তামিমের রান আউট কতটা দৃষ্টিকটু?

শুরুটা মন্থর হলেও উদ্বোধনী জুটি তখন জমে উঠেছে। ৪২ রান উঠে গেছে কোনো উইকেট না হারিয়েই। দশম ওভারের শেষ ডেলিভারি। বোলিংয়ে আইরিশ পেসার গ্রাহাম হিউম।

লিটন কুমার দাসের কব্জির মোচড়ে ঘোরানো বলটা ফাইন লেগে থাকা ফিল্ডার মার্ক অ্যাডায়ারের কাছে যায়। লিটন ঠিক তখনই সিঙ্গেল নেওয়ার জন্য দৌঁড়ান, সাড়া দেন অপর প্রান্তে থাকা অধিনায়ক তামিম ইকবাল।

কিন্তু পারলেন না। পৌঁছানোর আগেই দেখা যায় বল আঘাত হাতে স্ট্যাম্পে। রাইট অন দ্য মানি! টেলিভিশন রিপ্লেতে যখন ডিরেক্ট হিট-টা দেখানো হচ্ছে,তামিম ইকবাল তখন ফ্রেমেও নেই।

পুরো রিপ্লে দেখে একটা বিষয় স্পষ্ট যে দ্রুত সিঙ্গেল নেওয়ার জন্য যে ক্ষীপ্রতার প্রয়োজন ছিল সেটা দেখাতে পারেননি ওয়ানডে অধিনায়ক। ব্যাপারটা তাঁর ফিটনেসের দিকে আঙুল তোলে।

দেখে মনে হয়ে, অর্ধেক পথ যেয়ে তিনি মেনেই নিয়েছেন, রানটা শেষ করা তাঁর পক্ষে সম্ভব হবে না। তাইতো, সরাসরি ফিল্ডারের হাতে যাওয়া বলটি সরাসরি থ্রোয়ে স্ট্যাম্প ভাঙার আগে শেষ চেষ্টাটুকুও করার প্রয়োজন বোধ করেননি তিনি।

ডাইভ দেননি তামিম। ডাইভ দিলেও হয়তো টিকতে পারতেন না। কারণ, রান নেওয়ার শুরু থেকেই তাঁর মধ্যে ওই ইনটেন্ট ছিল না। দেশের ইতিহাসের অন্যতম সেরা ব্যাটারকে এভাবে আউট হতে দেখাটা আসলেই দু:খজনক।

আরেকটা প্রশ্নও সাথে উঁকি দিয়ে যায়, তামিমের ফিটনেস কি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য মানানসই?

শুধু ফিটনেস নয়, ইদানিং তামিমের ব্যাটও হাসছে না। রান আউট হওয়ার আগে করেন ৩১ বলে ২৩ রান। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজেও তিনি রান পাননি। সর্বোচ্চ এক ম্যাচে ৩৫ রান করেছিলেন ইংলিশদের বিপক্ষে, মিরপুরে। পরিচিত কন্ডিশনে অনেকদিন বাদে দল সিরিজও হেরেছে।

এর আগে ইনজুরিতে ভারতের বিপক্ষে খেলেননি। গেল আগস্টে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই ম্যাচে দু’টো ফিফটি করলেও দল হেরেছে বাজেভাবে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এর আগের মাসে একটা হাফ সেঞ্চুরি করেন।

বড় দলের বিপক্ষে তাঁর বড় ইনিংস খেলার নজীরটা এখন থেকে এক বছর আগের। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তাঁদের মাটিতে ৮৭ রানে ছিলেন অপরাজিত। সর্বশেষ সেঞ্চুরি করেছেন ২০২১ সালের জুলাইয়ে, তাও আবার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। মানে প্রায় বছর দুই হল দলের ওপেনারের কোনো সেঞ্চুরি নেই।

মাস ছয়েক পর অনুষ্ঠিত হবে ওয়ানডে বিশ্বকাপ। একে তো ওয়ানডেই এখন অবধি বাংলাদেশ দলের সবচেয়ে পছন্দের ফরম্যাট। আর এবার বিশ্বকাপটা ভারতে অনুষ্ঠিত হবে বলে, অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে বাংলাদেশ দলের সুযোগটা বেশি। এই মুহূর্তে তাই তামিমের অফফর্ম বাংলাদেশের জন্য বড় দুশ্চিন্তার কারণ।

বিশ্বকাপের আগে আশার আলো দেখছে বাংলাদেশ। দারুণ ভাবে ফর্মে ফিরেছেন মুশফিকুর রহিম। এবার তামিম ইকবালও ফর্মে ফিরলেই হয়। আর এই ফেরার পথটা তামিমকেই খুঁজে বের করতে হবে।

লেখক পরিচিতি

সম্পাদক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link