একটা ঝড় বয়ে গেছে বাংলাদেশের ক্রিকেট পাড়ায়। সাকিব আল হাসান আর লিটন দাসকে ঘিরেই যার সূত্রপাত। মূলত ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) খেলতে যাওয়া নিয়ে ক্রমশ ছড়িয়েছে ঝড়। তবে সে ঝড় শান্ত হয়েছে। সাকিব আর লিটন দু’জনই নিজেদের জাতীয় দলের দায়িত্বে মন দিয়েছেন। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে একমাত্র টেস্ট খেলছেন দুইজন খেলোয়াড়ই।
এই নিয়ে ক্ষোভের উৎপত্তি হয়েছিল নানা মহলে। সেই উত্তেজনার আগুনে পানি ঢেলে দেওয়ার মত খবর হল, সাকিব এবার আইপিএলে কোন ম্যাচ খেলছেন না। সব ঝড়ের সমাপ্তিটা যেন এখানেই। পেছনের কারণ অবশ্য একটাই। জাতীয় দলের ব্যস্ত সূচি। তাইতো এবারের তাঁকে দেখা যাবে না বিশ্বের অন্যতম সেরা ফ্রাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টটিতে।
গেলবার দল না পাওয়া সাকিবকে এবার দলে ভিড়িয়েছিল কলকাতা নাইট রাইডার্স। নিজের পুরনো ডেরায় ফিরে যাওয়ার সূবর্ণ সুযোগটা হাতছাড়া হচ্ছে সাকিবের। নাইট রাইডার্সরা মূলত তাঁর বিকল্প খেলোয়াড়ের সন্ধান করতে চায়। ঠিক সে কারণে স্কোয়াড থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে সাকিব আল হাসানকে। আইপিল চলাকালীন বাংলাদেশের আয়ারল্যান্ড সিরিজ রয়েছে। আট এপ্রিল শেষ হওয়া টেস্ট ম্যাচের পর, আবার বাংলাদেশ উড়ে যাবে ইংল্যান্ডে।
ইংল্যান্ডে আগামী ৯ মে থেকে ১৪ মে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত হবে ওয়ানডে সিরিজ। ওয়ানডে লিগের সেই সিরিজে সাকিবকে ছাড়তে নারাজ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। সাকিবের অনাপত্তিপত্র নিয়ে ইতোমধ্যেই বেশ খানিকটা জল ঘোলা হলে গেছে। আর কোন নাটকীয়তায় যেতে চায়নি কলকাতা ফ্রাঞ্চাইজি। তাইতো সাকিবকে অনুরোধ করা হয় তাঁর চুক্তি বাতিল করার। যাতে করে ফ্রাঞ্চাইজিটি আরও একজন বিদেশি খেলোয়াড় ভেড়াতে পারে।
অবশ্য এদিক থেকে সাকিব চাইলেই বেগতিক পরিস্থিতিতে ফেলতে পারতেন কলকাতা ফ্রাঞ্চাইজিকে। কেননা সাকিবের চূক্তি অনুযায়ী তিনি জাতীয় দলের খেলা থাকাকালীন সময়ে উপস্থিত থাকবেন না আইপিএলে। এই বিষয়টি স্পষ্ট করেই উল্লেখ করা ছিল। যেহেতু নিলামের আগেই এসব বিষয়ে জানিয়ে দেওয়া হয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। সে মোতাবেক সাকিবের এই চুক্তি বাতিলে বড় রকমের ঝামেলা চাইলেই সৃষ্টি করা যেত। সাকিব তা করেননি।
কেননা কলকাতা নাইট রাইডার্সের সাথে সাকিবের সম্পর্ক বেশ লম্বা সময় ধরে। তিনি সে সম্পর্কের খাতিরেই ফ্রাঞ্চাইজিটিকে নিজেদের ঘাটতি পুষিয়ে নেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন। তাইতো এবারের আইপিএলে সাকিবকে দেখা যাবে না। তবে লিটন দাসের বিষয়ে এখন পর্যন্ত তেমন কোন নির্দেশনা আসেনি।
এদিকে সাকিবের আইপিএল যাত্রা থমকে যাওয়ায় লাভবান হয়েছে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশনের দল মোহামেডান। কেননা ডিপিএলের পুরোটা সময়জুড়ে তিনি সার্ভিস দিতে পারবেন কালো-সাদা শিবিরকে। সে বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করা হয়েছে মোহামেডান কর্তৃপক্ষ থেকে। তবে এই পুরো ঘটনাটা আইপিএলে বাংলাদেশি খেলোয়াড়দের দুয়ার খানিকটা অবরুদ্ধই করে দিল কিনা সে প্রশ্ন থেকেই যায়।