গত বছর অনেকটা হঠাত করেই সাদা পোশাকের ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন। উদ্দেশ্য ছিল ক্যারিয়ারের শেষ সময়টায় শুধু রঙিন পোশাকেই নজর দেয়া। তবে সেই রঙিন পোশাকেও যে আর সুযোগ মিলছিল না মাঠে নামার। আজ সেই সুযোগটা এল। প্রায় বছর খানেক বাদে আবার মাঠে নামলেন রুবেল হোসেন।
একটা সময় রুবেলকে ছাড়া বাংলাদেশের পেস আক্রমণ চিন্তাই করা যেত না। এখন অবশ্য রুবেলের বয়স বেড়েছে, সেইদিনও ফুড়িয়েছে। ঘরোয়া টুর্নামেন্টগুলোতেও দল পেতে কিংবা একাদশে থাকতে লড়াই করতে হয়। তরুণ পেসারদের ভীরে রুবলকে খুঁজে পাওয়া দায়। রুবেলও যেন নিজেকে হারিয়ে খুঁজছেন।
ফলে একটা বার মাঠে নামার জন্য, বোলিং করার জন্য করতে হয় দীর্ঘ অপেক্ষা। এই যেমন রুবেল আজ মাঠে নেমেছেন প্রায় নয় মাস বাদে। গত বছর ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে সর্বশেষ বল হাতে তুলেছেন। এরপর আর কোথাওই খেলা হয়নি তাঁর।
তবুও বিপিএলে ঠাই হয়েছে মাশরাফি বিন মর্তুজার দলে। উড়ন্ত শুরু করা সিলেট স্ট্রাইকার্সের একাদশে সুযোগ হচ্ছিল না রুবেলের। প্রথম চার ম্যাচ দেখেছেন ডাগ আউটে বসেই। বসে বসে যেন প্রতীক্ষার প্রহর গুনছিলেন।
তবে আজ চট্টগ্রামে নিজেদের প্রথম ম্যাচে সুযোগ মিলল রুবেলের। অধিনায়ক মাশরাফিও রুবেলের হাতে তুলে দিলেন নতুন বল। আর নতুন বল হাতে পেয়েই যেন রুবেলের সেই পুরনো ক্ষিপ্রতা। প্রথম ওভারেই সিলেটকে এনে দিলেন উদযাপনের লক্ষ্য।
ঢাকা ডমিনেটর্সের হয়ে আজ ওপেন করতে নেমেছিলেন সৌম্য সরকার ও উসমান ঘানি। নতুন বলে রুবেলের বল যেন খেলতেই পারছিলেন না এই দুজন। ইনিংসের তৃতীয় বলেই সৌম্যকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন রুবেল। নয় মাস পরে কোন স্বীকৃত ম্যাচে উইকেট।
ফলে আনন্দটাও নিশ্চয়ই একটু বেশি হবার কথা রুবেলের জন্য। আসলে এখন মাঠে নামতে পারাটাই যে রুবেলের জন্য অনেক বেশি উচ্ছ্বাসের। সিলেট দলেই তাঁর জায়গা হয় না নিয়মিত। অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার সাথে আরেক পেসার হিসেবে আছেন মোহাম্মদ আমির। এছাড়াও সিলেটে আছেন রেজাউর রহমান রাজাও।
প্রথম ম্যাচগুলোতে এই তিন জনের উপরই ভরসা রেখেছে সিলেট। দলটাকে প্রথম ম্যাচে জয়ও এনে দিয়েছিলেন রাজা। তবে পরের তিন ম্যাচে সেভাবে পারফর্ম করতে পারেননি এই পেসার। ফলে সিলেটকে খুঁজতে হয়েছে বিকল্প পেসার।
যদিও চতুর্থ পেসার হিসেবে সিলেট দলে তানজিম হাসান সাকিবের নামটাই বেশি শোনা যাচ্ছিল। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ী এই ক্রিকেটার সুযোগ পাবেন রাজার জায়গায় এমনটাই ভাবা হচ্ছিল। তবে মাশরাফি বিন মর্তুজা আরেকবার ভরসা রাখলেন রুবেলের উপর। হতাশ করেননি বাগেরহাটের এই পেসারও।
ইনিংসের প্রথম ওভারেই উইকেট এনে দিয়ে ভাল শুরু এনে দিয়েছেন। সিলেটের বাকি বোলাররাও পরে সেই ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছেন। চট্টগ্রামের উইকেটেও খুব বড় স্কোর করতে পারেনি ঢাকা ডমিনেটর্স। আর সেজন্য নিশ্চয়ই রুবেলকে কৃতিত্ব দিবে দলটা।
শেষ পর্যন্ত চার ওভার বল করে এই পেসাার খরচ করেছেন মাত্র ২৫ রান। সাথে তুলে নিয়েছেন ঢাকার ওপেনার সৌম্য সরকারের উইকেট। এবার নিশ্চয়ই পরের ম্যাচ খেলার জন্য আর খুব বেশি অপেক্ষা করতে হবে না রুবেলকে।