ঘটনা কোয়ার্টার ফাইনালের আগের দিনের। সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন দলটির তরুণ তুর্কী ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। সঙ্গে ছিলেন ব্রাজিলের মিডিয়া ম্যানেজার। খুবই স্বাভাবিক একটা প্রক্রিয়া, বিশ্বকাপের রোজকার দৃশ্য।
তবে, ঠিক ওই সময়ই দেখা যায় একটা বিড়ালকে। কেবল সম্মেলন কক্ষে ঢুকেই বিড়ালটি ক্ষান্ত হয়নি। রীতিমতো আয়েশি ভঙ্গিতে সংবাদ সম্মেলনের ডায়াসের ওপর উঠে বসে। এসময় কথা বলছিলেন ভিনিসিয়াস, উত্তর দিচ্ছিলেন সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের। তবে, বিড়াল দেখে তিনি কিছুটা থমকে যান, অস্বস্তি বোধ করা শুরু করেন।
তখন এগিয়ে আসেন ব্রাজিলের মিডিয়া ম্যানেজার। তিনি বিড়ালটির ঘাড় ধরে টেবিল থেকে ফেলে দেন! একটি অবলা প্রাণীর প্রতি এমন আচরণে সোশ্যাল সাইটে প্রতিবাদ আর নিন্দার ঝড় উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা এই ঘটনাকে ‘অমানবিক’ বলে উল্লেখ করেছেন।
তখন থেকেই একটা ‘অভিশাপ’-এর বাতাস উড়েছিল কাতারের আকাশে। বলা হচ্ছিল, তাহলে কি এই বিড়ালের অভিশাপেই হারবে ব্রাজিল? বিদায় নেবে বিশ্বকাপ থেকে? হেক্সাজয়ের স্বপ্ন মুখ থুবড়ে পড়বে?
কোয়ার্টার ফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ফেবারিট হয়েই মাঠে নেমেছিল ব্রাজিল। তবে, মাঠের খেলায় নিজের নামের প্রতি সুনাম করতে পারেনি তাঁরা, একদমই। মধ্যমাঠের খেলায় বরং এগিয়ে ছিল ক্রোয়েশিয়াই। ম্যাচ নব্বই মিনিটে গোলশূণ্য সমতায় থাকার পর অতিরিক্ত সময়ে গড়ায়। তখন নেইমার দর্শনীয় এক গোলে দলকে এগিয়ে দিলেও শেষ রক্ষা হয়নি।
গোল পরিশোধ করে লড়াইয়ে ফেরে ক্রোয়েশিয়া। পুরো ম্যাচে ক্রোয়েশিয়ার একটাই ‘শট অন টার্গেট’। আর তাতেই গোল। একবার ম্যাচে ফিরে তাঁরা হয়ে ওঠে আরও দূর্বার। পরে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানে পারেনি ব্রাজিল। পরিসংখ্যান বলে, বিশ্বকাপে কখনও পেনাল্টি শ্যুট আউটে হারেনি ক্রোয়েশিয়া। এবারও সেই রেকর্ড অক্ষুন্ন রইল। আর কোয়ার্টার ফাইনালে সেলেসাওদের ইউরোপিয়ান দলের সামনে সম্মান খোয়ানোর ধারাটাও টিকে রইল।
ব্রাজিলের বিশ্বকাপ যাত্রার অবসান হল। ষষ্ঠ বিশ্বকাপ জয়ের অপেক্ষাটা আরও বাড়ল, অন্তত চারটি বছরের জন্য। আর এই মুহূর্তে মনে হতেই পারে, বিড়ালটাকে তখন ওভাবে সরিয়ে না দিলেও পারতেন ব্রাজিলের মিডিয়া ম্যানেজার!