‘গতানুগতিক’ বাবর

পুরো বিশ্বকাপ জুড়েই বাবর স্ট্রাইক রেট জনিত জটিলতায় ভুগেছেন। ফাইনালে সেটা কাটিয়ে ‍ওঠা দরকার ছিল। কারণ, প্রতিপক্ষ দলটা ছিল ইংল্যান্ড।

হরভজন সিং যেন বাবর আজমের সমালোচনায় বরাবরই এগিয়ে থাকেন। অবশ্য এটাও ঠিক যে – সমালোচনা করার জায়গা আছে বলেই সমালোচনা হয়। এই যেমন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালের কথাই ধরুন না।

পাকিস্তানের অধিনায়ক হিসেবে দলের নাও টেনে নেয়ার কথা ছিল দলটির ব্যাটিং বাদশাহ বাবরের। সেই তিনিই কিনা ব্যাট হাতে করলেন ২৮ ডেলিভারিতে মাত্র ৩২ টি রান। বাবর আজমের এমন সাদামাটা ব্যাটিং দেখে অবাক হয়েছেন ভারতীয় সাবেক ক্রিকেটার হরভজন সিং।

পুরো বিশ্বকাপ জুড়েই বাবর স্ট্রাইক রেট জনিত জটিলতায় ভুগেছেন। ফাইনালে সেটা কাটিয়ে ‍ওঠা দরকার ছিল। কারণ, প্রতিপক্ষ দলটা ছিল ইংল্যান্ড। শক্তিমত্তায় যারা বিশ্বের অন্যতম সেরা দল হিসেবে বিবেচিত। একথা তো আগে থেকেই বোধগম্য, যে ইংল্যান্ডের মত দলকে মামুলি কোন টার্গেট দিয়ে জেতা সম্ভব নয়।

অন্তত, বাবর আজম অ্যান্ড কোং ইংরেজদের যে মাত্র ১৩৮ রান তাড়া করতে দিয়েছে তার সমালোচনা করছেন অনেক ক্রিকেটবোদ্ধাই। এখন আপনি বলতে পারেন খেলায় হার-জিত তো থাকবেই। বিষয়টা আসলে হার-জিতের না। প্রশ্ন উঠছে আসলে বাবর আজমদের প্রতিযোগিতামূলক মানসিকতা নিয়ে।

স্টার স্পোর্টসের একজন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ হিসেবে হরভজন সিং বলেন, ‘পাকিস্তান তাদের ব্যাটিং প্রচেষ্টায় হতাশ করেছে। তারা প্রথম দিকে সুযোগ নেয়নি এবং বাবর আজম বড্ড সাধারণ পারফর্ম করেছে। আপনি যখন জাহাজের নাবিক তখন আপনি এমন ব্যাটিং করতে পারেন না। ২৮ বলে আপনি মাত্র ৩২ রান করছেন। আপনি আপনার দলকে গভীর  সমস্যায় ফেলছেন। তারা আর এটাকে কাটিয়ে উঠতে পারেনি।’

এই পুরো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আসরে বাবর আজম নিজেকে মেলে ধরতে ব্যর্থ ছিলেন। যেন নিজের ছায়া হয়ে ছিলেন তিনি। সেমিফাইনালের ম্যাচে যখন নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৪২ বলে ৫৩ রানের ইনিংস খেলেছিলেন, তখন ভক্ত সমর্থকরা আসায় বুক বেঁধেছিলেন।

এই বুঝি বাবর স্বরূপে ফিরলেন। কিন্তু ফাইনালে দলের যখন তাঁকে দরকার ছিল, তাঁর একটা ঝড়ো ইনিংস পাকিস্তানের ভিত মজবুত করে দিতে পারত, তখন আবারও হতাশ করলেন বাবর।

এই নিয়ে দুই-দুইবার বিশ্বকাপের শিরোপার এতোটা কাছে গিয়েও আক্ষেপকে সঙ্গী করেই ফিরছে পাকিস্তান। শিরোপা হাতছাড়ার গ্লানি তো আছেই। কিন্তু পাকিস্তান এবার শিক্ষাটা নেবে তো?

গলদটা যেন পাকিস্তানের ওই ব্যাটিং অর্ডারে। আপনার যতই বিশ্বসেরা পেস আক্রমণের সুযোগ থাকুক, আপনি কখনোই দল হিসেবে ব্যাটিং সাইডকে উপেক্ষা করতে পারবেন না। এই যে ফাইনালে এক শাহীন আফ্রিদির চোট পাওয়াকে পরাজয়ের অজুহাত হিসেবেও দেখাতে পারবেন না।

একটা টুর্নামেন্ট জিততে হলে ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিং তিন দিকেই শক্তিমত্তা বাড়াতে হয়। ইনিংসের প্রথমে ব্যাট হাতে নেমে একটা শক্তপোক্ত স্কোর সংগ্রহ করা বড্ড গুরুত্বপূর্ণ। তবেই না লোকে বলবে লড়াকু মানসিকতায় খেলেছে দলটি।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...