‘টোপ ফেলে মাছ ধরেন’ এবাদত

দেড় সেশনেই কুপোকাত আফগানিস্তানের ব্যাটিং ইউনিট। এর পেছনের সবচেয়ে বড় অবদানটা রেখেছে বাংলাদেশের পেসাররা। আলাদা করে এবাদতের নামটা উল্লেখ না করবার কোন উপায় নেই। গুণে গুণে চার খানা উইকেট পকেটের পুরেছেন ডান-হাতি এই পেসার। প্রতিটা প্রতিপক্ষ ব্যাটারকে তার বিপক্ষে পার করতে হয়েছে কঠিন সময়।

পাঁচ উইকেট পেতেই পারতেন। চা-বিরতির পর বাংলাদেশের অধিনায়ক এবাদতের হাতে বল তুলে দেননি। কারণটা স্লো ওভার রেটের কারণে হওয়া জরিমানা। সেই ওভার রেট পুষিয়ে নিতেই লিটন দাস দু-প্রান্ত থেকেই স্পিনারদের অ্যাটাকে আনেন। আর তিন ওভারের মাঝেই সাজঘরে আফগানদের শেষের দুই ব্যাটার।

তবে পাঁচ উইকেট পাওয়ায় আফসোস নেই এবাদতের। তার কাছে দলই বড়। তিনি বলেন, ‘আমার ব্যক্তিগত অর্জনের থেকে দলের অর্জনই বড় জিনিস।’

এরপরই তিনি অধিনায়কের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা দুই ওভার পেছনে ছিলাম। আমরা যদি পিছিয়ে থাকি তাহলে, জরিমানার একটা বিষয় আছে। অধিনায়ক বলেছে ”আমি চা-বিরতির পর দুই পাশ থেকে দুইজন স্পিনার দিয়ে শুরু করব।’

এতে অবশ্য বিন্দুমাত্র আফসোস নেই এবাদত হোসেনের। বরং তিনি বেশ উৎফুল্ল ঘরের মাঠে এমন উইকেটে খেলতে পেরে। এইবারই প্রথম ঘরের মাঠে এমন বাউন্সি উইকেটের দেখা পেয়েছে বাংলাদেশের পেসাররা। আর সে বাউন্সটাই কাজে লাগিয়ে উইকেট বাগিয়েছেন এবাদত হোসেন।

এ বিষয়ে এবাদত বলেন, ‘আমি যে উইকেটগুলো পেয়েছি সেগুলো কিন্তু একনাগাড়ে বাউন্স করার ফলে না। আমি সেটআপ করেছি ব্যাটসম্যানকে সামনে বল করে করে। পরে সারপ্রাইজ বাউন্স দিয়ে। যে জিনিসটা হচ্ছে যে, ইনসুইং, আউটসুইং, বাউন্সার আগে ওভারে দুই তিনটা করতাম।’

আগে হয়ত এক ওভারেই নিজের ঝুলিতে থাকা সব অস্ত্রের ব্যবহার করে ফেলতেন এবাদত হোসেন। তবে সেই পদ্ধতি থেকে বেড়িয়ে আসতে শুরু করেছেন এবাদত। এখন ব্যাটারের জন্য প্লট সাজিয়ে তবেই চমকে দেওয়ার কাজগুলো করে যাচ্ছেন। যদিও উইকেটের প্রশংসা করতে একটুও দ্বিধা করেননি এবাদত। তার দেখা অন্যতম সেরা এবং প্রথম পেস সহায়ক উইকেট ঘরের মাঠে।

উইকেট নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার দেখা বাংলাদেশে এই প্রথম যে এরকম উইকেট (বাউন্সি উইকেট) পেয়েছি। তিনজন ফাস্ট বোলার এরকম একটা উইকেটে খেলাটা সৌভাগ্যের। আমরা চেষ্টা করেছি যে পরিকল্পনা করে ওদেরকে যত কম রানে আউট করা যায়। আসলে পরিকল্পনাটা কার্যকর করতে পেরেছি।’

সব সময় পরিকল্পনাই সব নয়। মাঝে মধ্যে পারিপার্শ্বিক বহু কিছু প্রভাবক হিসেবে কাজ করে একজন খেলোয়াড়ের সফলতায়। যেমনটা দ্বিতীয় দিনে এবাদত পেয়েছেন উইকেট থেকে।

তিনি বলেন, ‘বাউন্স তো আমরা পরিকল্পনা করে কিছু করতে পারব না। বাড়তি বাউন্স তো আমরা উইকেট থেকে পেয়েছি। যেহেতু উইকেটে বাউন্স আছে পেস আছে, আমরা সেটাই শুধু ব্যবহার করবার চেষ্টা করেছি।’

দিনের শুরুর মেঘলা আকাশের গুমোট আবহাওয়া ছড়িয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশের ড্রেসিংরুমেও। তবে সেই আবহাওয়া যেন এক লহমায় উধাও করে দিয়েছেন এবাদত হোসেন, শরিফুল ইসলামরা। শেষ বেলায় আকাশ পরিষ্কার হয়েছে। আর বাংলাদেশের হয়ে উজ্জ্বলতা ছড়িয়েছেন জাকির হাসান ও নাজমুল হোসেন শান্ত।

উইকেট বোলারদের সাহায্য করেছে। আর ব্যাটাররা সেই ধারণা থেকেই নিজেদের পোক্ত করেছেন বাইশ গজে। ম্যাচটা চলে গেছে আফগানিস্তানের নাগালের বাইরে। সে কথা অন্তত বলে দেওয়াই যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link