকায় পাঁচ নম্বরে রয়েছেন মাসুম খান। ৪.৮৯ ইকোনমি তে বল করা এই ডানহাতি’র বোলিং গড় ২৫ এর একটু বেশি।
- কাজী অনিক ইসলাম
নিষেধাজ্ঞা থেকে ফেরার পর প্রথমবার মাঠে নেমেছিলেন কাজী অনিক। প্রত্যাবর্তনের মঞ্চেই প্রমান করেছেন নিজেকে। গাজী গ্রুপ অব ক্রিকেটার্সের হয়ে ১০ ম্যাচে ১৭ উইকেট শিকার করেছেন এই ফাস্ট বোলার। সেরা বোলারের তালিকায় ছয় নাম্বারে থাকা অনিকেট বোলিং গড় ২২.৯৪ আর ইকোনমি সাড়ে পাঁচের একটু উপরে।
- মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী
না, সর্বোচ্চ উইকেট শিকারীর তালিকায় সেরা দশেও নেই মৃত্যুঞ্জয়। কিন্তু ডেথ ওভারে অবিশ্বাস্য পারফর্ম করা মৃত্যুন্জয়কে পরিসংখ্যান বাদ দিয়েই বিচার করতে হবে। শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের হয়ে নিয়মিত ডেথ ওভারে বল করেও দুর্দান্ত ইকোনমিক্যাল তিনি, ওভার প্রতি ৪.৮৬ রান খরচ করেছেন তিনি। পাশাপাশি তুলে নিয়েছেন প্রতিপক্ষের ১৫ উইকেট।
এছাড়াও তরুণ তানজিম হাসান সাকিব, শেখ মেহেদী হাসানের মত বোলাররা রয়েছেন সেরাদের তালিকায় উপরের দিকে। রয়েছেন অভিজ্ঞ বাঁহাতি স্পিনার এনামুল হক জুনিয়র এবং সানজামুল ইসলাম।