শেষ চারে জায়গা করে নিতে কাজটা সহজ ছিলো না বরিশালের জন্য। এমন কি নিজেদের নিয়ন্ত্রণেও ছিলো না সব কিছু। কিন্তু আফিফ- হৃদয়ের ব্যাটিং বীরত্বে ও শুভর ঘূর্ণিতে সব সমীকরণ মিলিয়েছে বরিশাল, দাপুটে জয়ে জায়গা করে নিয়েছে প্লে-অফে।
দিনের ১ম ম্যাচে হেরে বরিশালকে প্লে-অফে যেতে যে সুযোগ করে দিয়েছিলো রাজশাহী। বেক্সিমকো ঢাকাকে শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে ২ রানে হারিয়ে সেই সুযোগটা দারুণ ভাবে কাজে লাগিয়েছে বরিশাল। চট্টগ্রাম, খুলনা ও ঢাকার পর ৪র্থ দল হিসাবে প্লে-অফ নিশ্চিত করেছে তামিমরা।
দিনের ২য় ও গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে টসে জিতে ফরচুন বরিশালকে ব্যাট করার আমন্ত্রণ জানায় বেক্সিমকো ঢাকা। ইনিংস উদ্বোধন করতে নেমে ফরচুন বরিশালকে দারুণ শুরু এনে দেন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও সাইফ হাসান। উদ্বোধনী জুটিতে ৭.২ ওভারে তারা সংগ্রহ করেন ৫৯ রান। ১৭ বলে ১৯ রানের ধীরগতির ইনিংস খেলে তামিম বিদায় নিলে উইকেটে আসেন পারভেজ হোসেন ইমন। তবে উইকেটে বেশীক্ষণ থাকতে পারেননি তিনি, মুক্তার আলীর বলে নাইম শেখের হাতে ক্যাচ দিয়ে ইমন ফিরে যান ১৩ বলে ১৩ রান করে।
দলীয় শতরান পূর্ণ করে ৪৩ বলে হাফসেঞ্চুরি পূরণ করে সাইফ আউট হয়ে গেলে উইকেটে আসেন তৌহিদ হৃদয়, জুটি বাঁধেন আফিফ হোসেনের সাথে। ইনিংসের শেষ পর্যন্ত এই জুটি ঢাকার বোলারদের উপর ট্রিম রোলার চালিয়েছে। এই দুজনের ৩৮ বলে ৯১ রানের জুটিতে ১৯৩ রানের বড় সংগ্রহ পায় ফরচুন বরিশাল। ২৫ বলে ১ টি চার ও ৫ টি ছয়ে ৫০ রানে করে আফিফ এবং ২২ বলে ২ টি চার ও ৪ টি ছয়ে ৫১ রান করে তৌহিদ অপরাজিত থাকেন।
বেক্সিমকো ঢাকার পক্ষে রুবেল হোসেন, আল আমিন ও মুক্তার আলী ১ টি করে উইকেট শিকার করেন।
১৯৪ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে দুই ওপেনার দারুণ শুরু এনে দিলেও টুর্নামেন্টে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা সোহরাওয়ার্দী শুভর ঘূর্ণিতে পথ হারায় ঢাকার ইনিংস। দলীয় ৫২ রানে ব্যাক্তিগত ১৯ রান করে সাব্বির রহমান ফিরে যাওয়ার পর উইকেটে এসে বেশীক্ষণ থাকতে পারেননি মুশফিকুর রহিম। ৫ রান করে শুভর বলে এলবিডাব্লিউ হয়ে ফিরে যান ঢাকার অধিনায়ক। একই ওভারে রানের খাতা খোলার আগেই আল আমিন ফিরে গেলে চাপে পড়ে ঢাকা।
৪র্থ উইকেট জুটিতে ইয়াসির আলীকে সাথে নিয়ে ঢাকার বোলারদের উপর চওড়া হয়ে ম্যাচ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে নাইম শেখ। এই দুজন ৫৯ বলে যোগ করেন ১১০ রান। ৬৪ বলে ৮ টি চার ও ৭ টি ছয়ে ১০৫ রানের ইনিংস খেলে টুর্নামেন্টের ৩য় ও নিজের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ১ম সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে নাইম শেখ আউট হওয়ার পরে বাকি কাজটা শেষ করতে পারেনি ঢাকার ব্যাটসম্যানরা। শেষ ওভারে জয়ের জন্য ১৭ রান প্রয়োজন হলে ঢাকা ১৩ রান সংগ্রহ করে ২ রানে ম্যাচ হেরে যায়। ইয়াসির আলী ৪১ রান, আকবর আলী ৯ ও মুক্তার আলী করেন ৬ রান। সোহরাওয়ার্দী শুভ ৩ টি, সুমন খান ও কামরুল ইসলাম রাব্বি ১ টি করে উইকেট শিকার করেন।
- সংক্ষিপ্ত স্কোর
ফরচুন বরিশাল: ২০ ওভারে ১৯৩/৩ (সাইফ- ৫০, তামিম- ১৯, ইমন- ১৩, আফিফ- ৫০*, তৌহিদ- ৫১*; মু্ক্তার- ১/৪৮, আল আমিন- ১/৫, রুবেল- ১/২৮)
বেক্সিমকো ঢাকা: ২০ ওভারে ১৯১/৬(নাইম- ১০৫, সাব্বির- ১৯, মুশফিক- ৫, ইয়াসির- ৪১, আকবর- ৯, মুক্তার- ৬; সোহরাওয়ার্দী- ৩/১৩, রাব্বি- ১/৪১, সুমন- ১/৪৪)
ফলাফল: ফরচুন বরিশাল ২ রানে জয়ী।