গুরুত্বহীন ম্যাচে শেষ হাসিটা ক্রোয়াটদের

একদিকে অভিজ্ঞতায় ঠাঁসা ক্রোয়াট দল। অন্যদিকে কাতার বিশ্বকাপে এসে চমকে দেওয়া তারুণ্য নির্ভর দারুণ ভারসাম্যপূর্ণ দল মরক্কো। না। শিরোপা নির্ধারণী কোনো লড়াই নয়। সেমিফাইনালে বিজীত দুই দলের মধ্যকার তৃতীয় স্থান নির্ধারণীর এক ম্যাচ।

অনেকে যে ম্যাচটিকে অভিহিত করে থাকেন বিশ্বকাপের সবচেয়ে জৌলুশহীন ম্যাচ হিসেবে। তবে বুড়ো আর তারুণ্যের লড়াইয়ে মরক্কো-ক্রোয়েশিয়া মধ্যকার ম্যাচটা ঠিকই জমে উঠল। দুই দলের শরীরী ভাষায় মনেই হচ্ছিল না, এটি কোনো তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচ। ঠিক যেন দুই দাপুটে দলের দারুণ এক মহাযজ্ঞ চিত্রায়িত হলো কাতারের খলিফা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে। 

যাহোক, দুই দলের আক্রমণ প্রতি আক্রমণে জয়টা শেষ পর্যন্ত জুটেছে ক্রোয়াটদেরই। গতবারের রানার্সআপরা এবার বিশ্বকাপ শেষ করলো তৃতীয় স্থান হয়ে। এ যাত্রায় তারা মরক্কোকে হারিয়েছে ২-১ গোলে। 

তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচ হলেও শুরু থেকেই দারুণ গতিময় ফুটবলের দেখা মিলে এ ম্যাচে। দুই দলই বল কাড়াকাড়ি নিয়ে তৎপর। তবে ম্যাচের সপ্তম মিনিটে মরক্কোর জালে বল জড়িয়ে প্রথম গোল করেন ক্রোয়াট ডিফেন্ডার গার্ভাদিওল। ক্রোয়েশিয়ার এ গোলটিকে অবশ্য সমন্বিত গোল বললেও ভুল হয় না।  লুকা মদ্রিচের ফ্রি কিক থেকে বল বাড়ান। আর সেই বল ফাঁকায় পেয়ে ইভান পেরিসিচ হেডে বল বাড়ান বক্সের সামনে। সেখান থেকেই দারুণ এক ডাইভিং হেডে গোল করেন গার্ভাদিওল।

শুরুর গোলে একপেশে এক লড়াইয়ের আভাস পাওয়া গিয়েছিল তখনই। কিন্তু ২ মিনিট বাদেই মরক্কোর হয়ে গোল করে ম্যাচটা জমিয়ে দেন আশরাফ দারি। ম্যাচের শুরুর গতি আবারো ফিরে আসে এ গোলের পরেই। যদিও বল দখল কিংবা আক্রমণের লড়াইয়ে কিছুটা এগিয়েছিল ক্রোয়েশিয়া। আর সেই ধারাবাহিকতা ম্যাচের ৪২ মিনিটে গোল করে বসে ক্রোয়েশিয়া। মিসলাভ অরসিচের দারুণ এক গোলে আবারো এগিয়ে যায় ক্রোয়াটরা। ম্যাচের প্রথমার্ধ শেষ হয় ঐ ২-১ গোলেই। 

পরের অর্ধে বল দখলের লড়াইয়ে দুই দল সমান আধিপত্য বিস্তার করলেও আকাঙ্খিত গোলের দেখা আর পায়নি কোনো দল। যদিও ম্যাচের ৭৫ মিনিটে দারুণ এক সুযোগ পেয়েছিলেন মরক্কোর আন নাসরি। কিন্তু গোলকিপারের সাথে ওয়ান টু ওয়ান চ্যালেঞ্জে ব্যর্থ হয়ে মরক্কোকে সমতায় ফেরাতে দারুণ এক সুযোগ মিস করেন তিনি৷ 

আন নাসরির ঐ মিসের পরের গল্পটা আর একটুও রদবদল হয়নি। মরক্কোরা পিছিয়ে থাকে ঐ একটি গোলেই। আর একই সাথে কাতার বিশ্বকাপে সারা জাগানো আফ্রিকান দলটির বিশ্বকাপ শেষ হয় চতুর্থ হয়েই৷ 

আর অন্যদিকে পরে অর্ধে গোল না পেলেও ২-১ গোলে এগিয়ে ম্যাচটি জিতে নেয় মদ্রিচ, পেরিসিচ, লিভাকোভিচরা। ম্যাচ শুরুর আগে ক্রোয়াট কোচ শেষটা রাঙানোর এক বার্তা দিয়ে রেখেছিলেন। তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে সেই বার্তাকেই যেন বাস্তমব করে তুলল ক্রোয়াট খেলোয়াড়রা। গতবারের রানার্সআপ দলটা এবার তাদের বিশ্বকাপ মিশন শেষ করলো তৃতীয় হয়ে। ফাইনালে না উঠতে পারলেও অন্তত ব্রোঞ্জ মেডেল নিয়ে বিশ্বকাপটা শেষ করতো পারলো মদ্রিচরা। 

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link