প্রথমত গতকাল ছিল সরকারি ছুটির দিন, তারপর আবার জাতীয় দল দেশের বাইরে। ফলে মিরপুর স্টেডিয়াম আজ ফাঁকা থাকবে সেটাই স্বাভাবিক। তবুও সকাল সকাল হোম অব ক্রিকেটের আশেপাশে সাংবাদিকদের আনাগোনা। কেননা যেকোনদিন ঘোষণা করা হতে পারে এশিয়া কাপের দল। অবশ্য নিয়ম অনুযায়ী আট তারিখই ছিল দল ঘোষণার শেষ তারিখ। তবে বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার ইনজুরিতে থাকায় বাড়তি তিন দিন সময় চেয়ে নিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড।
সেক্ষেত্রে আজ বা কাল দল ঘোষণা করতেই হবে। তবে এশিয়া কাপের দল গঠন করতে বেশ বেগ পোহাতে হচ্ছে নির্বাচকদের। আসলে পুরো ক্রিকেট বোর্ডই বেশ চাপে আছে। কেননা এমনিতেই সাম্প্রতিক সময়ে টি-টোয়েন্টি দল তৈরি করাটা বেশ চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠেছে। হঠাত করেই কয়েকজন সিনিয়র ক্রিকেটারকে বিবেচনার বাইরে রাখা হচ্ছে, তরুণদের ব্যাক করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে নতুন একটা টি-টোয়েন্টি দল গড়ে তোলার যাত্রাটা সবে মাত্র শুরু হয়েছে।
তবে নতুন সমস্যা দেখা দিয়েছে ইনজুরি। হঠাৎ করেই টি-টোয়েন্টি দলের বেশ কয়েকজন সদস্য ইনজুরিতে পড়েছেন। জিম্বাবুয়ে সিরিজে অধিনায়ক হিসেবে যাত্রা শুরু করেছিলেন নুরুল হাসান সোহান। তবে আঙুলের ইনজুরিতে তারও এশিয়া কাপ খেলা অনিশ্চিত। এছাড়া আগে থেকেই ইনজুরিতে ইয়াসির আলি রাব্বি।
এছাড়া সবচেয়ে বড় ধাক্কটা এসেছে লিটন দাসের ইনজুরির কারণে। আবার পেসার শরিফুল ইসলামকে নিয়েও একটা শঙ্কা আছে। ফলে এতজন ক্রিকেটারের ইনজুরি বাংলাদেশকে ভাবাচ্ছে। ওদিকে দরজায় কড়া নাড়ছে এশিয়া কাপ।
নতুন একটা দল সাথে এই ইনজুরি কী অনেক বড় বাঁধা হয়ে গেল নির্বাচকদের জন্য? এমন প্রশ্নের উত্তরে নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন বলছিলেন, ‘ইনজুরির ব্যাপারটাই আসলে বড় কনসার্ন। ইনজুরি তো সবসময়ই একটা-দুইটা থাকে, তবে এতগুলো ইনজুরি আমরা কখনো ফেস করিনি। সেদিক থেকে এবারের দল করাটা তো একটা চ্যালেঞ্জিংই বটে।‘
চ্যালেঞ্জিং এই দল নির্বাচনের প্রথম চ্যালেঞ্জ হল ওপেনার নির্বাচন। প্রথমত লিটন দাস ইনজুরিতে। দ্বিতীয় মুনিম শাহরিয়ার কিংবা এনামুল হক বিজয় – কেউই আস্থার প্রতিদান দিতে পারছেন না। এই অবস্থায় সাম্প্রতিক বড় পারফরম্যান্স না থাকার পরও কপাল খুলে যেতে পারে সৌম্য সরকারের।
ওদিকে এখন পর্যন্ত নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছেনা কে হবে বাংলাদেশের অধিনায়ক। বাইরে অনেক ধোয়াশা থাকলেও ভিতরের খবর দল মোটামুটি তৈরিই আছে। এমনকি অধিনায়কত্ব নিয়েও একটা সিদ্ধান্তে বোর্ড এসেছে। শোনা যায়, সেই অধিনায়কের সাথে আলাপ আলোচনা করেই গঠন করা হয়েছে দল। আর সেই অধিনায়ক খুব সম্ভবত সাকিব আল হাসানই। তবুও একটু বাড়তি সময় নেয়ার কারণ শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করা ইনজুরিতে পড়া ক্রিকেটারদের জন্য।
ওদিকে এই মুহূর্তে টি-টোয়েন্টি দলে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জটা ওপেনিং পজিশনে। এই জায়গাটায় একেরপর এক অপশন পরীক্ষা করে চলেছে বাংলাদেশ। তবে কোন ভাবেই কাজ হচ্ছেন। লিটন না থাকায় সেই কাটা ঘায়ে যেন নুনের ছিটা লাগলো। ওদিকে মুনিম শাহরিয়ার, এনামুল হক বিজয়, পারভেজ হোসেন ইমন কেউই দলে জায়গাটা পাকা করতে পারেননি।
ফলে এই জায়গায় একটা জুয়া খেলতে পারে বাংলাদেশ। নির্বাচকরা আবার ফিরে যেতে পারেন সৌম্য সরকারের কাছে। তবে এখনো এটা স্রেফ একটা গুঞ্জন। যদিও বাংলাদেশ টাইগার্সের হয়ে নিজেকে প্রস্তুত রাখছিলেন এই ব্যাটার। কোচ নাজমুল আবেদীন ফাহিমের সাথেও কাজ করেছেন একান্তে। এই মুহূর্তে তিনি আছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের সাথে। যদিও গত কয়েক বছরে নিজেকে ঠিক প্রমাণ করতে পারছেন না তিনি। ফলে তাঁকে আদৌ ফিরিয়ে আনা হবে কিনা সেই প্রশ্ন থেকেই যায়। আবার লোয়ার অর্ডারে পাওয়ার হিটার সমস্যার সমাধান করতে সাব্বিরও আছেন আলোচনায়। তবে সৌম্য, সাব্বির কারো সাম্প্রতিক ফর্মই তাদের পক্ষে কথা বলেনা। এবার এটাও ঠিক বাংলাদেশের পাইপলাইনে এই বাইরে অপশন কোথায়?