আশৈশব একটা স্বপ্ন লালন করেছিলেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। রিয়াল মাদ্রিদের জার্সি গায়ে একদিন মাঠ মাতাবেন। গতবার লস ব্ল্যাঙ্কোসদের ঘাঁটিতে নামটা প্রায় লিখিয়েই ফেলেছিলেন। কিন্তু স্বপ্নপূরণের দ্বারপ্রান্তে এসে হঠাৎ একটা জট পাকিয়ে গেল।
প্যারিস সমর্থক, ক্লাব, এমনকি ফ্রান্স প্রেসিডেন্টের জোরাজুরিতে সেই স্বপ্ন আর পূরণ হল না। পিএসজি’র মায়াতেই আটকে থাকতে হল এমবাপ্পেকে।প্যারিসের হয়ে নতুন চুক্তি সেরে নিলেন। রিয়াল মাদ্রিদগামী ফ্লাইট আর ধরা হল না।
তারপরও বার্নাব্যুর ঘাসে পা রাখার স্বপ্নটা ছুটে গেল না। মাদ্রিদ সমর্থক থেকে শুরু করে বোর্ড এমবাপ্পের উপর বড্ড নাখোশ হল। কিন্তু এমবাপ্পে পরবর্তীতে নিজেকে আরো পরিণত জায়গায় নিয়ে গেলেন। কাতার বিশ্বকাপে গোল্ডেন বুট জিতলেন। পিএসজির ফ্রন্টম্যান হয়ে’ উঠলেন।
তারপরও কোথায় গিয়ে যেন একটা অসন্তুষ্টি এমবাপ্পের মাঝে বরাবরই ছিল। একই দলে মেসি, নেইমার থাকার কারণেই কিনা! নেইমারের সাথে সম্পর্ক নিয়ে জল ঘোলা হল। তাই, রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে আবারো খেলার ইচ্ছাটা প্রকাশ্যে না বললেও গুঞ্জনের ডালপালা মেলেছে বহুবার।
তবে নতুন ঘটনা হল, এমবাপ্পে নাকি শুধু একাই রিয়াল মাদ্রিদে নয়, সঙ্গে নিয়ে যেতে চান এক পিএসজি সতীর্থকে। এমবাপ্পের সেই সতীর্থ হচ্ছেন মরক্কান ফুটবলার আশরাফ হাকিমি। স্প্যানিশ গণমাধ্যম সূত্র জানাচ্ছে, এমবাপ্পে এর মধ্যেই রিয়াল মাদ্রিদেও যাওয়ার ব্যাপারে আবারো অগ্রসর হয়েছেন। সাথে নিতে চান বন্ধু আশরাফ হাকিমিকেও।
এমবাপ্পের সেই চাওয়া যে মাদ্রিদ বোর্ড লুফে নিতে চাইবে সেটা বলাই বাহুল্য। কারণ আশরাফি হাকিমি বেড়ে উঠেছেন রিয়াল মাদ্রিদ অ্যাকাডেমি থেকেই। ২০২০ সাল পর্যন্ত রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে খেলেছেন। তবে সে সময়ের হাকিমি এখনকার মত পরিণত ছিলেন না।
কিন্তু, সময় বদলেছে, বদলেছে মাদ্রিদের চেহারাও। লেফট ব্যাকের নিয়মিত মুখ দানি কারবাহাল কিংবা তাঁর বিকল্প লুকাস ভাস্কাজ মাদ্রিদের আস্থার প্রতিদান দিতে পারছেন না। আর এই মুহূর্তে অন্যতম সেরা লেফটব্যাক হচ্ছেন আশরাফ হাকিমি।
তর্কযোগ্যভাবে এখন সেরা স্ট্রাইকারের সাথে সেরা লেফট ব্যাককে পাওয়া- এ যেন সোনায় সোহাগা। এমন প্রস্তাব কোন ক্লাবই নাকচ করবে! রিয়াল মাদ্রিদও তাই এ দুই তারকাকে দলে ভেড়ানোর জন্য মুখিয়ে আছে।
কিন্তু সব চাওয়া তো আর সহজে মেলে না। এমবাপ্পে, আশরাফ হাকিমির ট্রান্সফারেও রয়েছে জটিলতা। কারণ দুজই পিএসজি’র সাথে ২০২৬ সাল পর্যন্ত চুক্তিবদ্ধ আছেন। সেই চুক্তি ভেঙে তাই দলবদল হওয়া তাই বেশ কঠিনই।
তার উপর পিএসজি যে তাদের দুই সেরা তারকাকে খুব সহজে ছেড়ে দিবে, সেটা ভাবনাতে আনাই ভুল। এমনিতে পিএসজি থেকে দলবদলের ইতিহাস খুব বেশি মধুর নয়। ফ্রান্সের এই ক্লাব থেকে কোনো তারকাকে অন্য ক্লাবে ভেড়ানো মানে রীতিমত যুদ্ধ করা। তাই মাদ্রিদের জন্য কাজটা মোটেই সহজ হওয়ার কথা নয়।