সবাই বিশ্বকাপের স্কোয়াড নিয়ে নানান কাঁটাছেড়ায় ব্যস্ত। বিশ্বকাপের বছরটা অন্তত সেভাবেই কাটা উচিত। তবে বাংলাদেশ জাতীয় দলের যে কেবল একটি ফরম্যাট নিয়ে ভাবার অবকাশ নেই। এই তো সামনের মাসেই আফগানিস্তান আসবে, তিন ফরম্যাটের সিরিজ খেলতে। সেই প্রস্তুতিই সেরে নিচ্ছেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও তামিম ইকবাল।
বাংলাদেশের টেস্ট দলের বর্তমানে ওপেনিংয়ের দায়িত্বটা তামিম আর শান্তর কাঁধেই ন্যাস্ত। এই দুইজনকে লাল বলে বাংলাদেশকে এনে দিতে হবে শুভ সূচনা। সেই সূচনার সন্ধানেই যেন নেট অনুশীলনে ভীষণ ব্যস্ত এই দুই বাঁ-হাতি ব্যাটার। লাল বলটার সাথে আরেকটু সখ্যতা গড়ে নেওয়ার প্রচেষ্টা।
সাদা বলের ক্রিকেটে অবশেষে নিজের খোলস ছেড়ে বেড়িয়ে আসতে শুরু করেছেন শান্ত। বহুল প্রতিক্ষিত কার্যকর ইনিংসের ডালা শেষমেশ খুলেই বসেছেন শান্ত। একটা লম্বা সময় ধরে তার পেছনে সময় ও অর্থ বিনিয়োগের সুফলটা পেতে শুরু করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট।
নিজের চলমান এই দুর্দান্ত ফর্মটা নিশ্চয়ই সাদা বলের ক্রিকেটেও অব্যাহত রাখতে মরিয়া শান্ত। নিজেকে তাই ঝালিয়ে নেওয়ার প্রচেষ্টা। ঐচ্ছিক অনুশীলনে তিনি হাজির তাই হোম অব ক্রিকেটে। সাথে সঙ্গী হিসেবে পেয়েছেন ওপেনিং সঙ্গী তামিম ইকবালকে।
নাজমুল শান্ত যখন আকাশের উড়তে শুরু করেছেন ঠিক তখনই যেন দিক হারিয়ে খানিকটা চিন্তার উদ্রেক ঘটাচ্ছেন তামিম ইকবাল। লম্বা একটা সময় ধরে বাংলাদেশের ওপেনিং পজিশনের ধ্রুব সত্য হয়ে ছিলেন তামিম ইকবাল। টেস্ট, ওয়ানডে কিংবা টি-টোয়েন্টি সব ফরম্যাটেই তামিমকে একপাশে রেখে অন্যপ্রান্তে তামিমের সঙ্গী খুঁজতে হয়েছে।
তবে সময়ের পরিক্রমায় সবকিছুই ক্ষয়ে ক্ষয়ে যায়। তামিমের বর্তমান পরিস্থিতিও যেন তেমনই। তিনি নিজেকে হারিয়ে খুঁজছেন। আস্থাভাজন তামিমের দেখা মেলে না বহুদিন। প্রায় বছর খানেক আগে টেস্ট ক্রিকেটে সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। এর পরবর্তী সময়ে প্রথমত তার ব্যাটে রান খরা। দ্বিতীয়ত দলের চাহিদা মিটিয়ে ব্যাট করতে পারছেন কিনা, এমন প্রশ্ন উঠছে বার বার।
তামিম নিজেও অন্তত সেটাই আন্দাজ করতে পারেন। তিনিও হয়ত বুঝতে পারেন যে দলের প্রতি তার দায়িত্ব অন্য সবার থেকে এক ছটাক পরিমাণ হলেও বেশি। সেই তাড়না থেকেই হয়ত তিনিও হাজির হয়েছেন সকাল সকাল। সতীর্থ শান্তকে নিয়ে চালিয়ে গেছেন অনুশীলন।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে ১৪ জুন মাঠে নামবে টাইগাররা। মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে কঠিন পরীক্ষাই দিতে হবে তামিম-শান্তদের। মিরপুরের স্পিন বান্ধব উইকেটে আফগান রিস্ট স্পিনারদের সামলানো মোটেও সহজ হবে না।
এর আগে আফগানিস্তানের সাথে মুখোমুখি হওয়া একমাত্র টেস্টেও হেরেছিল বাংলাদেশ। সে ম্যাচে আফগান স্পিনারদের ঘূর্ণিপাকে পিষ্ঠ হয়েছে বাংলাদেশের গোটা ব্যাটিং লাইনআপ। ২০১৯ সালে চট্টগ্রামে হওয়া সেই টেস্টে দলে ছিলেন না তামিম কিংবা শান্ত কেউই। তাইতো এবার সেই বাজে স্মৃতির উপর দুর্দান্ত এক টেস্ট ম্যাচের প্রলেপ লেপে দিতে চাইবেন শান্ত ও তামিম।
টেস্ট ক্রিকেটে নবাগত আফগানিস্তানের বিপক্ষে আরও একটি বিষাদময় স্মৃতি জড়ো করবার বিন্দুমাত্র ইচ্ছেও থাকার কথা নয় টাইগারদের। আর তাইতো হাল ধরার সম্পূর্ণ প্রস্তুতিই সেরে নিচ্ছেন তামিম ইকবাল ও নাজমুল হোসেন শান্ত।