মুখে চিরচেনা সেই মিষ্টি হাসিটা নিয়ে বের হলেন। অপেক্ষারত সাংবাদিকদের দেখে হাত নেড়ে কিছু একটা বলতে চাইলেন । যেন ফুরফুরে এক সাকিব, হয়তো অধিনায়কত্ব পেয়েই সাকিবের মুখে এমন হাসি। অথচ কথা ছিল বোর্ড সভাপতি গুলশানের বাসায় বিচার বসবে সাকিব আল হাসানের। বেটউইনার নিউজের সাথে চুক্তির ঘটনার কারণ জানতে চাওয়া হবে সাকিবের কাছে। অথচ এই সাকিবকে দেখে কী আপনার এমন কিছু মনে হচ্ছে? সাকিব যেন এক লহমায় সবকিছু তুচ্ছ করে দিলেন।
বাংলাদেশের ক্রিকেটে সাকিব মানেই যেন বিতর্ক, আবার সেই সাকিবই শেষ ভরসা। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের বাসায় সাকিবকে তলব করা হয়েছিল বেটউইনারের সাথে চুক্তির কারণ জানতে। তবে বৈঠকে আরো গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল এশিয়া কাপের দল।
ফলে সাকিব শাস্তি পাওয়ার বদলে বরং মিটিং থেকে বের হলেন বীরের বেশে, অধিনায়ক হয়ে। তাইতো নাজমুল হাসান পাপনের বাসা থেকে বেরিয়ে যাবার সময় মুখে মিষ্টি হাসি সাকিবের। কেননা টেস্টের পর টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটেও যে সাকিব বাংলাদেশের নতুন অধিনায়ক। আর সাকিবের অপেক্ষাতেই বারবার পেছানো হচ্ছিল এশিয়া কাপের দল ঘোষণার তারিখ।
দুপুর তিনটায় বোর্ড সভাপতির বাসায় হাজির হন সাকিব আল হাসান। এরপর নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু ও হাবিবুল বাশার সুমনও উপস্থিত হন গুলশানের এই বাড়িতে। সবশেষ ক্রিকেট অপারেশন্সের চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস আসেন বিকাল চারটা নাগাদ। এরপর প্রায় ২ ঘন্টা ধরে বৈঠক চলে নাজমুল হাসান পাপনের সাথে।
বিশেষ এই বৈঠকে আলোচনা হয়েছে মূলত দুটি জিনিস নিয়ে। প্রথমত বেটউইনারের সাথে এই চুক্তির কারণ জানতে চাওয়া হয়েছিল সাকিবের কাছে। জানা যায় সাকিব এই চুক্তি করার কারণে বোর্ডের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। এছাড়া বেটিং এর সাথে সম্পর্কটা তিনি পুরোপুরি জানতেন না বলেও বৈঠকে জানিয়েছেন। সাকিবের এই দুঃখ প্রকাশ এবং বেটিং সম্পর্কে না জানার মন্তব্যে কোন যুক্তি না থাকলেও তা মনে ধরেছে বোর্ড কর্তাদের।
আসল কথা হচ্ছে লিটন, সোহানের ইনজুরির পর সাকিব ছাড়া যেন অসহায় হয়ে পড়েছিল বিসিবি। কেননা এশিয়া কাপ কিংবা বিশ্বকাপের মত আসরে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেয়ার মত কোন ক্রিকেটারই খুজে পাচ্ছিল না বাংলাদেশ। অধিনায়কত্ব করতে পারেন এমন ক্রিকেটার বলতে শুধু সাকিবই ছিলেন। আর সেজন্যই গত এক সপ্তাহ ধরে সাকিবের জন্য এত অপেক্ষা।
বেটিং সংলিষ্ট ওয়েবসাইটের সাথে চুক্তির ব্যাপার এড়িয়ে বিসিবি তাই বেশি মনোযোগ দিয়েছে মাঠের ক্রিকেটে। জানা যায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত এই ফরম্যাটের একটা পরিকল্পনায় করা হয়েছে এই বৈঠকে। আর পরিকল্পনার সবচেয়ে বড় নায়ক দেশের ক্রিকেটের পোস্টার বয় সাকিব আল হাসান।
বৈঠক শেষেই ঘোষণা করা হয়েছে এশিয়া কাপের দলও। সাকিবকে অধিনায়ক করে গড়া এই দলে জায়গা হয়েছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদেরও। এছাড়া জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে না থাকলেও এশিয়া কাপের দলে ফিরেছেন মুশফিকুর রহিম। যদিও এই দুই সিনিয়র ক্রিকেটারের টি-টোয়েন্টি পারফর্মেন্স নিয়েই আছে প্রশ্ন।
তবুও ইনজুরি আক্রান্ত দলে আর খুব বেশি অপশনও ছিল না নির্বাচকদের হাতে। সেজন্যই সাম্প্রতিক সময়ে ঘরোয়া ক্রিকেটে কোন পারফর্মেন্স না করেও আবার দলে ফিরে এসেছেন সাব্বির রহমান। এছাড়া শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করার জন্য নুরুল হাসান সোহানের নামও আছে এই দলে। হয়তো সব ঠিক থাকলে শেষের ম্যাচগুলো তিনি খেলতে পারবেন।
মিডল অর্ডারে সাব্বির ফিরলেও ওপেনিং পজিশনে নেই কোন ব্যাক আপ ক্রিকেটার। স্কোয়াডে দুই ওপেনার এনামুল হক বিজয় এবং পারভেজ হোসেন ইমন। এছাড়া সৌম্য সরকারের ফেরার ব্যাপারে গুঞ্জন থাকলেও শেষ পর্যন্ত সুযোগ হয়নি এই ওপেনারের।