সাকিব, বাংলাদেশের সৌভাগ্য

সপ্তাহে একদিন অনুশীলন করেন তো, তিনদিনই থাকেন তিনি কোনো বিজ্ঞাপনের শ্যুটিংয়ে বা কোনো পণ্যের প্রচারণায়। আইপিএল খেলার ছাড়পত্র পাবেন কি পাবেন না – সেই নিয়ে আলোচনা আছে। এছাড়া বিতর্ক তো তাঁর জীবনের নিত্য সঙ্গী। তাঁর সাথে আছে ছায়ার মত।

অবশ্য, এত শত বিষয়ের মাঝে সাকিব আজও সবচেয়ে বেশি পারদর্শী নিজের চিরায়ত কাজেই। এমনি এমনি তো তিনি আর বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার বনে যাননি। কেন মাঠের বাইরের সব আলোচনা মাঠে এসে নিমিষেই উড়ে যায় – তার যেন আদর্শ এক নমুনাই হয়ে থাকল আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি।

সাকিব এই ম্যাচে  সেই কাজটাই করেছেন – সেটা তিনি সবচেয়ে ভাল পারেন। ব্যাটে, বলে আর অধিনায়কত্বে – হয়ে উঠেছেন সত্যিকারের এক অলরাউন্ডার। ব্যাটিংটা করেছেন সবার সাথে তাল মিলিয়ে। ২৪ বলে ৩৮ রান করেছেন। তাতে মাত্র ১৭ ওভার ব্যাটিংয়ের সুযোগ পাওয়ার পরও বাংলাদেশ হেসে খেলে ২০০-রানের গণ্ডির বাইরে।

তবে, সাকিব এদিন চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে মূল কাজটা করেন ম্যাচের পরের অংশে। বোলার সাকিবই আসলে ম্যাচটায় চূড়ান্ত ভাবে ছিটকে দেন আইরিশদের। সাকিবের বোলিংয়ের সামনে যেন কোনো উত্তরই ছিল না সফরকারী ব্যাটারদের।

পাঁচবার প্রতিপক্ষের বুকে আঘাত হেনেছেন সাকিব। ২২ রান হজম করে নেন পাঁচটি উইকেট। বলাই বাহুল্য, এটাই টি-টোয়েন্টির আন্তর্জাতিক ফরম্যাটে সাকিবের সেরা বোলিং ফিগার। এখানেই শেষ নয়। আরেকটা কীর্তিও আছে সাকিবের। এই নিয়ে চতুর্থ বারের মত টি-টোয়েন্টিতে ম্যাচে ত্রিশোর্ধ্ব রান করার পাশাপাশি চার কিংবা তারও বেশি সংখ্যক উইকেট নিলেন সাকিব।

অথচ, দিব্যি ম্যাচ সেরার পুরস্কারটা ততক্ষণে লেখা হয়ে গিয়েছিল লিটন দাসের নামে। কিন্তু, কে জানত – ক্রিকেট বিধাতা ভেবে রেখেছিলেন অন্য কিছু। কিংবা সাকিবের নিজেরই পরিকল্পনা ছিল অন্যরকম। তাই তো লিটনের মোহনৗয় ব্যাটের ‍সুর ছাপিয়ে প্রবল হয়ে উঠল সাকিবের তাণ্ডবলীলা। তাই তো, এদিন আবারও ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় ওই একজনই – সাকিব আল হাসান।

সাকিব এখন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ৪৫১ টি উইকেটের মালিক। আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সেই সংখ্যাটা ১৩৬ উইকেট। এখানে তিনি সবার ওপরে। চট্টগ্রামেই ছাড়িয়ে গেলেন নিউজিল্যান্ডের পেসার টিম সাউদিকে।

তামিম ইকবাল আসলে ঠিকই বলেছেন, সাকিব আল হাসান সত্যিই খুব ভাগ্যবান। ভাগ্যবান কারণ তিনি বোলিং কিংবা ব্যাটিং – দুই জায়গাতেই অমিত কার্যকর। অবশ্যই তাকে দলের সেরা বোলার কিংবা ব্যাটারের কাতারে রাখাই যায়। আর এটাও ঠিক যে – এমন একজনকে দলে পাওয়াটাও সৌভাগ্যজনক। সাকিবকে পাওয়াটাও বাংলাদেশ দলের জন্য কম সৌভাগ্যজনক নয়।

লেখক পরিচিতি

সম্পাদক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link