১৯৮৩ সালটা এমনিতেই ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। কপিল দেব, সুনীল গাভাস্কারদের হাত ধরে সেবার প্রথমবারের মত বিশ্বকাপ উঁচিয়ে ধরেছিলো ভারত। ১৯৮৩ সালের ১৮ জুন বিশ্বকাপে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ভারতের ত্রাতা হয়ে ভারতীয় ইতিহাসের অন্যতম সেরা ইনিংসটি খেলেছিলেন কপিল দেব।
ভারতের লিটল মাস্টার খ্যাত সুনীল গাভাস্কারের মতে এটি এখনো ভারতের ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা ইনিংস। কিন্তু অবাক করার মত ব্যাপার হলো সেই ম্যাচের কোনো ছবি বা ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়নি আইসিসির সেই টুর্নামেন্টের একমাত্র সম্প্রচারক হিসেবে দায়িত্ব পাওয়া বিসিবি তখন গুরুত্বই দেয়নি ভারতের ম্যাচটিতে। বিশ্বকাপের বাকি ম্যাচ গুলোর তুলনায় ভারতের এই ম্যাচ তেমন কোনো গুরুত্ব বহন করেনি ব্রডকাস্টারদের কাছে।
সেদিন আরো তিন ম্যাচ থাকায় সেই ম্যাচ গুলোই সম্প্রচারর সিদ্ধান্ত নেয় বিবিসি। তাই ভারত-জিম্বাবুয়ে ম্যাচের কোনো ছবি বা ফুটেজ খুঁজে পাওয়া যায়নি আর।
১৯৮৩ সালের ১৮ জুন জিম্বাবয়ের বিপক্ষে বিশ্বকাপের ২০তম ম্যাচে মাঠে নামে টিম ইন্ডিয়া। টুনব্রিজ ওয়েলসের নেভিল গ্রাউন্ডে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় ভারত কিন্তু সবকিছু পরিকল্পনা মাফিক হয়নি।
সুনীল গাভাস্কারকে শূন্য রানে আউট করে ক্রিকেট বিশ্বকে চমকে দিয়েছিলেন পিটার রাউসন। শ্রীকান্ত, মহিন্দর অমরনাথ, সন্দীপ পাটিল এবং যশপাল শর্মার মতো বাঘা বাঘা ব্যাটারদের আউট করে ভারতকে ১৫ রানে পাঁচ উইকেটের দল বানায় জিম্বাবুয়ে।
ঠিক তখনই মাঠে পা রাখেন কপিল দেব। মাত্র ১৩৮ বলে ১৭৫ রানের মহাকাব্যিক এক ইনিংস খেলেন কপিল। যা ভারতের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা ইনিংসেইর স্বীকৃতি পাবে খুব সহজেই। এই অলরাউন্ডারের ব্যাটে ভর করে জিম্বাবুয়েকে ৫০ ওভারে ২৬৮ রানের টার্গেট দেয় ভারত। পরের গল্পটা সবার জানা। ১৯৮৩ বিশ্বকাপের শিরোপা নিজদের করে নেয় ভারত।
ভারত-জিম্বাবুয়ের এই ম্যাচের দিন ছিলো বিশ্বকাপের আরো তিন ম্যাচ। লর্ডসে ওয়েস্ট ইন্ডিজ-অস্ট্রেলিয়া, ওল্ড ট্রাফোর্ডে পাকিস্তান-ইংল্যান্ড ও ডার্বি কাউন্টি গ্রাউন্ডে নিউজিল্যান্ড- শ্রীলঙ্কা ম্যাচের সূচি পড়েছিলো একই দিনে। তাই এই চার ম্যাচের মধ্যে তখনকার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও স্বাগতিক ইংল্যান্ডের দুটো খেলা সরাসরি দেখানোর সিদ্ধান্ত নেয় সম্প্রচার স্বত্ত্ব পাওয়া বিবিসি।
ভারতের ম্যাচ সম্প্রচার না করার সিদ্ধান্ত নেবার পেছনে আরো একটি কারণ ছিলো আগের ম্যাচগুলোতে ভারতের পারফরম্যান্স। ভারতের গড়পরতা পারফরম্যান্স সম্প্রচারকদের আকৃষ্ট করতে পারেনি। যদিও ভারতের ক্রিকেট পাড়ায় গুঞ্জন আছে যে সেই ম্যাচের দিন বিবিসির ধর্মঘটের কারণে সেই ম্যাচ সম্প্রচার করা হয়নি। কিন্তু আসল সত্য এটাই যে, ভারতের ম্যাচকে তখন খুব বেশি গুরুত্ব দিতেন না আয়োজক আইসিসি ও সম্প্রচারকরা।