ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যাওয়ার নায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ। বলাই যায়, সিরিজটি তাঁর আর বাকিরা খেলে যাচ্ছেন। তাই, বিশ্বকাপের মাঝেও থেমে নেই মিরাজের উদ্মাদনা। তাঁর প্রভাববিস্তারী পারফরম্যান্স বাংলাদেশ দলকে নিয়ে যায় জয়ের সন্নিকটে।
মিরাজের একটা ব্যাপার কমন থাকে সেটা হল ‘চাপ’। আর সেই চাপ সামলেই তিনি ধসে পড়া দলকে নিয়ে এগিয়ে যান। এটাই হয়তো মিরাজের বিশেষত্ব। তিনি বারংবার মনে করিয়ে দেন, তাঁর সাথে যেটা হয় সেটা অন্যায়। মিরাজ ব্যাটিং ও বোলিং দুটোতেই সমান কার্য্যকরী। তবুও তাঁকে বিবেচনা করা হয় বোলার ও লোয়ার অর্ডার ব্যাটার হিসেবে।
ভারতের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে হাড়তে থাকা দলের হাল ধরেন তিনি। দশে নামা মোস্তাফিজকে নিয়ে অপরাজিত ৫১ রানের পার্টনারশিপ করেন মিরাজ। সেই ম্যাচে ৩৮ রান ও একটি উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হন তিনি।
দ্বিতীয় ম্যাচে আগে ব্যাট করে ৬৯ রানেই ৬ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। মিরাজ লোয়ার অর্ডারে নেমেও করেন তাঁর অভিষেক সেঞ্চুরি। ইনিংস শেষে দলকে এনে দেয় ২৭১ রান। বল হাতেও মিরাজ তুলে নিয়েছিলো দুটি উইকেট। পরবর্তীতে তিনি-ই হয়েছিলেন ম্যাচ সেরা।
মিরাজ সুযোগটা না পেলেও, হাল ছাড়েন না তিনি। প্রতিনিয়ত তিনি যে অলরাউন্ডার তা মনে করিয়ে দেন আমাদের। বল কিংবা ব্যাট হাতে তিনি থেমে থাকেন নি। মিরাজ যে ব্যাট হাতেও কার্য্যকরী বাইশ গজে প্রতিনিয়ত প্রমান করেই চলেছেন। দলগত ব্যর্থতার দিনেও ভেঙে পড়েননি তিনি।
প্রতিটা সময় মিরাজ আমাদেরকে মুগ্ধ করেছেন। চাপের মুখে নিজেকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। সবাই ব্যার্থ হলেও, তিনি শেষ অবধি চেষ্টা করে গিয়েছেন। তিনি বিশ্বাস করেন তিনি পারবেন, তাই কখনো হাল ছাড়তে চাননি তিনি।
ভীষন চাপের মোকাবেলা করতে মিরাজ হাজির হয়ে যান বাইশ গজে। তিনি টেস্ট, ওয়ানডে কিংবা টি-টোয়েন্টি কোথাও থমকে নেই। ভারতের বিপক্ষেও সেটাই জানান দিচ্ছেন মিরাজ। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মিরাজকে নেওয়া হয়েছিলো মেক-শিফট ওপেনার হিসেবে। জেমি সিডন্স কে দেখা গিয়েছিলো পাওয়ার হিটিং নিয়ে কাজ করতে।
দলে সিনিয়রদের ভীরে হয়ত ব্যাটিং পজিশনে পিছিয়ে যান মিরাজ। যেমনটা ভারতের বিপক্ষ সিরিজে একাদশ থেকে পিছিয়ে ছিলেন ইয়াসির আলি রাব্বি। দলের বিপদে মিরাজ হাল ধরতে চায় এবং ধরছে। দ্বিতীয় ম্যাচে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সাথে জুটি গড়েন তিনি।
৬ উইকেট হারানো ৬৯ রানের দলকে নিয়ে ২১৭ রানে হাল ছেড়ে দেন রিয়াদ। ১৪৮ রানের জুটি ভেঙে যায় তাঁদের। তবে মিরাজ হাল ছাড়েননি। নয়ে নামা নাসুম আহমেদ কে সাথে রেখে ব্যাটের লরাই চালিয়ে যান তিনি। দলের সেই চাপ সামলে অভিষেক সেঞ্চুরি করেন তিনি।
লোয়ার অর্ডার এ নামা মিরাজ কখনো মুস্তাফিজ কিংবা নাসুমকে নিয়েই এগিয়ে যান। থমকে থাকতে চাননা তিনি। মিরাজ আমাদের বারংবার জানান দিয়ে যান। তিনি সাবলিল এবং কার্য্যকরী। তিনি নিজের উপরেই ভরসা রাখেন তিনি পারবেন। এই অদম্য মিরাজ দুর্বার হয়ে ছুটতে চান। মিরাজ এর দরকার যথাযথ সুযোগ। তবুও, কঠিন সময়ে পাওয়া সুযোগগুলো ব্যার্থ হতে দেননি তিনি।