সত্যিই কি বিশ্বকাপ মেসিদের দিতে চায় ফিফা?

যদিও, এটা ঠিক যে - আর্জেন্টিনা ও নেদারল্যান্ডসের মধ্যকার কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচটা বিতর্কের ঊর্ধ্বে নয়। সেদিন রেফারি ম্যাতেউ মোট ১৮টি হলুদ কার্ড দেখিয়েছেন। দুই দলের মোট আটজন করে হলুদ কার্ড দেখার পাশাপাশি, আর্জেন্টিনার কোচ লিওনেল স্কালোনি এবং সহকারী কোচ ওয়াল্টার স্যামুয়েলকেও হলুদ কার্ড দেখিয়েছেন তিনি।

ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর মতো ৩৯ বছর বয়সী পর্তুগিজ ডিফেন্ডার পেপেও শেষটা রাঙাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু দিনশেষে সেই চাওয়াটা মিইয়ে গেল মরক্কো রুপকথায়। ১-০ গোলে হেরে কোয়ার্টার ফাইনালেই শেষ হলো পেপের বিশ্বকাপ অধ্যায়। আর সেই অধ্যায় শেষে তিনি কড়া অভিযোগ এনেছেন ফিফার বিরুদ্ধে।

পর্তুগালের জার্সি গায়ে বরাবরই রুক্ষ আর কড়া মেজাজী পেপে। বিশেষত, বহু ম্যাচের শেষ মুহূর্তে তাঁর মেজাজ হারিয়ে ফেলার অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে। তবে এবার আর মাঠের ভিতরে মেজাজ হারালেন না। ম্যাচের এক দম শেষ মিনিটে একটি হেড দিয়ে গোল দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। তবে হেডে বাড়ানো সেই বল চলে যায় গোলবার ঘেঁষে। আর সেখানেই পর্তুগালে শেষ চেষ্টাটাও বিফলে চলে যায়।

তবে সেই হেডের পরেই ভিন্ন এক দৃশ্যের সাক্ষী হয় দোহার আল থুমামা স্টেডিয়াম। সেখানে দেখা যায়, হেড করার পর পেপের অপর প্রান্তে চলে যাওয়ার সময় তাঁর মাথা ধরে চুমু খাচ্ছেন মরক্কোর ডিফেন্ডার আল ইয়ামিক। এর পিছনে কারণ কী ছিল তা জানা যায়নি।

হয়তো মরক্কোর জয় নিশ্চিতের ক্ষণ ঘনিয়ে আসা দেখেই এমনটি করেছিলেন ইয়ামিক। তবে ইয়ামিকের এমন কান্ডে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাননি পেপে। বরং তিনি বিস্ফোরণ ঘটিয়েছেন ম্যাচ শেষের পরে। খুবই বিস্ময়করভাবে তিনি আঙুল তোলেন আর্জেন্টাইন রেফারির উপর।

সেখানেই থেমে থাকেননি পেপে। তিনি তাঁর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, ‘আমরা গোল খেয়েছি, যা অবশ্যই অপ্রত্যাশিত ছিল। তবে আগের রাতে যা হয়েছে এরপর এই ম্যাচে আর্জেন্টাইন রেফারিকে দায়িত্ব দেওয়া আমি কোনোভাবেই মানতে পারছি না। বিশ্বকাপটা তারা এখন চাইলে আর্জেন্টিনাকে দিয়ে দিতে পারে।’

পেপের এমন অভিযোগ অবশ্য অনেকে অজুহাত হিসেবেই নিচ্ছেন। কারণ পর্তুগাল-মরক্কো ম্যাচে রেফারি থেকে তেমন বিতর্কিত কোনো সিদ্ধান্তের নমুনাই মেলেনি। ম্যাচের নব্বই মিনিট শেষে ৮ মিনিট যোগ করাতে পেপে ক্ষিপ্ত হয়েছেন। কিন্তু নক আউট পর্বের প্রত্যেকটি ম্যাচে প্রায় এমন সময়সীমাই যুক্ত করা হয়েছে। তাই পেপের অভিযোগ আপাতত আমলে নেওয়ার মতো বিষয় হয়ে দাঁড়াচ্ছে না।

আর আর্জেন্টিনাকে যদি ফিফা বিশ্বকাপ জিতিয়ে দিতেও চায়, তার সাথে পর্তুগালের সম্পর্ক কি! সেমিফাইনালে পর্তুগাল গেলে সেখানে আর্জেন্টিনা নয় বরং, তাঁদের খেলতে হত ফ্রান্সের সাথে। ফলে, পেপের কথা ধোপে টিকছে না।

হয়তো বিশ্বকাপের শেষ ম্যাচ হারের যন্ত্রণাতেই আবেগ ফেটে পেপের বিবৃতি একদম বিস্ফোরক রূপে আবর্তিত হয়েছে। এমন প্রতিক্রিয়া ফুটবল ইতিহাসে নতুন নয়। তাই দিনশেষে পেপের ক্ষোভটাও অতি সাধারণ আর স্বাভাবিক কাতারেই পড়ে যাচ্ছে।

যদিও, এটা ঠিক যে – আর্জেন্টিনা ও নেদারল্যান্ডসের মধ্যকার কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচটা বিতর্কের ঊর্ধ্বে নয়। সেদিন রেফারি ম্যাতেউ মোট ১৮টি হলুদ কার্ড দেখিয়েছেন। দুই দলের মোট আটজন করে হলুদ কার্ড দেখার পাশাপাশি, আর্জেন্টিনার কোচ লিওনেল স্কালোনি এবং সহকারী কোচ ওয়াল্টার স্যামুয়েলকেও হলুদ কার্ড দেখিয়েছেন তিনি।

ম্যাচ শেষে রেফারির বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে অভিযোগও জানান লিওনেল মেসি ও এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। ফলে নড়েচড়ে বসেছে ফিফাও। রেফারির বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে অভিযোগ করার কারণে আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। একইসঙ্গে বিশৃঙ্খলা তৈরির অভিযোগে তদন্ত হবে ডাচদের বিরুদ্ধেও।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...