কয়েক বছর আগেও ইনিংসের প্রথম ওভারে ব্যাটসম্যানদের লক্ষ্যটা থাকতো নিরাপদে ক্রিজে টিকে থাকা। কিন্তু সময়টা বদলেছে, বর্তমানে মারকাটারি টি-টোয়েন্টির যুগে ওপেনাররা মারমুখী ব্যাটিং শুরু করেন ইনিংসের প্রথম বল থেকেই। আসুন দেখে নেয়া যাক, আইপিএলের প্রথম ওভারে সবচেয়ে বেশি রান হজমকারী বোলারদের।
- আবু নেছিম (মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স)- ২৭ রান
২০১১ মৌসুমের দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের মুখোমুখি হয়েছিল রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু। টস জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়া মুম্বাইয়ের অধিনায়ক শচীন টেন্ডুলকার প্রথম ওভারের জন্য বল তুলে দেন ডানহাতি পেসার আবু নেছিমের হাতে।
প্রথম বলটাই লেগস্ট্যাম্পের অনেক বাইরে দিয়ে করেন এই পেসার। ওয়াইডের পাশাপাশি দৌঁড়ে অতিরিক্ত এক রানে প্রান্তবদল করেন ব্যাঙ্গালুরুর ওপেনার মায়াংক আগারওয়াল।
এরপরের দৃশ্য বোধহয় কারো কল্পনাতেও ছিল না, প্রথম বল থেকেই বিধ্বংসী ব্যাটিং শুরু করেন ক্রিস গেইল। তিন চার এবং এক ছক্কায় প্রথম ওভার থেকেই ব্যাঙ্গালুরু তুলে নেয় ২৭ রান। আইপিএল ইতিহাসে প্রথম ওভারে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড এটাই।
- হরভজন সিং (মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স)- ২৬ রান
২০১৩ আইপিএলে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বিপক্ষে ম্যাচে সবাইকে অবাক করে দিয়ে গৌতম গম্ভীরের সাথে ইনিংস উদ্বোধন করতে নামেন ইউসুফ পাঠান। ক্রিজে নেমেই রুদ্রমূর্তি ধারণ করেন এই বিধ্বংসী ব্যাটার।
প্রথম চার বল থেকেই তিন চার এবং এক ছক্কায় তুলে নেন ১৮ রান। এরপর নো বলে প্রান্তবদল করলে গৌতম গম্ভীর ছন্দটা ধরে রাখেন।
তিনিও মুখোমুখি হওয়া প্রথম বলটাই পাঠান সীমানার ওপারে। শেষ বলে কোনো রান না আসলেও সেই ওভার থেকে কলকাতার প্রাপ্তিটা মন্দ ছিল না, মোট ২৬ রান তুলে নেন সেই ওভার থেকে।
- নিতীশ রানা (কলকাতা নাইট রাইডার্স)- ২৬ রান
কলকাতার অধিনায়ক নিতীশ রানার বোলার হিসেবে তেমন সুখ্যাতি নেই। রাজস্থান রয়্যালসের বিপক্ষে প্রথম ওভারেই তাঁর বোলিংয়ে আসার পেছনে যুক্তিটা ছিল ফর্মে থাকা যশস্বী জয়সওয়ালকে খানিকটা চমকে দেয়া। কিন্তু এরপরের ঘটনা বোধহয় ভুলেই যেতে চাইবেন রানা।
রানার প্রথম দুইটি বলই সোজা গ্যালারীতে পাঠান জয়সওয়াল। এরপরও থামেনি ঝড়, পরের চার বল থেকে তিন চারে তুলে নেন ১৪ রান। শেষ পর্যন্ত সেই ওভারে রানা হজম করেছিলেন ২৬ রান। শুরুর ছন্দটা ধরে রেখে রাজস্থানও ম্যাচটা জিতে গিয়েছিল।
- শিভাম মাভি (কলকাতা নাইট রাইডার্স)- ২৫ রান
২০২১ মৌসুমে সেবার দিল্লী ক্যাপিটালসের বিপক্ষে শুরুতে ব্যাট করে মাঝারি মানের এক সংগ্রহ দাঁড় করিয়েছিল কলকাতা নাইট রাইডার্স। বোলিংয়ে নেমে দলটির লক্ষ্য ছিল শুরুতে উইকেট তুলে নিয়ে প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলা।
কিন্তু দিল্লীর ওপেনার পৃথ্বী শ’র যেন অন্য পরিকল্পনা ছিল। প্রথম বল থেকেই তিনি চড়াও হন বোলার শিভাম মাভির উপর। প্রথম বলটা ওয়াইড হবার পর টানা ছয়টি বাউন্ডারি হাঁকান এই তরুণ ওপেনার। প্রথম ওভারেই ২৫ রান তুলে সেদিন সহজ জয় পেয়েছিল দিল্লী।
- বরুণ অ্যারন (রাজস্থান রয়্যালস)- ২৩ রান
রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর বিপক্ষে সেই ওভারটা বোধহয় ভুলেই যেতে চাইবেন রাজস্থান রয়্যালসের পেসার বরুণ অ্যারন। এমনিতেই খরুচে হিসেবে ‘সুখ্যাতি’ আছে এই পেসারের। দুই ওপেনার বিরাট কোহলি এবং এবি ডি ভিলিয়ার্স তাই সুযোগটা নিয়েছিলেন দুহাত ভরে।
বৃষ্টিতে পাঁচ ওভারে নেমে আসার ম্যাচের প্রথম দুই বলেই ছক্কা হাঁকান বিরাট কোহলি। এরপর প্রান্তবদল করলেও ছন্দটা ধরে রাখেন এবি ডি ভিলিয়ার্স।
দুই চার এবং ডাবলসে সেই ওভার থেকে মোট ২৩ রান তুলে নেন এই তারকা। যদিও বৃষ্টির কারণে ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়।