মেসিকে বিপক্ষ দলের কেউ ফাউল করলে সবার আগে তেড়ে আসেন তিনি। এজন্য অনেকেই মজা করে রদ্রিগো ডি পলকে মেসির ‘বডিগার্ড’ বলে ডাকেন। তবে শুধু ডি পল নন। পুরো আর্জেন্টিনা দলটাই গত কয়েক বছর ধরে খেলছে মেসির জন্য।
মেসিকে একটা আন্তর্জাতিক শিরোপা উপহার দিতে যেন জীবন দিতেও প্রস্তুত আর্জেন্টিনার একেকজন খেলোয়াড়। মেসি আর দলের প্রতি এমন নিবেদনের কারণেই কিনা ২০২১ সালে কোপা আমেরিকার পর ৩৬ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে বিশ্বকাপ শিরোপা নিজেদের করে নিলেন ডি পলরা।
বিশ্বকাপ যাত্রাটা মোটেও সহজ ছিলো না আলবিসেলেস্তেদের জন্য। প্রথম ম্যাচেই বিশ্বকপ ইতিহাসেরই অন্যতম বড় অঘটনের জন্ম দিয়ে সৌদি আরবের কাছে হেরে যায় আর্জেন্টিনা।
এই হারের ফলে গ্রুপ পর্বের বাকি ম্যাচগুলো আলবিসেলেস্তেদের জন্য হয়ে যায় নক আউট ম্যাচ। কিন্তু মেক্সিকো আর পোল্যান্ড বাঁধা পেড়িয়ে ঠিকই নকআউট পর্বে জায়গা করে নেয় আর্জেন্টিনা।
এরপর শেষ ষোলোতে অস্ট্রেলিয়াকে হারানো পর কোয়ার্টার ফাইনালে তখন আর্জেন্টিনার সামনে নেদারল্যান্ডস বাঁধা। সেই ম্যাচের আগে ইনজুরিতে পড়েন ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার রদ্রিগো ডি পল।
অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদে খেলা এই মিডফিল্ডারের কোয়ার্টার ফাইনালে মাঠে নামা ছিলো প্রবল সংশয়ে। ইনজুরিতে ভুগলেও ঠিকই কোয়ার্টার ফাইনালে শুরু থেকেই মাঠে নামেন ডি পল। খেলেছেন ম্যাচের ৬৬ মিনিট পর্যন্ত।
তবে ম্যাচের আগে মেসির সাথে নিজের ইনজুরি নিয়ে আলোচনা করেছিলেন ডি পল। এবার এক সাক্ষাৎকারে ডি পল তুলে আনলেন কোয়ার্টার ফাইনালের আগের সেই ঘটনা।
তিনি বলেন, ‘আমি মেসির রুমে যাই তখন ও বলে, তুমি খেলো না। আমরা সেমিফাইনালে পৌঁছাতে যাচ্ছি। এটা আমার বিশ্বকাপে শেষ ম্যাচ হতো যদি আমি আগামী চার বছর দলে ডাক না পেতাম।’
ডি পল বলেন, ‘মেসি আমাকে মাঠে নামতে বারণ করে বলে, আমি তোমাকে কথা দিচ্ছি আমি তোমাকে সেমিফাইনালে নিয়ে যাব কিন্তু তুমি পুরো বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাবার ঝুঁকি নিও না। আমি বুঝতে পারছিলাম না তাঁর সাথে কিভাবে দ্বিমত করব। এটি খুবই কঠিন ছিল। কারণ সে আমাকে দলের অধিনায়ক হিসেবে কথাগুলো বলেনি। বলেছিল একজন বন্ধু ও বড়ভাই হিসেবে।’
এরপর ইনজুরি থেকে কিছুটা সেড়ে উঠে দলের প্রয়োজনে ঠিকই মাঠে নামেন ডি পল। যদিও কোচ লিওনেল স্ক্যালোনি সেমিফাইনালের জন্য ঝুঁকিমুক্ত থাকতে ৬৬ মিনিটে তুলে নেন তাকে।
এরপর সেমিফাইনাল আর ফাইনালেও প্রথম একাদশে থাকেন ডি পল। দল আর মেসির প্রতি নিবেদনই ডি পলকে এখন বিশ্বকাপজয়ী মিডফিল্ডারের খেতাব এনে দিয়েছে। আর্জেন্টিনার সোনালি ফুটবল ইতিহাসেও নি:সন্দেহে ঠাই করে নেবেন তিনি।