যেন সব নাটকের সমাপ্তি হলো এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি) এক বিবৃতিতেই। আগামী ৩১ আগস্ট থেকে ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছয় দেশ নিয়ে মাঠে গড়াবে এশিয়া কাপ। অথচ এ এশিয়া কাপ ইস্যুতে ভারত-পাকিস্তান মধ্যকার ছোটখাটো এক যুদ্ধই দেখেছে ক্রিকেট বিশ্ব।
পাকিস্তানে গিয়ে ভারতের খেলতে না চাওয়া, সেই বৈপরীত্যে পাকিস্তানের ভারতে বিশ্বকাপ বয়কটের হুমকি দেওয়া— সব মিলিয়ে অনেক দিন ধরে এক ধরনের অস্থিরতা লেগেই ছিল। তবে অবশেষে দুই দেশ সকল বৈরিতা ভুলে সহাবস্থানে গিয়ে এশিয়া কাপ মাঠে গড়াতে যাচ্ছে। পাকিস্তানের প্রস্তাবিত হাইব্রিড মডেলেই হচ্ছে এশিয়া কাপ।
এসিসির এমন সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) চেয়ারম্যান নাজাম শেঠি। যদিও পাকিস্তানের মাটিতে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ না হওয়ায় কিছুটা আক্ষেপ ঝরেছে তাঁর কণ্ঠে।
এ নিয়ে তিনি বলেন, ‘গত ১৫ বছর ধরে পাকিস্তানের ক্রিকেটপ্রিয় মানুষ নিজেদের দেশে ভারতের সাথে ম্যাচ দেখতে চায়। আমরা আয়োজক হওয়ায় সেটি নিয়ে আশাবাদীও ছিলাম। কিন্তু সেটি হচ্ছে না। তবে বিসিসিআইয়ের অবস্থানটা আমরা বুঝতে পারছি। তাদের আসলে পাকিস্তানে আসার ক্ষেত্রে অনেক জটিলতা রয়েছে। ভারত সরকার থেকে অনেক বাধ্যবাধকতাও আছে।’
ক্রিকেট পাকিস্তানকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পিসিবির এ বোর্ড প্রধান আরো বলেন, ‘আমি প্রথম থেকেই হাইব্রিড মডেলের প্রস্তাব দিয়ে এসেছি। কিছুটা সময় নিয়ে হলেও এসিসি সেই পথে হেঁটেছে। এজন্য আমি তাঁদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
তবে পাকিস্তান এখন ক্রিকেটের জন্য বেশ নিরাপদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল) সকল ভাবে আয়োজন করেছি। আসলে আমরা পুরো বিশ্বকে আমাদের ক্রিকেট খেলার আবহটা দেখাতে চাই। এশিয়া কাপকে নিয়ে আমাদের তেমন ভাবনাই ছিল। তবে এবার পুরোপুরি না হলেও আগামী ২০২৫ সালে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি আয়োজন করে সেটি দেখাতে চাই।’
বিসিসিআই সচিব জয় শাহ্র সাথে সাম্প্রতিককালে মুখোমুখি অবস্থানে থাকলেও সেই বন্ধুরতা ভুলে নাজামি শেঠি ঠিকই তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘জয় শাহ এশিয়া কাপ মাঠে গড়ানোর জন্য যা করেছেন তা দুর্দান্ত। আশা করছি, ভবিষ্যতে আমরা একসাথে কাজ করতে পারব। এশিয়ার ক্রিকেটকে উন্নতির পথে নিয়ে যাওয়ার জন্য যা করা লাগে তাই করব।’
প্রসঙ্গত, পাকিস্তান আসন্ন এশিয়া কাপের মূল আয়োজক হলেও সিংহভাগ ম্যাচই হবে নিরপেক্ষে ভেন্যু শ্রীলঙ্কায়. টুর্নামেন্টে মোট ১৩টি ম্যাচের মধ্যে শ্রীলঙ্কায় হবে নয়টি ম্যাচ। বাকি চারটি ম্যাচ হবে পাকিস্তানে। বলে রাখা ভালো, হাইব্রিড মডেলের এ টুর্নামেন্ট আয়োজনের মধ্য দিয়ে ২০০৮ পর একাধিক দেশের আয়োজনে মাঠে গড়াবে এবারের এশিয়া কাপ।