সেই শান্ত এখন ‘মিস্টার কন্সিসটেন্ট’

পাহাড় সম সমালোচনা। সেটা টপকে কিভাবে যেতে হয়, তাই যেন শেখাচ্ছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। পাহাড় চড়া বেশ আনন্দের। পাহাড়ের উঁচুতে উঠে দেখা যায় পুরো বিস্তৃর্ণ ভূমি। সে অনুভূতিই যেন এখন দোলা দিয়ে যাচ্ছে শান্তকে। তিনি যেন সমালোচকদের তৈরি করে দেওয়া পাহাড় চূড়ায় বসে দেখছেন নিজের বিস্তৃত হওয়া ক্যারিয়ার।

পাহাড় সম সমালোচনা। সেটা টপকে কিভাবে যেতে হয়, তাই যেন শেখাচ্ছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। পাহাড় চড়া বেশ আনন্দের। পাহাড়ের উঁচুতে উঠে দেখা যায় পুরো বিস্তৃর্ণ ভূমি। সে অনুভূতিই যেন এখন দোলা দিয়ে যাচ্ছে শান্তকে। তিনি যেন সমালোচকদের তৈরি করে দেওয়া পাহাড় চূড়ায় বসে দেখছেন নিজের বিস্তৃত হওয়া ক্যারিয়ার।

ক্যারিয়ারের শুরুর তিন বছর, ব্যাটে ছিল না রান। সবার নিন্দার প্রধান বিষয়ে পরিণত হন নাজমুল হোসেন শান্ত। সবকিছু পেছনে ফেলে নিজেকে নিয়ে ভেবেছেন তিনি। আর হয়ত বিধাতার কাছে প্রার্থনা করেছেন সময় বদলে দেওয়ার। সময় বদলে গেছে। শান্ত আজ হাজির রানের পসরা সাজিয়ে।

মাসখানেকে ব্যবধানে তিনটি আন্তর্জাতিক শতক। একটি ইংল্যান্ডের মাটিতে, ওয়ানডে ক্রিকেটে। বৈরি কন্ডিশনে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে উড়ন্ত চুমু এঁকেছিলেন দিগন্তের ক্যানভাসে। সেই একই চিত্রের পুনরাবৃত্তি তিনি করলেন ঘরের মাঠে। তাও আবার দু’বার।

একই টেস্টের দুইটি ইনিংসেই তার ব্যাট থেকে এলো শতক। আফগানিস্তানের বোলারদের সকল পরিকল্পনা একাই ধসিয়ে দিয়েছেন তিনি। প্রথম ইনিংসে তার করা ১৪৬ রানের অনবদ্য ইনিংসটিতে ভর করেই তো বাংলাদেশ পেয়েছিল স্বস্তি। ইনিংস মেরামত থেকে শুরু করে একটা ভাল সংগ্রহ এনে দিয়েছিলেন তিনি। সঙ্গ অবশ্য দিয়েছিলেন মাহমুদুল হাসান জয়।

দ্বিতীয় ইনিংসে আবারও শান্তর ব্যাটে রান ফোয়ারা। ধারাবাহিকতার উৎকৃষ্ট উদাহরণ হওয়ার যেন তীব্র তৃষ্ণা তার। নিজের এই দারুণ সময়টার সবটুকু দু’হাতে লুফে নেওয়ার প্রচণ্ড ক্ষুধা। তাইতো ধারাভাষ্যকক্ষে থাকা আতাহার আলী খান তাকে উপাধি দিয়ে দিলেন, ‘মিস্টার কন্সিসটেন্ট’।

হাসমতউল্লাহ শাহিদির করা বলটা স্কয়ার লেগে ঠেলে দিয়ে এক রান যখন নিলেন শান্ত,তখন তিনি জায়গা করে নিলেন ইতিহাসের পাতায়। বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটের রেকর্ড বইয়ে প্রায় ফাঁকা থাকা এক পাতায় লেখা হয়ে গেল, নাজমুল হোসেন শান্তর নাম। বাংলাদেশের হয়ে টেস্টের টানা দুই ইনিংসে সেঞ্চুরির রেকর্ড তো বেশ বিরল। কেবলমাত্র মুমিনুল হক রয়েছেন শান্তর উপরে, কিংবা আগে।

২০১৮ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চট্টগ্রামের মাটিতে সেই রেকর্ড গড়েছিলেন মুমিনুল হক। প্রথম ইনিংসে ১৭৬ এর পর দ্বিতীয় ইনিংসে ১০৫ রানে অপরাজিত ছিলেন মুমিনুল। সেই মুমিনুলকে সাথে নিয়েই শান্ত এবার গড়ে দেখালেন এই কীর্তি। তিনি যখন শূন্য ভেসে উড়ন্ত চুমু এঁকে দিতে ব্যস্ত, তখন মুমিনুল যেন স্মিত এক হাসিতেই জানালেন অভিবাদন।

প্রায় দুই যুগ বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটের যাত্রা। এই দুই যুগে কেবল দু’জন যে করতে পেরেছেন দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি। এ রেকর্ড তো বাংলাদেশের জন্যে বেশ অপরিচিত। এমন দৃশ্যের সাথে তো বাংলাদেশের মানুষ নয় পূর্ব পরিচিত।

তবে সমালোচনার টপকে যাওয়া শান্ত তো নিশ্চয়ই এখানেই থেমে থাকবেন না। এক টেস্টে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ রানটা করেছিলেন মুমিনুল হক। ২৮১, সেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২০১৮ সালে। সেই রেকর্ডটিও তো তিনি ভেঙ্গে দিতে চাইবেন। সে পথেই রয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...