বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে গ্রুপ পর্বের শেষে এসেও নিশ্চিত নয় কারা খেলছে শেষ চারে ও এলিমেনিটরে। গ্রুপ পর্বের শেষ দিন অপেক্ষা করছে রোমাঞ্চ নিয়ে। শেষ দুই ম্যাচে দৃশ্যপটে থাকবে চার দল। রাজশাহী, বরিশাল ও ঢাকা নিজেদের সমীকরণ মেলাতে মাঠে নামলেও শীর্ষ দুই নিশ্চিত করা চট্টগ্রাম সেখানে নীরব দর্শক।
বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে গ্রুপ পর্বের শেষ দুই ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল। গ্রুপ পর্বের শেষ দিনের প্রথম ম্যাচে গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামের প্রতিপক্ষ মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী। আর দ্বিতীয় ম্যাচে ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে মাঠে নামবে মুশফিকুর রহিমের বেক্সিমকো ঢাকা। শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম ম্যাচ শুরু হবে দুপুর সাড়ে বারোটায় এবং দ্বিতীয় ম্যাচ শুরু হবে সন্ধ্যা সাড়ে পাঁচটায়।
নিজেদের প্রথম দুই ম্যাচ জিতে দারুণ ভাবে টুর্নামেন্ট শুরু করলেও পথ হারায় মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী। পরের ৫ ম্যাচ টানা হেরে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে পড়ার শঙ্কায় এখন পদ্মা পাড়ের দলটি। ৭ ম্যাচে ২ জয় নিয়ে দলটির অবস্থান পয়েন্ট টেবিলের চতুর্থ স্থানে। প্লে-অফে খেলতে হলে গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামের সাথে জেতার পাশাপাশি হার কামনা করতে হবে ফরচুন বরিশালের। তবে রানরেটে বরিশালের থেকে এগিয়ে থাকার কারণে শেষ ম্যাচে রাজশাহী ও বরিশাল দুই দলই জয় পেলে বা দুই দলই হেরে গেলে শেষ চারের সম্ভবনা বেশি থাকবে নাজমুল হোসেন শান্তদেরই।
রোমাঞ্চকর শেষ দিনে চট্টগ্রাম ও রাজশাহীর প্রথম লড়াইয়ে সবার নজর থাকবে গত ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান রাজশাহীর অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ও গত ম্যাচে দুর্দান্ত ইনিংস খেলা আনিসুল হক ইমনের উপর। রাজশাহীও তাকিয়ে থাকবে এদের দিকে। টুর্নামেন্টে ৭ ম্যাচে ২৯০ রান করে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক রাজশাহীর অধিনায়ক। এছাড়া ফজলে মাহমুদ রাব্বি ও নুরুল হাসান সোহানও সময় মতো জ্বলে উঠেছে অনেক ম্যাচে, নজর থাকবে তাদের উপরও। টুর্নামেন্টের মাঝপথে দলের সাথে যোগ দিয়ে এখনো ভালো করতে না পারা সাইফউদ্দিনের সাথে চোখ থাকবে মকিদুল ইসলাম মুগ্ধর উপরও।
অপর দিকে চট্টগ্রামের সেরা একাদশ খেলার সম্ভবনা খুবই কম। আগেই পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ দুই নিশ্চিত হওয়াতে আগের ম্যাচেই পেসার মোস্তাফিজ ও শরিফুলের সাথে বিশ্রামে ছিলেন দলের সেরা ব্যাটসম্যান লিটন দাস। সেরা একাদশ ছাড়াই আগের ম্যাচে সৌম্য সরকার, সৈকত আলী ও মাহমুদুল হাসানের ব্যাটে দুর্দান্ত জয় পেয়েছে চট্টগ্রাম। বল হাতে ভালো করেছিলেন সঞ্জীত শাহ ও মোসাদ্দেক হোসেন। এই ম্যাচেও তাদেরই উপর চোখ থাকবে সবার।
দিনের দ্বিতীয় ম্যাচটা দুই দলের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। শেষ চার নিশ্চিত করতে মাঠে নামবে ফরচুন বরিশাল। আর শীর্ষ দুই নিশ্চিত করতে জয়ের কোন বিকল্প নেই মুশফিকুর রহিমের বেক্সিমকো ঢাকার। ঢাকা হেরে গেলে টুর্নামেন্টে তৃতীয় স্থানে থেকে কোয়ালিফায়ার খেলতে হবে। আর জয় পেয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ দুইয়ে থাকলে এলিমেনিটর খেলতে পারবে। এলিমেটরে হেরে গেলেও ফাইনালে যাওয়ার জন্য আরেকটা সুযোগ পাবে ঢাকা। অপর দিকে টুর্নামেন্টে ৭ ম্যাচে ২ জয় নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শেষে রয়েছে ফরচুন বরিশাল। শেষ চারে খেলতে হলে নিজেদের জয়ের পাশাপাশি হার কামনা করতে হবে রাজশাহীর। রাজশাহী জিতে গেলে প্লে-অফ খেলতে হলে ঢাকার বিপক্ষে বড় ব্যাবধানে জিততে হবে বরিশালকে।
দুই দলের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে সবার নজর থাকবে তামিম ইকবাল ও পারভেজ হোসেন ইমনের উপর।ঢাকার ব্যাটিং স্বম্ভ মুশফিকুর রহিমের সাথে ইয়াসির আলী এবং আকবর আলীর উপরও নজর থাকবে সবার। টুর্নামেন্টে ৭ ম্যাচে ২৮৩ রান নিয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক তামিম ইকবাল। ৭ ম্যাচে ২১৮ রান নিয়ে ৪র্থ স্থানে পারভেজ হোসেন ইমন ও ৭ ম্যাচে ২১৪ রান নিয়ে তার পরের অবস্থানেই মুশফিকুর রহিম। দলের প্রয়োজনে গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলা ইয়াসির আলী টুর্নামেন্টে সংগ্রহ করেছে ১৭৫ রান ও আকবর আলীর সংগ্রহ ১৩৯ রান।
টুর্নামেন্টে এক মাত্র হ্যাটট্রিক করা কামরুল ইসলাম রাব্বির সাথে ফ্রন্ট লাইটে থাকবেন রবিউল ইসলাম, মুক্তার আলী, রুবেল হোসেন ও শফিকুল ইসলাম। ঢাকার হয়ে রবিউল ও মুক্তার আলীর শিকার ১২ উইকেট, রুবেল হোসেন ৭ ম্যাচে নিয়েছেন ১০ উইকেট ও শফিকুলের শিকার ৫ ম্যাচে ৮ উইকেট। ৭ ম্যাচে ১৩ উইকেট নিয়ে সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহকের তালিকায় বরিশালের পেসার রাব্বির অবস্থান তৃতীয়তে।