উদ্বোধনের শতককথন

দীর্ঘ পাঁচবছরের এই খরা এবার কাটিয়েছেন তামিম ইকবাল এবং তরুণ মাহমুদুল হাসান জয়। বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসে উদ্বোধনী জুটিতে শতরান পাওয়ার ঘটনা এর আগে সাতবার ঘটেছে। আর চট্টগ্রামে তামিম-জয়ের কল্যানে সংখ্যাটা ‘আট’ হল। মজার ব্যাপার, এই আটটি জুটির সবকয়টিতে 'ইকবাল' নামের ব্যাটসম্যান রয়েছেন। যার সাতটি আবার তামিম ইকবালের দখলে।

সাদা পোশাকে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের নিয়মিত খেলা হয় না। সবমিলিয়ে, বছরে গড়ে হয়তো দশ-বারোটি টেস্ট ম্যাচ খেলা হয়। এটির প্রভাবে হয়তো ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)-এর র‍্যাংকিং কিংবা ব্যক্তিগত অর্জনের ক্ষেত্রে তুলনামূলক পিছিয়ে থাকে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।

আর এই লাল বলের ফরম্যাটে সবশেষ কবে বাংলাদেশের কোন ওপেনিং জুটিকে শতরানের পার্টনারশিপ করতে দেখেছেন? মনে পড়ে? মনে না পড়াই স্বাভাবিক, কারণ গত দুই চার বছরেও এমনটি ঘটেনি। সর্বশেষ পাঁচবছর আগে শতরানের জুটি বেঁধে ছিল বাংলাদেশের টেস্ট ওপেনাররা। ইনিংসের হিসেবে ৬১ ইনিংস আগে।

দীর্ঘ পাঁচবছরের এই খরা এবার কাটিয়েছেন তামিম ইকবাল এবং তরুণ মাহমুদুল হাসান জয়। বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসে উদ্বোধনী জুটিতে শতরান পাওয়ার ঘটনা এর আগে সাতবার ঘটেছে। আর চট্টগ্রামে তামিম-জয়ের কল্যানে সংখ্যাটা ‘আট’ হল। মজার ব্যাপার, এই আটটি জুটির সবকয়টিতে ‘ইকবাল’ নামের ব্যাটসম্যান রয়েছেন। যার সাতটি আবার তামিম ইকবালের দখলে।

  • নাফিস ইকবাল-জাভেদ ওমর

বাংলাদেশের টেস্ট দল তখন সবেমাত্র হাঁটতে শিখেছে। ২০০৫ সালের জানুয়ারীতে ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ের মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ। ঢাকার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে নাফিস ইকবাল এবং জাভেদ ওমর প্রথমবারের মত উদ্বোধনী জুটিতে ১০০ রান পূর্ন করেন। এই দু’জন সেদিন জুটি বেঁধে ১৩৩ রান করেছিলেন।

  • তামিম ইকবাল-জুনায়েদ সিদ্দিকী

২০০৮ সালে নিউজিল্যান্ডের ডানেডিনে স্বাগতিকদের বিপক্ষে কোন উইকেট না হারিয়ে দলীয় ১০০ রান পূর্ন করেন তামিম ইকবাল এবং জুনায়েদ সিদ্দিকী। এই দুইজন ১৬১ রানের জুটি গড়েছিলেন।

  • তামিম ইকবাল-ইমরুল কায়েস

দুই বছর পরে আবারও ইংল্যান্ডের মাটিতে একই কীর্তি গড়েন তামিম ইকবাল এবং ইমরুল কায়েস। ক্রিকেটের প্রাণকেন্দ্র বিবচেনা করা হয় লর্ডসকে। আর সেই লর্ডসেই ২০১০ সালে ১৮৫ রানের দুর্দান্ত এক পার্টনারশিপ গড়েছিলেন এই দুইজন।

  • তামিম ইকবাল-ইমরুল কায়েস

একই সিরিজে আবারও উদ্বোধনী জুটিতে শতরানের দেখা পায় বাংলাদেশ। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে তামিম, ইমরুল মিলে তুলেছিলেন ১২৬ রান। ইংল্যান্ডের মত শক্ত প্রতিপক্ষে বিপক্ষে সে জুটি যেন ছিল সত্যিই প্রশংসনীয়

  • তামিম ইকবাল-ইমরুল কায়েস

বিদেশের মাটিতে দুইটি শতরানের জুটি গড়ার পর তামিম ইকবাল এবং ইমরুল কায়েস ঘরের মাঠেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটান। ২০১৪ সালে চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২২৪ রানের এক ‘ম্যারাথন’ জুটি গড়েছিলেন তামিম এবং ইমরুল।

  • তামিম ইকবাল-ইমরুল কায়েস

২০১৫ সালে খুলনায় তামিম ইকবাল এবং ইমরুল কায়েসের অতিমানবীয় পারফরম্যান্সের জোরে প্রায় হারতে থাকা ম্যাচ ড্র করতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ। পাকিস্তানের সাথে গড়া ৩১২ রানের এই জুটি নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের ইতিহাসে সেরা ওপেনিং পার্টনারশিপ।

  • তামিম ইকবাল-সৌম্য সরকার

শ্রীলঙ্কার ২০১৭ সালে সপ্তমবারের মত ওপেনিং জুটিতে ১০০ রান পার করতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ। গলে স্টেডিয়ামে তামিম ইকবাল এবং সৌম্য সরকারের অনবদ্য পার্টনারশিপে দলের স্কোরকার্ডে ১১৮ রান যোগ হয়েছিল।

  • তামিম ইকবাল-মাহমুদুল হাসান জয়

সর্বশেষ শতরানের তালিকায় নাম লিখিয়েছে তামিম ইকবাল এবং মাহমুদুল হাসান জয়ের উদ্বোধনী জুটি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চট্টগ্রামে ১৬২ রানের মুগ্ধতা ছড়ানো একটি ওপেনিং পার্টনারশিপ গড়েছিলেন তামিম এবং জয়।

ওপেনিং সমস্যা বাংলাদেশের জন্য খুবই পুরোনো। বারবার পরিবর্তন এনেও হয়নি সমাধান। সুযোগ দেয়া হয়েছে অনেককে, কিন্তু কেউই পারেনি তামিম ইকবালের যোগ্য সঙ্গী হয়ে উঠতে।

তবে, লিটন দাসের উত্থানে সাদা বলের ফরম্যাটে চিন্তা কিছুটা লাঘব হয়েছে। পাশাপাশি লাল বলের ওপেনার তরুণ মাহমুদুল জয়ও আশা দেখাচ্ছেন নতুন কিছু করার। হয়তো অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশের ওপেনাররা বিশ্বের শক্তিময় ক্রিকেট দলগুলোর ওপেনারদের সাথে পাল্লা দিয়ে রান করতে সক্ষম হবে।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...