দুর্দান্ত থ্রো, চোখ ধাধাঁনো ফিল্ডিংয়ে ক্রিকেট ইতিহাসে অনেকেই বনে গেছেন সেরা ফিল্ডার। ক্রিকেট ইতিহাসে সেরা ফিল্ডার তালিকা করলে সে জায়গায় অনায়াসে সবার উপরের জায়গা করে নিবেন জন্টি রোডস, অ্যান্ড্রু সাইমন্ডসরা। থাকতে পারেন ভারতের মোহাম্মদ কাইফ কিংবা যুবরাজ সিংরাও।
যদিও, ফিল্ডারদের নিয়ে আসলে সারা বিশ্বজুড়েই আলোচনা হয় খুব কম। ক্রিকেট মাঠে ফিল্ডারদের দায়িত্বটা অনেক। দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়ে ইতিহাসে অনেকেই বিশেষ নজর কেঁড়েছেন সবার। ফিল্ডিং দিয়েও সেরা হওয়া যায় সেটিও করে দেখিয়েছেন অনেকেই।
অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসে অন্যতম সেরা ফিল্ডারদের একজন রিকি পন্টিং। ফিল্ডার হিসেবে তিনি ছিলেন দুর্দান্ত। তবে থ্রোয়িংয়ের জন্য অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম সেরা ছিলেন অলরাউন্ডার অ্যান্ড্রু সাইমন্ডস। নিখুঁত থ্রো-য়ে স্টাম্প ভেঙে দিতেন তিনি। মাঠের সব জায়গায় ছিলেন সমান দক্ষ।
যেখানেই দাড়াতেন ফিল্ডার হিসেবে নিজের সেরাটা দিতেন তিনি। নিখুঁত নিশানা ছিল তাঁর। সাইমন্ডসের হাতে বল মানেই ব্যাটাররা ঝুকিপূর্ণ রান নিতে যেন দ্বিধায় থাকেন – এই বুঝি রান আউট হতে হয়। ক্যারিয়ারে বহুবার তিনি দুর্দান্ত থ্রোয়ে স্টাম্প ভেঙে রান আউট করেছেন।
সাইমন্ডস অস্ট্রেলিয়া দলে যখন এলেন রিকি পন্টিং তখন স্লিপে ফিল্ডিং করতে শুরু করলেন। কারণ পাওয়ারপ্লেতে ইনার সার্কেলের ভেতরের দায়িত্বটা নিয়ে নিয়েছিলেন খোদ সাইমন্ডস।
পন্টিং আর জন্টি রোডস দু’জনেই রান আটকে দিতে বেশ পটু ছিলেন। তবে থ্রোয়িংয়ের জন্য রোডস থেকেও খানিকটা এগিয়ে থাকবেন পন্টিং। পন্টিংয়ের থ্রো ছিল বেশ নিখুঁত; বেশ ভাল দূরত্ব থেকেও স্টাম্পে আঘাত করতে পারতেন তিনি। সাবেক অস্ট্রেলিয়ানদের মধ্যে পল শিহান, ডগ ওয়াল্টাররাও ছিলেন অসাধারণ ফিল্ডার। দু’জনেই দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়ে রান আঁটকে দিতে বেশ দক্ষ ছিলেন। তবে এই দু’জনের মধ্যে থ্রোয়িংয়ের জন্য ওয়াল্টারস বেশ এগিয়ে থাকবেন।
ফিল্ডিংয়ের আরেকটি সেরা জুটি ছিল ইংলিশ তারকা ডেভিড গাওয়ার ও ড্যারেক র্যান্ডলের। ফিল্ডার হিসেবে দু’জনে এতটাই দুর্দান্ত ছিলেন যে অধিনায়ক দু’জনকে প্রয়োজনের সময় গুরুত্বপূর্ণ দুই জায়গায় দাঁড় করাতে পারতেন। দু’জনেই ছিলেন অসাধারণ অ্যাথলেট।
অস্ট্রেলিয়ার সাবেক তারকা নিল হার্ভেও ফিল্ডার হিসেবে ছিলেন দুর্দান্ত। কভারে তিনি ছিলেন অন্যতম সেরাদের একজন। দুর্দান্ত সব ক্যাচ লুফে নিতেন। সেই সাথে রান আউটেও বেশ পটু ছিলেন তিনি। দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়ে রান আঁটকে দিতে পারতেন অনায়াসে। ক্যারিয়ারের শেষভাগে অবশ্য তিনি স্লিপে ফিল্ডিং করেছেন। সেখানেই দক্ষতার ছাপ রাখেন সাবেক এই অজি ক্রিকেটার।
কভার ফিল্ডার হিসেবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিংবদন্তি তারকা ক্লাইভ লয়েডও সেরাদের একজন ছিলেন। দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়ের জন্য ‘সুপার ক্যাট’ তকমা পান তিনি। বল হাতে পেয়েই বেশ দ্রুতগতিতে থ্রো করতে পারতেন তিনি; পেশি শক্তিতাও ছিল বেশ বেশি। ইনার সার্কেলের ভিতরে অসাধারণ একজন ফিল্ডার ছিলেন সাবেক ক্যারিবিয়ান তারকা ভিভ রিচার্ডসও। ক্যারিয়ারের শেষদিকে অবশ্য তিনি স্লিপেই ফিল্ডিং করেন।
দারুণ ফিল্ডার হিসেবে কখনোেই স্যার গ্যারি সোবার্সের নাম খুব একটা আলোচিত হয় না। তবে, ইনফিল্ডে তিনি বেশ ধূর্ত ছিলেন। স্লিপেও ছিলেন সমাদৃত।
ভারতের সাবেক দুই অধিনায়ক মোহাম্মদ আজহারউদ্দীন ও মনসুর আলী খান পতৌদি ইনার সার্কেলের ভিতর ভারতের অন্যতম সেরা ফিল্ডার ছিলেন। যদিও আজহারউদ্দিনকে সেরা ফিল্ডার হিসেবে সেভাবে মূল্যায়ন করা হয়নি। তবে চ্যাপেলের মতে আজহার দ্রুতগতিতে থ্রো করতে পারতেন, অ্যাকুরেসি আর ক্যাচিং দক্ষতা – সব মিলিয়ে তিনি ছিলেন দুর্দান্ত। একটা সময় ফিল্ডিংয়ে ভারতের অবস্থা খুব একটা ভাল ছিল না। পতৌদির হাত ধরেই ফিল্ডিংয়ে ব্যাপক পরিবর্তন আসে। আর টাইগার পতৌদি এখানে বাড়তি পয়েন্ট পাবেন। কারণ, তাঁকে ফিল্ডিংয়ের কাজটা করতে হত এক চোখেই।