সাগরিকায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচের প্রথম দিনটায় লড়াই হয়েছিল সমানে সমানে। দ্বিতীয় দিনে অবশ্য খানিকটা এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ। তবে টেস্টের তৃতীয় দিন তামিম, লিটনদের ব্যাটে চড়ে পুরোপুরি নিজের করে নিয়ছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ চালকের আসনে বসলেও প্রশ্ন জাগে চট্টগ্রামের ব্যাটিং স্বর্গে ম্যাচের ফল বের হবে তো?
গতকালই ব্যাট করতে নেমে দারুণ শুরু করেছিলেন তামিম ইকবাল ও মাহমুদুল হাসান জয়। ঠিক সেখান থেকেই আজব সকালে শুরু করেন এই দুই ওপেনার। ঠিক পাঁচ বছর পর বাংলাদেশ ওপেনিং জুটিতে শত রানের দেখা পায়। জয় ১৪২ বল খেলে ৫৮ রানে ফিরে গেলে ভাঙে তাঁদের ১৬২ রানের ওপেনিং জুটি। টেস্ট ক্রিকেটে যা বাংলাদেশের চতুর্থ সর্বোচ্চ ওপেনিং জুটি।
জয় ফিরে গেলেও চলতে থাকে ঘরের ছেলে তামিমের ব্যাট। তবে বাংলাদেশ শিবিরে হঠাতই একটা ঝড় বয়ে যায়। জয় ফিরে যাওয়ার পর দ্রুতই নিজেদের উইকেট দিয়ে আসেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুমিনুল হক। ফলে একটা শঙ্কা ছিল এমন দারুণ শুরুর পরেও বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইন আপ ধ্বসে পড়বে না তো।
তবে সেই শঙ্কাকে উড়িয়ে দিয়ে ম্যাচে আবার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় বাংলাদেশ। তামিম ইকবালকে এবার সঙ্গ দেন মুশফিকুর রহিম। দুজনই বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইন আপের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ব্যাটার। আর সেই অভিজ্ঞতাটা পুরোপুরি কাজে লাগিয়েছেন এই দুই ব্যাটার।
যদিও ব্যাট হাতে খুব একটা ভালো ছন্দে ছিলেন না মুশফিকুর রহিম। টেস্ট ক্রিকেটেও তাঁর ব্যাটে রান আসছিল না। তবে আজ শ্রীলঙ্কার বোলারদের বিপক্ষে যেন সেই পুরনো মুশি। দেখে শুনে একপ্রান্ত আগলে রেখেছেন। প্রথমে তামিমকে যথাযথ সঙ্গ দিয়েছেন। এরপর লিটনের সাথেও ছিলেন শেষ পর্যন্ত।
এরমাঝেই আজ ক্যারিয়ারের দশম সেঞ্চুরির দেখা পান তামিম ইকবাল। প্রায় তিন বছর পর টেস্ট ক্রিকেটে এই ম্যাজিকাল ফিগারের দেখা পেলেন তামিম ইকবাল। আজ অবশ্য ঘরের মাঠে তামিম বড় ইনিংস খেলার আভাষই দিচ্ছিলেন। তবে গরমের কারণে শেষ পর্যন্ত আর পেরে উঠেননি। দৌড়ে রান নিতেও কষ্ট হচ্ছিল। ফলে তাঁকে রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে ড্রেসিং রুমের দিকে যেতে হয় ১৩৩ রানের অপরাজিত ইনিংস নিয়ে। কাল আবার মাঠে নামলে হয়তো এই ইনিংসটাকে বড় করতে পারবেন তামিম।
তামিম ফেরত গেলেও তামিমের অভাব বোধ করতে দেননি লিটন দাস। এই ব্যাটসম্যান যে তাঁর ক্যারিয়ারের সেরা ফর্মে আছেন তা আরেকবার প্রমাণ করলেন। শুরুতে বরাবরের মত একটু সময় নিয়ে আস্তে আস্তে নিজের ঝুলি খেলেছেন। সাদা পোশাকের ক্রিকেটেও উইকেটের চারপাশে অসাধারণ সব শট খেলেছেন। আজ দিনের খেলা শেষে এই ব্যাটার অপরাজিত আছেন ৫৪ রান নিয়ে। বাংলাদেশ মাত্র ৩ উইকেট হারিয়ে তুলে নিয়েছে ৩১৮ রান।
ফলে তামিম, লিটন, জয়দের এমন ব্যাটিং এর পর দিনটা যে পুরোপুরি বাংলাদেশের তাতে কোন সন্দেহ নেই। তবে টেস্টের তৃতীয় দিন শেষেও এখনো দ্বিতীয় বাংলাদেশ নিজেদের প্রথম ইনিংসই শেষ করতে পারেনি। ফলে চট্টগ্রামের এই ব্যাটিং উইকেটে ম্যাচ জিততে হলে কাল দ্রুত লিড নিয়ে আবার লংকানদের অল আউট করতে হবে। সবমিলিয়ে এই টেস্টে ফলে আসাটা যেন কঠিনই হয়ে যাচ্ছে।