রিয়ালেই ক্যারিয়ার শেষ করতে চেয়েছিলেন বেনজেমা

১৪ বছরের বর্ণাঢ্য এক ক্যারিয়ার। ক্লাবের হয়ে সম্ভাব্য সব শিরোপাই জেতা হয়েছে। পর্তুগীজ যুবরাজ ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর বিদায়ের পর একা হাতেই দলকে টেনেছেন। রিয়াল মাদ্রিদকে কক্ষচ্যুত হতে দেননি মোটেও। রিয়ালের হয়ে দুর্দান্ত পারফর্ম করে জিতেছেন ব্যালন ডি অর। এমন রঙিন ক্যারিয়ার যার সেই করিম বেনজেমার বিদায়টা হলো অনেকগা সাদামাটা ভাবেই।

সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতেই ক্যারিয়ার শেষ করার পরিকল্পনা ছিলো এই ফরাসি তারকার। কিন্তু শেষমেষ সেটি হলো না। ৩৫ বছর বয়সেই ইউরোপে নিজের ক্যারিয়ারের ইতি টেনে সৌদি আরবের ক্লাব আল ইত্তিহাদে যোগ দিয়েছেন করিম।

২০০৯ সালে বার্নাব্যুতে আসার পর ১৪ বছরের দারুণ এক ক্যারিয়ারই শেষ করেছেন বেনজেমা। রিয়াল আর বেনজেমার ১৪ বছরের সম্পর্কের ইতি ঘটার সময় বেনজেমাকে বিদায় জানিয়েছেন রিয়াল সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ নিজেই।

রবিবার অ্যাটলেটিক ক্লাবের সাথে রিয়ালের জার্সিতে নিজের শেষ ম্যাচ খেলার পরই সবার কাছ থেকে বিদায় নেন বেনজেমা। রিয়ালের জন্য বেনজেমার এই অবদানের জন্য তাকে ধন্যবাদ জানান পেরেজ। টগবগে এক তরুণ হিসেবে ২০০৯ সালে রিয়ালে যোগ দেবার ১৪ বছর পর রিয়াল মাদ্রিদের কিংবদন্তি হিসেবেই ক্লাবকে বিদায় বলেছেন বেনজেমা।

১৪ বছর ধরেই বেনজেমার সাথে দারুণ সম্পর্ক পেরেজের। অন্যান্য সময় আবেগ খুব বেশি একটা প্রকাশ না করলেও বেনজেমার বিদায়ে কিছুটা হলেও আবেগী ছিলেন পেরেজ। বেনজেমাকে বলেন, ‘তুমি ইতোমধ্যেই রিয়ালের জন্য অমর।’

বিদায়ের সময় ক্লাবের সবার উদ্দেশ্যে বেনজেমা বলেন, ‘রিয়াল মাদ্রিদকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আমার জীবনে এটি দারুণ একটা সময় ছিলো। আমি ভাগ্যবান যে ছোটবেলায় যে স্বপ্ন দেখেছিলাম তা পূরণ করতে পেরেছি। সভাপতিকে ধন্যবাদ। যখন আমি তাকে দেখেছিলাম তখন বলেছিলাম, এই মানুষটাই রোনালদো ও জিদানকে ক্লাবে এনেছিলো। সে অসাধারণ।’

বিদায়ের মুহূর্তে কিছুটা আবেগী ছিলেন ৩৫ বছর বয়সী এই স্ট্রাইকার, ‘আজ সময় এসেছে চলে যাবার এবং অন্য একটি গল্প লেখার। আমার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো আমি এখানে যা যা জিতেছি তার সবই আমি একটা বাচ্চার মত উপভোগ করেছি। যেমনটা আমি প্রেজেন্টেশনের সময় বললাম, আলা মাদ্রিদ।’

রিয়ালের দারুণ এক ক্যারিয়ারের জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানান করিম, ‘আনচেলত্তিকে ধন্যবাদ, যে আমাকে শুরু থেকেই আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছে। আমি আপনার কাছ থেকে অনেক কিছুই শিখেছি। এটা আমার জন্য কিছুটা কষ্টের যে আমাকে ক্লাব ছাড়তে হচ্ছে। আমার সকল ভক্তদেরও ধন্যবাদ আমাকে শক্তি যোগানোর জন্য। সত্তিকার অর্থেই সবাইকে ধন্যবাদ।’

বিদায় নেবার সময় ক্লাব ইতিহাসে কিংবদন্তি হিসেবেই বিদায় নিচ্ছেন এই ফরাসি তারকা। ক্লাবের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতাও বেনজেমা। তবে শুধু পরিসংখ্যানে নয়, রোনালদো, রামোসদের বিদায়ের পর বেনজেমা যেভাবে ক্লাবকে টেনেছেন তাতে ক্লাবের সমর্থকদের মনে জায়গা করে নিয়েছেন চিরদিনের মত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link