এই কিছুদিন আগেই পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) প্রধান রমিজ রাজা বলেছিলেন, ‘ভারত আমাদের সম্মান দেওয়া শুরু করেছে। বিশেষত, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর এশিয়া কাপে হারানোর পর থেকে তাঁরা আমাদের সমীহ করা শুরু করেছে। অবশ্য এক বিলিয়ন ডলার ক্রিকেট দলকে হারানোয় আমাদের ক্রিকেটারদেরই বেশি ক্রেডিট দিতে হয়।’
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে এরই মধ্যে অস্ট্রেলিয়ায় পৌঁছেছে টিম ইন্ডিয়া। পার্থে তাঁরা ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার সাথে একটি ওয়ার্ম আপ ম্যাচও খেলেছে। সেই ম্যাচের পরেই সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। প্রেস কনফারেন্সে এসে রমিজ রাজার সেই বক্তব্য নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘দেখুন, সম্মান ব্যাপারটা ম্যাচ হার বা জয়ের জন্য আসে না। এটা আসে আপনি ন্যাচারালি কেমন ধারণা পোষণ করেন সেখান থেকে। আমরা পাকিস্তান দলকে সম্মান করি, তাঁরাও আমাদের করে।’
সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যেই আবারও ভারত-পাকিস্তান মুখোমুখি হতে যাচ্ছে। এ ম্যাচ নিয়ে অশ্বিন বলেন, ‘আমরা নিজেদের মধ্যে খেলার সুযোগ পাই কম। তারপরও এখনও এমন ম্যাচ নিয়ে দুই দেশের উচ্ছ্বাস থাকে অনেক। এটা অনেক বড় একটা ব্যাপার। ভারত-পাকিস্তান রাইভালরি টিকিয়ে রেখেছেন এই দর্শকরাই।’
অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশনের ভারতের বোলাররা কেমন করতে পারে, এমন প্রশ্নের উত্তরে অশ্বিন বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার বাউন্ডারি অনেক বড়। এটাই আমাদের বোলারদের কাজে লাগতে হবে। যে কোনো দুর্দান্ত শট মাঠ বড় হওয়ার কারণে ফিল্ডারদের তালুবন্দী হতে পারে। তাই আমাদের বোলারদের কৌশলে বোলিং করতে হবে। আমার মনে হয়, আমরা ভালই করব।’
ওয়ার্মআপ ম্যাচে বিরাট কোহলি খেলেননি। কেন খেলেননি, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে বেশ মজা করেই উত্তর দিয়েছেন অশ্বিন। তিনি বলেন, ‘এটা জানার জন্য আমাকে রাহুল দ্রাবিড়ের কাছে যেতে হবে। (হেসে) আসলে আপনি যতটুকু জানেন আমিও ততটুকুই জানি।’
বিশ্বকাপের আগে ভারতের মূল দল দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ খেলেনি। তবে এটাকে ইতিবাচক হিসেবে নিয়ে অশ্বিন বলেন, ‘আমার মনে হয়, এটা দারুণ সিদ্ধান্ত হয়েছে। কারণ আইসিসির একটা টুর্নামেন্টের আগে অন্য ফরম্যাটের সিরিজ খেলাটা খুব একটা কাজে আসে না। এর চেয়ে বরং আগে এসে কন্ডিশনের সাথে মানিয়ে নেওয়াটা বেশি জরুরি।’
ওয়ার্মআপ ম্যাচ খেলার সুবিধা নিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘ওয়ার্ম আপ ম্যাচ খেলাটা আমাদের খুব কাজে দিবে। কন্ডিশনের সাথে মানিয়ে নিতে সাহায্য করবে। এখানে একটা ম্যাচ বাইরে থেকে দেখলেও অনেক কিছু বোঝা যায়।’
এ ছাড়া এ দিন প্রেস কনফারেন্সে পার্থের মাঠ ও ভারতের দর্শক নিয়েও কথা বলেছেন অশ্বিন। তিনি বলেন, পার্থের মাঠ সব সময় আমাকে স্মৃতিবহ করে তোলে। এখানে আমি সব সময় স্পিনার হিসেবে এসেছি। এটা একটা আইকনিক মাঠ। এই মাঠে শেন ওয়ার্নের কত কীর্তি। দু:খের বিষয়, তিনি আর পৃথিবীতে নেই। আর এখানকার ভারতীয় দর্শকদের দেখলে মনে হয় ঘরের মাটিতে খেলছি। ভারতের পর বাইরের দেশে খেলতে এসে এতো ভারতীয় দর্শক আমি কখনোই দেখিনি।’
প্রেস কনফারেন্সে একদম শেষ পর্যায়ে আগামী ৩০ অক্টোবরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচ নিয়েও কথা বলেন অশ্বিন। এই কিছুদিন আগেই ঘরের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ জিতেছিল ভারত। সেই ধারা অব্যহত থাকবে তো বিশ্বকাপের ম্যাচে? অশ্বিন বলেন, ‘তাঁরা দল হিসেবে বেশ ভাল ক্রিকেট খেলে। তাদের বেশ কিছু খেলোয়াড় আছে যারা একাই ম্যাচ ঘুরিয়ে দিতে পারে। তাই সেদিকে আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে।’
আগামী ২৩ অক্টোবরে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করবে টিম ইন্ডিয়া। আগের বার সংযুক্ত আমিরাতে হওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে, গ্রুপ পর্বের ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১০ উইকেটে হেরেছিল ভারত। বড় পরাজয়ের বদলা নিতে বড় মঞ্চে তাই নিশ্চিতভাবেই মুখিয়ে আছে রোহিত শর্মার দল।