ক্যারিয়ারে ব্যক্তিগত অর্জনে তিনি সবাইকে ছাড়িয়ে গেছেন অনেক আগেই। অনেকের কাছেই তিনি সর্বকালের সেরাদের একজন। কিন্তু সর্বকালের সেরা হিসেবে তার একক শ্রেষ্ঠত্বে এতদিন আপত্তি ছিল অনেকেরই। কারণ একটা বিশ্বকাপ শিরোপা যে মেসির ছিল না।
এবার কাতারে জিতলেন সেই অধরা শিরোপাও। তর্কাতীত ভাবে এখন সর্বকালের সেরার খেতাবটা অনেকটাই নিজের করে নিয়েছেন মেসি। তবে সাবেক বার্সেলোনা কোচ পেপ গার্দিওলার কাছে বিশ্বকাপ ছাড়াও মেসিই সর্বকালের সেরা খেলোয়াড়।
এক অসাধারণ বিশ্বকাপ কাটিয়েছেন মেসি। বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড়ের স্বীকৃতি, গোল্ডেন বল জেতার দৌড়ে মেসির ধারেকাছেও ছিলেন না কেউ। ফাইনালেও ২ গোল করে ম্যাচ সেরা পুরষ্কার পান তিনি। শ্বাসরুদ্ধকর ফাইনালে টাইব্রেকারে স্পট কিক থেকেও করেন গোল। ইতিহাসেরই প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে দুইটি বিশ্বকাপ গোল্ডেন বলের মালিক এখন মেসি।
মেসির ক্যারিয়ারের অন্যতম সফল কোচ পেপ গার্দিওলা। বার্সেলোনাকে সম্ভাব্য সব শিরোপা জিতিয়েছেন তার আমলে। মেসির ক্যারিয়ারের প্রারম্ভে মেসিকে খুব কাছ থেকে দেখেছেন এই স্প্যানিশ কোচ। সর্বকালের সেরা খেলোয়াড়ের স্বীকৃতি নিয়ে গার্দিওলার মধ্যে কোনো দ্বিধা নেই।
তার সাবেক শিষ্য মেসিকেই তর্কাতীত ভাবে সর্বকালের সেরা মনে করেন তিনি, ‘সবারই নিজের মতামত থাকতে পারে কিন্তু সে (মেসি) সর্বকালের সেরা খেলোয়াড় এটি নিয়ে কারও সন্দেহ করা উচিত নয়। আমার কাছে সেই সেরা। সেরা নিজের ক্যারিয়ারে যা করেছে অন্য কোনো খেলোয়াড় এর সাথে পাল্লা দেবে এটি ভাবাই খুব কঠিন।’
সর্বকালের সেরা বিতর্কে পেলে, ম্যারাডোনা বা আলফ্রেডো ডি স্টেফানোকেও পিছিয়ে রাখছেন এই ম্যানচেস্টার সিটির এই কোচ, ‘যারা পেলে, ডি স্টেফানো বা ম্যারাডোনার খেলা দেখেছে তাদের মতামত কিছুটা আবেগ দ্বারা প্রভাবিত। অন্যদিকে, মেসি যদি বিশ্বকাপ নাও জিতত তাহলেও আমার এই মত পরিবর্তন হত না।’
বিশ্বকাপের পর আগামী সাপ্তাহেই আবার শুরু হতে যাচ্ছে ইউরোপিয়ান ফুটবল লিগ গুলো। বিশ্বকাপে খেলা খেলোয়াড়দের ‘ওয়ার্ক লোড’ নিয়ে হচ্ছে অনেক আলোচনা। ইতোমধ্যেই ক্লাবের ডেরায় ফিরতে শুরু করেছেন বেশির ভাগ ফুটবলার-ই।
বিশ্বকাপে খেলা খেলোয়াড়দের ফিটনেস নিয়ে আপাতত চিন্তিত নন ম্যানসিটি বস, ‘আজকে (বুধবার) ছয়জন খেলোয়াড় ফিরেছেন। বিশ্বকাপে তাদের অভিজ্ঞতা অসাধারণ। আশা করি তারা আবার ফিরে আসবে, নিজেদের কাজ ঠিকঠাক ভাবে করবে এবং চার বছর পর কানাডা,মেক্সিকো এবং যুক্তরাষ্ট্রে আরেকটি অসাধারণ অভিজ্ঞতা অর্জন করবে।’
গার্দিওলার মতে, বিশ্বকাপে খেলা খেলোয়াড়রা খুব ভাল অবস্থায় আছে এখন, ‘যারা বিশ্বকাপে খেলে এসেছে তারা বিশ্বকাপে না খেলা খেলোয়াড়দের তুলনায় ভাল অবস্থায় আছে। বিশ্বকাপে খেলা রদ্রি বা ম্যানুয়েল আকাঞ্জিদের তুলনায় সার্জিও গোমেজ, আর্লিং হাল্যান্ড, রিয়াদ মাহারেজ বা কোলে পালমাররা তাদের ছন্দ কিছুটা হারিয়ে ফেলেছে।’
সামনের ব্যস্ত ক্লাব মৌসুমের আগে খেলোয়াড়দের পূর্ণ ছন্দে ফিরে পাওয়াই তাই এখন ম্যানসিটি কোচের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।