টড মারফি: আরেক নাথান লিঁও

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের জন্য অস্ট্রেলিয়ার বিশাল এক স্কোয়াড ঘোষণা। টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ছাড়াও ঘোষণা করা হয়েছে অস্ট্রেলিয়া এ দল। বিশাল স্কোয়াড দেখতে গিয়ে চোখ আটকে গেল একটি নামে – টড মারফি।

কে এই মারফি? একেবারেই অপরিচিত এক নাম। এই টড মারফি ছাড়া এ দলের প্রায় ক্রিকেটারই বেশ পরিচিত বলা চলে।

মাত্র দুইটি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেই অস্ট্রেলিয়া এ দলে ডাক পেয়েছেন তিনি। এই অফ স্পিনারের উঠে আসার পেছনে বেশ অবদান আছে অস্ট্রেলিয়ার তারকা স্পিনার নাথান লিঁও’র। ডান হাতি এই অফ স্পিনারের বোলিং অ্যাকশনটাও অবিকল লিঁওর মত। বলে টার্নও আছে বেশ। দূর থেকে দেখলে মনে হবে নাথান লিঁও বল করছেন। অল্প সময়েই অ্যাকশন আর টার্ন দিয়ে নজর কেড়েছেন অনেকের। আর ডাক পেয়ে গেছেন শ্রীলঙ্কা সফরে অস্ট্রেলিয়া এ দলেও।

নিজ অঞ্চলের হয়ে পুরো মৌসুম খেলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ঠিক তখনি অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচক প্যানেল থেকে ফোন, ‘মারফি তুমি অস্ট্রেলিয়া এ দলের সাথে শ্রীলঙ্কা সফরে যাচ্ছো।’

২০২০ মৌসুমে করোনার হানায় তখন পুরো বিশ্বজুড়েই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বন্ধ। সেসময় অ্যাডিলেড ওভালে নেটে অনুশীলনে ব্যস্ত মারফি। আর তাঁকে শেখাচ্ছিলেন লিঁও। মারফি বলেন, ‘নিক ম্যাডিনসন আমাকে এসে বললো নাথানের সাথে কাজ করতে চাই কিনা। আমি খুবই উৎসাহী হয়ে পড়ি। তারা দুইজনই তরুণদের জন্য কাজ করেছে। নাথান আমার সাথে অনুশীলনের ফাঁকে ফাঁকে সময় দিত। আমি তখন পেশাদার ক্রিকেটে খুবই নতুন। তাঁর মত একজনের কাছ থেকে শিখতে পারাটা অনেক বড় কিছু। আমি ওই নেট অনুশীলন থেকে অনেক কিছু শিখেছিলাম। সে আমাকে বলেছিল কোনো প্রয়োজন হলে তাঁকে জানাতে।’

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে জায়গা হয়নি মারফির। কিন্তু ১১ বছর আগে শ্রীলঙ্কার মাটিতেই তাঁর আইডল নাথান লিঁও’র অভিষেক হয়। ওই সময় লিঁও মাত্র চারটি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেছিল; মারফির চেয়ে দুই ম্যাচ বেশি।

জাতীয় দলে খেলার ব্যাপারে মারফি বলেন, ‘এটা এখনও অনেক দূরে আমি মনে করি। তবে আমি জানি এ দলের সাথে এই সফরে অনেক কিছুই হতে পারে। আমাকে আরও কঠোর পরিশ্রম করতে হবে কারণ এটা (জাতীয় দল) খুব বেশি দূরে নয়।’

১৫-১৬ বছর পর্যন্ত একজন ব্যাটার হিসেবেই খেলেছেন তিনি। মাঝেমধ্যে নেটে টুকটাক অফ স্পিন করতেন। মিডিয়াম পেসও করেছেন তিনি। এরপর নর্দান রিভার্সের হয়ে অনুশীলনে বেশ পরিচিত কোচ ক্রেইগ হাওয়ার্ডকে পান তিনি। হাওয়ার্ড মারফির বোলিংয়ে মুগ্ধ হয়ে যান। মারফি বলেন, ‘আমি সত্যি জানতাম না তিনি কে। আমরা একসাথে ছিলাম। এরপর আমি হাওয়ার্ডস ক্লাবে যাই। এবং সেখান থেকেই নতুন শুরু।’

তিন বছর বাদে এরপর গেল ২০২০ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলার সুযোগ পান তিনি। বাবা জেমিও ছিলেন এখন প্রিমিয়ার লিগের ক্রিকেটার। আশি-নব্বইয়ের দশকে সেন্ট কিলডার হয়ে নিয়মিতই খেলেছেন জেমি। কিংবদন্তি অজি তারকা শেন ওয়ার্নের সাথেও ঘরোয়া ক্রিকেট খেলেন মারফির বাবা।

বাবার মতই ক্রিকেটে ক্যারিয়ার গড়ার প্রত্যয় নিয়ে এসেছিলেন। অল্প সময়েই নজরকাড়া বোলিংয়ে সুযোগ পেয়ে গেছেন এ দলে। এবার এখানে নিজের সেরাটা দিতে পারলে নাথান লিঁওর ব্যাকআপ হিসেবে জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়াটা হয়ত সময়ের ব্যাপার হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link