২০২৩ সালটা শুভমান গিলের বছর বললেও হয়তো খুব বেশি ভুল বলা হবে না। অনেকটা আলাদিনের চেরাগ নিয়েই যেন বছরটা শুরু করেছেন গিল। সর্ব কনিষ্ঠ ব্যাটার হিসেবে ওয়ানডেতে ডাবল সেঞ্চুরি থেকে শুরু করে আইপিলের এক মৌসুমে দ্বিতীয় ভারতীয় হিসেবে আটশোর বেশি রান ; মাত্র ২৩ বছর বয়সেই একের পর এক রেকর্ড গড়ে চলেছেন ‘ভারতীয় ব্যাটিংয়ের নতুন রাজপুত্র’ শুভমান গিল।
শুভমান গিল যেন ব্যাট হাতে যা যা করতে চাইছেন তার সবই করতে পারছেন অনায়াসেই। এই যেমন দ্বিতীয় কোলিফায়ারে ক্রিকেটের বেসিক সব শটের পাশাপাশি খেলেছেন অবিশ্বাস্য সব শট। শুভমানের এমন ব্যাটিং দেখে তাকে ভবিষ্যতের ভারতীয় ব্যাটিংয়ের নেতাও বলে ফেলেছেন অনেকে। তবে ঠিক এখানেই আশংকার জায়গাও দেখছেন ভারতীয় কিংবদন্তি কপিল দেব।
ভারতের প্রথম বিশ্বকাপজয়ী এই অধিনায়কের আশংকা শুভমান না আবার বিনোদ কাম্বলি হয়ে যান। অমিত সম্ভাবনা নিয়ে ভারতীয় ক্রিকেটে এসেছিলেন বিনোদ কাম্বলি। শচীন টেন্ডুলকারর চেয়েও একটা সময় বেশি প্রতিভাধর মনে করা হতো কাম্বলিকে।
তাকে নিয়েও ভারতীয় গণমাধ্যম ও সাধারণ মানুষের মধ্যে মাতামাতি কম হয়নি। তবে নিজের অমিত সম্ভাবনা নষ্ট করতেও সময় নেননি বিনোদ। অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনে অঙ্কুরেই নষ্ট হয়েছে বিরাট এক সম্ভাবনা।
কপিল দেবের তাই ভয়, বিনোদ কাম্বলি হয়ে ক্যারিয়ারের সম্ভাবনা যেন নষ্ট না করেন শুভমান। কপিল বলেন, ‘আমাকে ভুল বুঝবেন না।শুভমানের প্রতিভা নিয়ে আমার কোনো সংশয় নেই। কিন্তু কোনো তুলনা না করেই বলছি বিনোদ কাম্বলির কথা। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শুভমানের চেয়েও ভালো শুরু করেছিল কাম্বলি। শুভমানের সামনে এখন একটাই শংকা, সে এই সাফল্য কীভাবে সামলায়।’
ভবিষ্যতের তারকা উপাধি দেবার আগে আরো কিছুটা অপেক্ষা করতে চান কপিল, ‘সুনীল গাভাস্করের পর এল শচীন, দ্রাবিড়, লক্ষ্মণ, শেবাগ। সেই যুগ শেষে এসেছে বিরাট কোহলি। এখন শুভমান যেভাবে ব্যাট করছে, তাতে মনে হচ্ছে আগামী দিনে সে এই তালিকায় যুক্ত হবে। তবে কোনো মন্তব্য করার আগে আমি আরও একটা মৌসুম অপেক্ষা করতে চাই। শুভমানের প্রতিভা আছে।’
অনেক ক্রিকেটারই প্রথমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এসে সাফল্য পান। তবে আধুনিক ক্রিকেটে সেই নির্দিষ্ট ব্যাটার বা বোলারের দুর্বলতা খুঁজে পেতেও খুব বেশি সময় নেয় না প্রতিপক্ষ।
প্রতিপক্ষ দুর্বলতা খুঁজে পাবার পরেও অনেক ক্রিকেটার নিজেকে ভেঙেচুড়ে নতুন ভাবে গড়ে সফল হন। কপিল তাই আরো একটা মৌসুম অপেক্ষা করতে চান শুভমানের ব্যাপারে মন্তব্য করার আগে।
তিনি বলেন, ‘আরও একটা মৌসুম তাঁকে এভাবে খেলতে হবে। তারপর তাকে আগামী দিনের গাভাস্কার কিংবা শচীন কিংবা কোহলি বলা যাবে। শুভমানের দুর্বলতা বের করতে বোলাররা আরও এক-দুই মৌসুম সময় নেবে। কিন্তু পর পর তিন-চার মৌসুম একইভাবে খেললে শুভমানকে বড় ক্রিকেটার বলা যাবে।’