রবিউল ইসলাম রবির মূল পরিচয় তিনি ব্যাটসম্যান। কিন্তু এবার বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টিতে বল হাতেও ভালো করছেন। আজ খুলনার বিপক্ষে তুলে নিলেন ৫ উইকেট। আর রবির এই পারফরম্যান্সে ভর করে জিতলো ঢাকা।
সাব্বিরের ব্যাটিং ও রবিউলের দুর্দান্ত বোলিংয়ে জেমকন খুলনাকে ২০ রানে হারিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ দুইয়ে থাকার লড়াইয়ে টিকে থাকলো বেক্সিমকো ঢাকা।
বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে ১৮০ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ২ উইকেট হারিয়ে বসে জেমকন খুলনা। দলীয় ৮ রানে জাকির আলী ১ রান করে বিদায় নিলে উইকেটে আসেন সাকিব আল হাসান। এদিনও ব্যাট হাতে ব্যর্থ হয়ে দলীয় ৩১ রানে সাকিব ফিরে যান ৬ বলে ৮ রান করে।
তৃতীয় উইকেট জুটিতে জহুরুল ইসলাম ও অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ৪৮ রান যোগ করলেও রিয়াদের বিদায়ের পরই তাসের ঘরের মতো ভেঙ্গে পড়ে জেমকন খুলনার ব্যাটিং অর্ডার। মাহমুদউল্লাহ ২৬ বলে ২৩ রান করে বিদায় নিলে উইকেটে এসে বেশীক্ষণ থাকতে পারেননি মাশরাফি। মাশরাফি ১ রান করে উইকেটের পিছনে মুশফিকের হাতে ক্যাচ দেওয়ার পর এক প্রান্ত আগলিয়ে রাখা জহুরুল ইসলামও ফিরে যান ৩৬ বলে ৪ টি চার ও ২ টি ছয়ে ৫৩ রান করে।
আরিফুল হক ৭ রান করে বিদায় নিলে ৯৬ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে জেমকন খুলনা। শেষের দিকে শামিম হোসেনের ৯ বলে ২ চার ও ২ ছয়ে ২৪ রান জেমকন খুলনাকে জয়ের স্বপ্ন দেখালেও শেষ পর্যন্ত শুধু হারের ব্যাবধানই কমিয়েছে। শুভাগত ৫ ও শহিদুল করেন ৮ রান ও হাসান মাহমুদের ১৫ রানে ভর করে ১৯.৩ ওভারে ১৫৯ রানে অলআউট হয় জেমকন খুলনা।
বেক্সিমকো ঢাকার পক্ষে ৩.৩ ওভারে ২৭ রান দিয়ে ৫ উইকেট শিকার করেন রবিউল ইসলাম। এছাড়া মুক্তার আলী এবং রুবেল হোসেন ২ টি ও নাসুম আহম্মেদ ১ টি উইকেট শিকার করেন।
এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নামা বেক্সিমকো ঢাকাকে দুর্দান্ত শুরু এনে দেন দুই ওপেনার নাঈম শেখ এবং সাব্বির রহমান। সাকিবের করা ইনিংসের ২য় ওভারে ৪ টি ছয় মেরে ঝড়ো ইনিংসের ইঙ্গিত দিলেও ১৭ বলে ৩৬ রান করে নাঈম শেখ বিদায় নিলে ভাঙ্গে ৪১ রানের উদ্বোধনী জুটি। নাঈমের বিদায়ের পর উইকেটে এসে সাব্বির রহমানের সাথে দ্রুত গতিতে রান তুলতে থাকেন আল আমিন হোসেন। ২য় উইকেট জুটিতে এই দুজন ৪২ বলে যোগ করেন ৬৪ রান। ভালো খেলতে থাকা আল আমিন শামিম পাটওয়ারীর দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত হয়ে ফিরে যান ২৫ বলে ৩৬ রান করে।
আল আমিনের বিদায়ের পর বেক্সিমকো ঢাকার ব্যাটিং স্তম্ভ মুশফিকুর রহিম (৩) ও ইয়াসির আলী (০) দ্রুত বিদায় নিলেও থেমে থাকেনি ঢাকার রানের চাকা। ৫ম উইকেটে মাত্র ২১ বলে ৪২ রান যোগ করেন সাব্বির ও আকবর আলী। আকবর আলী মাত্র ১৪ বলে ১ টি চার ও ৪ টি ছয়ে ৩১ রান করে বিদায় নিলেও টুর্নামেন্টের ১ম হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন সাব্বির রহমান। দীর্ঘ দিন পর দুর্দান্ত একটা ইনিংস খেলে সাব্বির যখন প্যাভিলিয়নের পথ ধরে তখন তার নামের পাশে ঝকঝক করছে ৩৮ বলে ৫ টি চার ও ৩ টি ছয়ে ৫৬ রান।
শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৭৯ রান সংগ্রহ করে মুশফিকুর রহিমের দল। জেমকন খুলনার পক্ষে মাশরাফি বিন মর্তুজা ৪ ওভারে ২৬ রান দিয়ে ১ টি, শহিদুল ইসলাম ৩১ রান দিয়ে ২ টি, নাজমুল ইসলাম অপু ৫১ রান দিয়ে ১ টি এবং হাসান মাহমুদ ২৩ রান দিয়ে ১ টি উইকেট লাভ করেন। সাকিব আল হাসান ৩ ওভারে ৩৬ রান দিয়ে উইকেট শূন্য থাকেন।
- সংক্ষিপ্ত স্কোর
বেক্সিমকো ঢাকা: ২০ ওভারে ১৭৯/৭ : (নাঈম-৩৬, সাব্বির-৫৮, আল আমিন- ৩৬, মুশফিকুর-৩, ইয়াসির-০, আকবর আলী-৩১, মুক্তার-৬, রবিউল-১, নাসুম-৫; মাশরাফি- ১/২৬, শহিদুল- ২/৩১, সাকিব- ০/৩৬, নাজমুল- ১/৫১, হাসান মাহমুদ- ১/২৩, শুভাগত- ০/১১)
জেমকন খুলনা: ১৯.৩ ওভারে ১৫৯/১০ (জহুরুল-৫৩, জাকির-১, সাকিব-৮, মাহমুদউল্লাহ-২৩, মাশরাফি-১, আরিফুল-৭, শামিম-২৪, শুভাগত-৫, শহিদুল-৮, হাসান মাহমুদ-১৫, নাজমুল-৪; রবিউল- ২৭/৫, রুবেল- ২/৩০, মুক্তার- ২/৩৫, নাসুম- ১/২৮, শফিকুল- ০/৩০)
ফলাফল: বেক্সিমকো ঢাকা ২০ রানে জয়ী
ম্যাচ সেরা: সাব্বির রহমান রুম্মান (ঢাকা)