Social Media

Light
Dark

হারিয়ে যাইনি তবু, এটাই জরুরী খবর

হ্যাটট্রিক! পরপর তিন বলে তিন উইকেট!

পাড়ার ক্রিকেটেও হ্যাটট্রিক করলে সেটা নিয়ে হইচই হয়। ক্লাব ক্রিকেটেও হ্যাটট্রিক করলে পত্রিকায় ছবি ছাপা হয়। আর এটা রীতিমতো জাকজমকপূর্ণ টুর্নামেন্ট, বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের বাঁচা মরার লড়াইয়ের ম্যাচে করা হ্যাটট্রিক।

কিন্তু কামরুল ইসলাম রাব্বির দূর্ভাগ্যটা দেখেন।

এমন বড় ম্যাচে হ্যাটট্রিক করেও সেভাবে আলোচনায় নেই। আলোচনায় না থাকাটা অবশ্য খুব অস্বাভাবিক না। কারণ, সেটা ছিলো ব্যাটসম্যানদের এক ম্যাচ। নাজমুল হাসান শান্ত সেঞ্চুরি করে দলের জন্য ২২০ রানের পর্বত দাড় করিয়েছিলেন। জবাবে পারভেজ হোসেন ইমন সেঞ্চুরি করে দলকে নাটকীয় জয় এনে দিয়েছিলেন। আর এই দুই সেঞ্চুরির মাঝখানে পড়ে চিড়ে চ্যাপ্টা হয়ে গেছে রাব্বির হ্যাটট্রিকটা।

রাব্বির অবশ্য এ নিয়ে খুব একটা আফসোস নেই। এই হ্যাটট্রিকের হারিয়ে যাওয়ার কথা তুলতে বরং একটু হেসে বললেন, ‘হ্যাটট্রিক নিয়ে আলোচনা না হওয়ায় দুঃখ নেই। শেষ পর্যন্ত আমরা অমন একটা ম্যাচ যে জিততে পেরেছি, তাতেই খুশি আমি।’

দলের জয়ের একটা আনন্দ তো আছেই। তাই বলে হ্যাটট্রিকের কোনো আনন্দ কী নেই?

আছে। রাব্বির কাছে এটা স্বপ্নের মতো একটা ব্যাপার। এই ব্যাটসম্যানদের ম্যাচে যে তিনি একটা হ্যাটট্রিক করে ফেলবেন, এটা কল্পনাও করতে পারেননি। তবে সেই সময়ের অনুভূতির কথা বলতে গিয়ে বলছিলেন, তখন খুব রোমাঞ্চ টের পাচ্ছিলেন না, ‘হ্যাটট্রিক তো বড় ব্যাপার। যে কোনো ধরণের খেলাতেই এটা বোলারদের একটা স্বপ্ন থাকে। কিন্তু সত্যি বলি, ওই সময় আমি এটা নিয়ে খুব আনন্দ টের পাইনি। আমার কাছে বরং চারটে উইকেট পেয়ে চারটে ডট বলের আনন্দ বেশি পেয়েছি। ওই সময় চারটে ডট বলের দাম অনেক বেশি ছিল।’

ম্যাচটা ঘুরে দেখতে গিয়ে রাব্বি বলছিলেন, এটা আসলে ব্যাটসম্যানদেরই ম্যাচ ছিলো। দুই সেঞ্চুরিয়ান তাই সবটুকু আলো কেড়ে নেওয়াতে খুব একটা আপত্তি নেই তার। তিনি শান্ত, ইমনের প্রশংসা করে বলছিলেন, ‘ওটা আসলে ব্যাটসম্যানদেরই গেম ছিলো। শান্ত দারুন ব্যাট করেছে। পরে আমাদের ইমন আরও ভালো ব্যাট করেছে। ফলে ওদের নিয়ে বেশী আলোচনা হবে, এটাই স্বাভাবিক। আমি খুশী যে, জয়ে কিছুটা অবদান রাখতে পেরেছি।’

ম্যাচ শেষে ফিরে দেখতে গিয়ে তাই নিজের হ্যাটট্রিকটাকে একটু দামীই মনে হচ্ছে রাব্বির। বলছিলেন যে, ওই চারটে উইকেট পাঁচ বলের মধ্যে না পেলে রানটা ইমনদের নাগালের বাইরে চলে যেতে পারতো, ‘একসময় তামিম ভাই বলছিলো যে, ওদের দুই’শ রানের নিচে আটকাতে হবে। কিন্তু শেষ দিকে মনে হচ্ছিলো, ওরা আড়াই’শ রান করে ফেলবে। আমরা তাই ওদের এর নিচে আটকাতে চাচ্ছিলাম। আমি ভাবছিলাম যে, শেষ ওভারে ১২-এর বেশী রান দেওয়া যাবে না। দেখেন যে দুটো বলে উইকেট পাইনি, তাতেই ১০ রান করে ফেলেছে। ফলে উইকেট চারটে আসলে বড় একটা রোল প্লে করেছে। আমি ভাগ্যবান যে, ওই চারটে বলে উইকেট পেয়েছি।’

রাব্বি নিজেকে অন্য কারণেও ভাগ্যবান মনে করতে পারেন। এই টুর্নামেন্টটা তার দারুণ কাটছে। আজকের ম্যাচের আগে পর্যন্ত ১৩ উইকেট নিয়ে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী তিনি। এক নম্বরে থাকা মুস্তাফিজের চেয়ে তার ম্যাচ একটা কম।

জাতীয় দলের জার্সি ইতিমধ্যে গায়ে চড়িয়েছেন। ২০১৬ সালে অভিষেকের পর ৭টি টেস্ট খেলে ফেলেছেন। তবে নিয়মিত হতে পারেননি। আর সীমিত ওভারের ক্রিকেটে এখনও সুযোগ পাননি।

নিজেকে সীমিত ওভারের স্পেশালিস্ট মনে করা রাব্বি বলছিলেন, তার এই টি-টোয়েন্টির পারফরম্যান্স তাকে সীমিত ওভারের জাতীয় দলের আরও কাছে নিয়ে যেতে পারে বলে তিনি বিশ্বাস করেন, ‘আমি তো সবসময় লিমিটেড ওভারে স্বচ্ছন্দ বোধ করি বেশি। টেস্টও ভালো। কিন্তু আমি লিমিটেড ওভারে এখনও চান্স পাইনি। পারফরম করে যাচ্ছি। এখন আমাকে বিবেচনা করা হলে আমি তৈরী আছি। আশা করি এই টুর্নামেন্টের পারফরম্যান্স আমাকে আরেকটু হেল্প করবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link