জেলায় জেলায় ‘মিনি বিসিবি’

সময়ের ব্যবধানে দেশের ক্রিকেট যতটা এগিয়েছে, ঠিক ততটাই যেন পিছিয়ে আঞ্চলিক ক্রিকেটের হালচাল। অবকাঠামোগত দুর্বলতা তো ছিল আগে থেকেই, সাম্প্রতিক বছর গুলোতে সেখান থেকে বরং আরো অবনতির দিকেই এগোচ্ছিল আঞ্চলিক ক্রিকেট।

তবে অবশেষে কিছুটা আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থা (আরসিএ)।  এবার আঞ্চলিক ক্রিকেটকে ঢেলে সাজানোর প্রক্রিয়ায় মনোযোগী হচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বিসিবি সূত্র জানাচ্ছে, আরসিএর ধারা বিসিবি’র নীতিমালায় সংমিশ্রণ করে আগামী ছয় মাসের মধ্যেই নির্দিষ্ট অঞ্চল গুলোতে নতুন কমিটি দেওয়া হবে।

বিসিবি’র প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী তরফ থেকে জানা গিয়েছে, পরিচালনা পর্ষদের পরবর্তী সভায় সংস্থাগুলোর কমিটি অনুমোদন করা হবে। প্রাথমিকভাবে পুরো প্রক্রিয়াটি বিসিবির অ্যাডহক কমিটি পরিচালনা করবে।

বিসিবি অবশ্য এরই মধ্যে তাদের কাজ শুরু করে দিয়েছে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী, বরিশাল, খুলনা ও রংপুর বিভাগ থেকে ১২ জন পরিচালক বিসিবির পরিচালনা পর্ষদে রয়েছেন। আর তাদের মাধ্যমেই মূলত এই বিভাগগুলোতে আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থার কমিটি গঠনের জন্য নাম চেয়েছে বিসিবি।

এর মধ্যে আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থার পূর্ণাঙ্গ একটি নীতিমালা প্রস্তুত করার পর্যায়ে আছে বিসিবি। আর সেই নীতিমালা মেনেই কমিটির সদস্যদের মনোনয়ন দেওয়া হবে। চূড়ান্তভাবে এ অ্যাডহক কমিটি অনুমোদন করবেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন।

এ নীতিমালা অনুযায়ী সাধারণ পরিষদ এবং উপদেষ্টা পরিষদ-দুটি স্তর রাখা হব। কার্যনির্বাহী কমিটি সংস্থা পরিচালিত হবে এই নীতিমালা মেনেই। কমিটির প্রধান হবেন একজন সভাপতি। তাঁর অধীনে থাকবেন একজন সিনিয়র সহসভাপতি, একজন সহসভাপতি, একজন সাধারণ সম্পাদক, একজন যুগ্ম-সম্পাদক, কোষাধক্ষ এবং অন্যান্য নির্বাচিত সদস্যরা।

এ ছাড়া আরসিএর অধীনে প্রতিটি জেলা ক্রীড়া সংস্থাগুলোতে একটি কমিটি থাকবে।  যেখানে বিধিমালা অনুযায়ী সাধারণ পরিষদ মনোনীত একটি প্রতীক থাকবে। তবে প্রতিটি আরসিএর সদর দপ্তর হতে হবে বিভাগীয় শহরে।

তবে, এখানে সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জ হবে বিসিবির নীতিমালা অনুযায়ী নিয়মিত লিগের আয়োজন করা। প্রতিটি জেলা বা বিভাগ থেকে ন্যূনতম একজন করে কাউন্সিলর নিতে হবে প্রথম শ্রেণির কিংবা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা সাবেক কোনো ক্রিকেটারকে। এই কাউন্সিলর অবশ্য নির্বাচিত হয়ে আসবে বিসিবি সভাপতির নির্দেশে। তবে ৭ সংস্থার কমিটিই যে সমান সদস্য নিয়ে হবে, তা নয়। ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থার কমিটি হবে ১৯ সদস্যের। আর বাকি চার সংস্থার কমিটি ১১ সদস্যের।

মূলত কিছু নির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনের লক্ষ্যেই বিসিবি’র এভারে আঞ্চলিক ক্রিকেটকে ঢেলে সাজানোর প্রতি আগ্রহ। এর মধ্যে তাদের অন্যতম লক্ষ্য হলো, প্রতিটি আঞ্চলিক সংস্থায় প্রশাসনিকভাবে মিনি বিসিবি গড়ে তোলা। এ ছাড়া আর্থিকভাবে সে সংস্থাকে সক্ষম করে গড়ে তোলার পাশাপাশি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ এবং বিসিবির অনুদানের বাইরে স্পন্সর থেকে আয় করার বাধ্যবাধকতা রাখা হয়েছে এ নীতিমালায়।

প্রসঙ্গত, আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থার নতুন পথচলার উদ্দেশ্য হবে- অঞ্চলভিত্তিক ক্রিকেটের প্রতিষ্ঠা, চর্চা, প্রচার, প্রসার, মানোন্নয়ন ও জনপ্রিয়করণ।

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link