গুমট ইউনাইটেডের অন্দরমহল

সরগরম ফুটবল বিশ্ব। হ্যাঁ, বিশ্বকাপ আসন্ন এখন একটু উত্তেজনা ছড়ানো বেশ স্বাভাবিক। তবে না, এই উত্তেজনার সাথে বিশ্বকাপের সম্পৃক্ততা নেই বললেই চলে। বরং ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোতে আবারও আলোচনা-সমালোচনায় মুখর গোটা ফুটবল বিশ্ব। হঠাৎ করেই রীতিমত বিস্ফোরণ ঘটালেন পর্তুগাল তারকা ফুটবলার।

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকেই ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর উত্থান। এরপর তো বিশ্বকাপ বাদে প্রায় সব কিছুই তিনি জিতেছেন একজন খেলোয়াড় হিসেবে। স্পেন থেকে ইতালি হয়ে আবার ফিরেছেন ঘরে। ইউনাইটেড কিংবদন্তি স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনের হাতে গড়ে ওঠা রোনালদোর একটা বাড়তি টান সব সময়ই কাজ করে রেড ডেভিলদের জন্য। করাটাও প্রচণ্ডরকম স্বাভাবিক।

এই ওল্ড ট্রাফোর্ড থেকেই তো জীবনের সাফল্যের পথে হাঁটা শুরু করেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। সমর্থকদের ভালবাসায় সব সময়ই সিক্ত ছিলেন তিনি। প্রায় প্রতিটা ক্লাবই তাঁকে যথাযথ সম্মান দিয়েছে। সেটা অবশ্য তাঁর প্রাপ্যও। নিজের পরিশ্রম ও চেষ্টার সংমিশ্রণ ঘটিয়ে তিনি বনে গিয়েছেন সময়ের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়। রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে গড়েছেন দারুণ সব ইতিহাস।

এত সব কিছুর পর তিনি আবার ফিরেছেন নিজের ঘরে। প্রত্যাশা করেছিলেন ভালবাসা না হোক সম্মানটুকু অন্তত তিনি পাবেন। তবে না, এবার তিনি মুখ খুললেন। ক্লাবে তিনি যথাযথ সম্মানটুকু পান না। তাছাড়া প্রতারণার শিকারও হয়েছেন বলে জানিয়েছেন পর্তুগীজ তারকা ফুটবলার। ইংল্যান্ডের প্রসিদ্ধ ক্রীড়া সাংবাদিক পিয়ার্স মরগানকে দেওয়া এক সাক্ষৎকারে বিস্ফোরক সব মন্তব্য করেছেন রোনালদো।

তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড আমাকে দল ছাড়ার জন্যে চাপ প্রয়োগ করেছিল। শুধু কোচ নন, ক্লাবের ভেতরেও আরও দুই-তিন জন রয়েছেন। আমি প্রতারিত বোধ করছি। আমার মনে হয় কেউ কেউ আমাকে ম্যান ইউতে চায় না।’

এমন মন্তব্য রীতিমত তোলপার করে দিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে মূল ধারার গণমাধ্যমকে। তাছাড়া রোনালদো রেড ডেভিলদের বর্তমান কোচ এরিক টেন হ্যাগকে নিয়েও মন্তব্য করেছেন।

তিনি বলেন, ‘ওর জন্য আমার কোন সম্মান নেই। কারণ সে আমাকে সম্মান করেনি।’এমন মন্তব্য নিশ্চয়ই প্রত্যাশা করেনি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কোন খেলোয়াড় কিংবা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

শুধু কোচ নয়, তিনি কথা বলেছেন ক্লাবের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়েও। বর্তমানে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের পয়েন্ট টেবিলের পঞ্চম স্থানে অবস্থান করছে। রোনালদোর মতে, স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনের গড়ে যাওয়া ক্লাব ও বর্তমান ক্লাবের মধ্যে ব্যাপক ফারাক রয়েছে।

হ্যাঁ, সাম্প্রতিককালে ইউনাইটেডে ঠিক আগের মত শক্তিশালী একটি দল নেই। তবে একটি দলের সদস্য হয়ে দল ও দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলো নিয়ে মিডিয়াতে এমন বিস্ফোরক মন্তব্য করাও তো সমীচিন নয়। তাও আবার ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর মত একজন বিশ্ব তারকার কাছ থেকে এমনটা নিশ্চয়ই কেউ প্রত্যাশা করে না।

যদিও এখনও পুরো সাক্ষাৎকারটি প্রচারিত হয়নি। তবুও সমালোচনার তীব্র ঝড় বয়ে যাচ্ছে ইউরোপীয় ফুটবল পাড়ায়। তাছাড়া এমনটাও শোনা যাচ্ছে, রোনালদোর সতীর্থরাও এমন বেফাঁস মন্তব্যে বেজায় মনঃক্ষুণ্ণ হয়েছেন। এমনকি কোচ এরিক টেন হ্যাগও বিষয়টি হালকাভাবে নিচ্ছেন না। তিনি বরং অবাক হয়েছেন।

বিশ্বকাপের আগেই এমন এক বিষয়ে নিশ্চয়ই সরগরম হতে চায়নি ফুটবল বিশ্ব। তবুও বিস্ফোরণ যেহেতু ঘটেছে এর পরিণতি দেখতে নিশ্চয়ই মুখিয়ে রবে ফুটবল সমর্থকরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link