বায়ার্ন বিপ্লব

সুন্দরবনে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের যেমন একচ্ছত্র আধিপত্য করে, ঠিক তেমনি জার্মান বুন্দেসলীগায় একচ্ছত্র আধিপত্য রয়েছে বায়ার্ন মিউনিখের। সেখানটায় রীতিমত রাজত্ব রয়েছে ক্লাবটির। টানা দশম লিগ শিরোপাও নিজেদের করে ফেলেছে বায়র্ন। তবে একটা জায়গায় হোচট খাচ্ছে দলটি।

লিগের সে আধিপত্য কিছুতেই যেন ধরে রাখতে পারছে না ইউরোপে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে দলটির মাঝে মধ্যেই খেই হারিয়ে ফেলছে। এই যেমন গেল মৌসুমেই তো দলটি বাদ পড়ে যায় চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে। স্প্যানিশ ক্লাব ভিয়ারিয়াল রীতিমত চমকে দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেয় জার্মান চ্যাম্পিয়নদের।

একই সমস্যা আবার গেল মৌসুমে দেখা গেল ডিবিএফ পোকাল কাপে। সেখানেও অপেক্ষাকৃত দূর্বল এক ক্লাবের কাছে হেরে বিদায় নিতে হয় ক্লাবটিকে। তার থেকেও ভয়ানক বিষয়, পাঁচ খানা গোল হজম করেছিল বায়ার্ন। টুর্নামেন্টগুলতে এমন পরাজয় নতুন করে ভাবতে বাধ্য করছে বায়ার্ন মিউনিখকে।

তবে এর মাঝেই নতুন আরেক শঙ্কা দানা বেঁধে উঠছে। আট বছরের বন্ধন ছিন্ন করে ক্লাব ছাড়তে চাইছেন স্ট্রাইকার রবার্ট লেওয়ান্ডস্কি। বুন্দেসলীগার শীর্ষ গোলদাতা এখন নতুন এক চ্যালেঞ্জের খোঁজে রয়েছেন। তিনি চাইছেন ক্যারিয়ারের শেষপ্রান্তে নতুন কোন চ্যালেঞ্জ নিয়ে আবার শুরু করতে। একেবারে ভিন্ন কোন নয়া উদ্যম নিয়ে তিনি দাঁড়ি টেনে নিতে চাইছেন।

যদিও ক্লাবের সাথে তাঁর চুক্তির এখনও বছর খানেক বাকি। তিনি ক্লাবকে তাঁর ইচ্ছের কথা জানিয়েছেন। তাছাড়া বার্সেলোনার সাথেও তাঁর কথাবার্তা চলছে এমন এক গুঞ্জন বেশ প্রবল ইউরোপের ফুটবল অঙ্গনে। তবে এখনও কোন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানায়নি ক্লাব। হয়ত ভাল কোন প্রস্তাব পেলে ক্লাব ছেড়ে দেবে লেওয়ান্ডস্কিকে। তবে সে ঘাটতি পূরণে জুলিয়ান ন্যাগেলসম্যানকে একটু খানি মস্তিষ্কে জোর দিতেই হচ্ছে।

ইতোমধ্যেই জার্মান ক্লাবটি উড়িয়ে নিয়ে এসেছে লিভারপুলের আক্রমণভাগের খেলোয়াড় সাদিও মানেকে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নিজের দলকে তেমন সাহাস্যই করতে পারেননি মানে। তবুও এই তারকা ফুটবলার অভিজ্ঞতা রয়েছে শিরোপা জয়ের। তিনি সেনেগালের হয়ে আফ্রিকান নেসন্স কাপ জিতেছেন এইতো কিছুদিন আগেই। তাছাড়া লিভারপুলের হয়েও দুই খানা টুর্নামেন্ট জয়ের অভিজ্ঞতা রয়েছে মানের।

সে সব অভিজ্ঞতাই কাজে লাগাতে চাইছেন বাভারিয়ানরা। তাছাড়া দল খানিকটা ঝুকছে তারুণ্যের দিকে। এবারের গ্রীষ্মকালীন দলবদল ইউরোপের প্রতিটা ক্লাবের জন্যেই বেশ গুরুত্বপূর্ণ। সবাইকেই একটু বুঝে শুনে এগোতে হচ্ছে। এবারে দলবদলে তাই বায়ার্নও সতর্ক। সম্ভাবনাময় খেলোয়াড়দের দলে ভেড়ানোর কোনরকম সুযোগ হাতছাড়া করতে নারাজ ক্লাবটি।

তাইতো এই সময়ে ইউরোপের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় মিডফিল্ডার রায়ান গ্র্যাভেনবার্চকে দলে ভিড়িয়েছে ১৮.৫ মিলিয়ন ইউরোতে। বিশ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডারকে ডাচ ক্লাব আয়াক্স থেকে নিয়ে এসেছে। তরুণ এই মিডফিল্ডারের চাহিদা ছিল মার্কেটে বেশ। তবে কোন রকমের ঝুঁকি ছাড়াই দলে নিয়ে ফেলেছে তাঁকে বায়ার্ন। অন্যদিকে সেই আয়াক্সের রাইটব্যাক নৌশুয়ের মাজরুইকেও নিজেদের দলে এনেছে ক্লাবটি।

বায়ার্ন তাঁদের দলের প্রতিটি ক্ষেত্রে শক্তি বাড়ানোর জন্যে উঠে পড়ে লেগেছে। তাঁদের প্রধান চাহিদা তরুণ সম্ভাবনাময়ী খেলোয়াড়। তাছাড়া অভিজ্ঞদেরও বেশ প্রাধান্য দিচ্ছে ক্লাবটি। তবুও যেন ইউরোপের শ্রেষ্ঠত্বের মঞ্চে আর হোচট খেতে নারাজ ক্লাবটি। তবুও দেখা যাক নতুন ক্রয়ের রাজ্যে শেষমেশ বায়ার্ন কি করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link