কী হবে সাকিবের!

আপনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটু আধটু ঢুঁ মারলে আপনার কাছে হয়তো ব্যাপারটা পুরনো হয়ে গিয়েছে। দুইদিন আগেই নিজের ফেসবুক পেজে সাকিব আল হাসান ঘোষণা করেছেন, একটি বেটিং সংস্থার সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন তিনি। সাকিব ঠিক করলেন না ভুল করলেন সেটা নিয়েও তোলপাড় হয়েছে ইতোমধ্যেই। তবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) নাকি এখনো এই নিয়ে কিছু নিশ্চিতই নয়।

সাধারণত যেকোনো প্রতিষ্ঠানের সাথেই চুক্তিবদ্ধ হতে হলে বিসিবির কাছ থেকে অনুমতি নিতে হয় ক্রিকেটারদের। প্রথম সেই নিয়ম ভঙ্গ করেছেন সাকিব আল হাসান। তবে সাকিবের গুরুতর অপরাধ তিনি এবার চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন একটি বেটিং সংস্থা বেট উইনারের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান বেট উইনার নিউজের সঙ্গে।

যেকোনো রকমের বেটিং সংস্থার সাথে ক্রিকেটারদের এমন চুক্তি বিসিবির নীতিমালায় সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এমনকি কোন বেটিং সংস্থার অঙ্গ প্রতিষ্ঠানের সাথেও চুক্তিবদ্ধ হতে পারবেন না বাংলাদেশের কোন ক্রিকেটার। এমনকি বাংলাদেশের আইনেও বেটিং সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। সামাজিক আর ধর্মীয় নিষেধাজ্ঞাও আছে এই ব্যাপারে।

তবে, সাকিব আল হাসান বিসিবি কিংবা দেশের এই আইনের তোয়াক্কা করেননি একটুও। বিসিবির মতে সাকিব কোন কিছুই জানায়নি তাঁদের। এছাড়া সাকিবের ফেসবুক পোস্টের উপর ভিত্তি করে কোন সিদ্ধান্তেও আসতে চাননা বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। তবে ঘটনার সত্যতা পেলে সাকিবকে শাস্তির মুখেই পড়তে হবে।

সাকিবের এই চুক্তির ব্যাপারে প্রশ্ন উঠলে নাজমুল হাসান পাপন বলেন, ‘এখানে দুইটা ব্যাপার আছে। প্রথমত, আমাদের অনুমতি নেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। কারণ, আমরা অনুমতি দেবোই না। দিস ইজ নম্বর ওয়ান, বেটিং সংক্রান্ত কিছু হয়ে থাকলে অনুমতি দেবোই না। এটার মানে হচ্ছে, আমাদের কাছে অনুমতি চায়নি। দুই নম্বর ব্যাপার হচ্ছে, আদৌ চুক্তি করেছে কি না, এটাও তো আমার জানতে হবে।’

সাকিব বেটিং সংস্থার সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে কিনা সেটা বিসিবি দ্রুতই নিশ্চিত হতে চায়। এরপরই সাকিবের ব্যাপারের কঠোর সিদ্ধান্তে যাবেন তাঁরা। বোর্ড সভাপতি বলেন, ‘আমরা বলেছি যে, এটা তো কোনোভাবেই সম্ভব নয়, এটা কীভাবে হয়! তাড়াতাড়ি এটা বের করো যে এটা আসলেই হয়েছে কি না। হলে অনতিবিলম্বে জানতে চাও। নোটিশ সার্ভ করা হবে, এটা কীভাবে সম্ভব। এটা তো বোর্ড কোনোভাবেই মেনে নেবে না। বেটিংয়ের সঙ্গে এটার কোনোরকম, কোনো কিছুর সংযুক্ত থাকে, এটা বোর্ড কখনোই গ্রহণ করবে না। এটা অলরেডি আমরা বলেছি।’

বিসিবি মুখে কঠিন শাস্তির কথা বললেও আদৌ সেটা করা হবে কিনা সেটা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যায়। কেননা এমন ঘটনা সাকিবের জন্য নতুন কিছু নয়। প্রায়ই নানারকম ঘটনা নিয়ে সমালোচিত হন এই ক্রিকেটার। তবে সেভাবে সাকিবের বিরোদ্ধে কোন অ্যাকশন কখনোই নিতে দেখা যায়না বিসিবিকে। তবে অন্য যেকোনকিছুর চেয়েই বেটিং এর ব্যাপারটা বাংলাদেশের আইনে অনেক বেশি সিরিয়াস।

তবে অপ্রিয় সত্য হচ্ছে এই সময়ে সাকিবকে কোন শাস্তি দেয়া বিসিবির জন্য বেশ কঠিন। কেননা এই মাসেই বসতে যাচ্ছে এশিয়া কাপ। আর টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের এই আসরে সাকিবকে অধিনায়ক করার কথাই ভাবছে বিসিবি। এরপর আবার এ বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপও আছে। ফলে সামনের কয়েকটা মাস মাঠের ক্রিকেটের গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হতে চলেছেন সাকিব। এমন সময়ে সাকিবকে কী কোন বড় ধরনের শাস্তি বা নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করার সাহস দেখাবে বিসিবি?

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link