গতির সাথে বসবাস…

পেসারদের ওপর ভরসা রাখার ব্যাপারটা প্রথম শুরু হয় মাশরাফি বিন মুর্তজার জমানায়। এরপর কোচ হিসেবে ওটিস গিবসন আসার পর সেটা ভিন্ন একটা মাত্রা পায়। ক্যারিবিয়ান এই কোচ প্রায় জোর করেই টিম ম্যানেজমেন্টকে বাধ্য করতেন একাদশে এবাদত হোসেনকে রাখতে।

পেসারদের ওপর ভরসা রাখার ব্যাপারটা প্রথম শুরু হয় মাশরাফি বিন মুর্তজার জমানায়। এরপর কোচ হিসেবে ওটিস গিবসন আসার পর সেটা ভিন্ন একটা মাত্রা পায়। ক্যারিবিয়ান এই কোচ প্রায় জোর করেই টিম ম্যানেজমেন্টকে বাধ্য করতেন একাদশে এবাদত হোসেনকে রাখতে।

সেই ভরসার প্রতিদানটা প্রথম এক বছর দিতেই পারেননি এবাদত। তবে, কালক্রমে তিনি হয়ে উঠেছেন দেশের পেস বিপ্লবের মূল কান্ডারি। আর লাল বলের ক্রিকেটে টানা একই রকম গতিতে নিখুঁত বোলিং করার দক্ষতা এবাদতকে করে তুলেছে অনন্য।

বর্তমান কোচ অ্যালান ডোনাল্ডের হাত ধরে নতুন এক পূর্ণতাই পাচ্ছেন এবাদত হোসেন সহ দলের বাকি পেসাররা। তাসকিন আহমেদকে এখন চাইলে চলতি বিশ্বের সেরা ৫-৭ জন পেসারের একজন বলা যায়। বাজে সময় পেছনে ফেলে শরিফুল ইসলামও ইতিবাচকতার আভাস দিচ্ছে। আর সাদা বলের ক্রিকেটে হাসান মাহমুদ আর মুস্তাফিজুর রহমান তো আছেন।

সব মিলিয়ে দেশের ক্রিকেট আঙিনায় এমন আট-দশজন পেসার আছেন যাদের হাত ধরে সামনে এগোনোর স্বপ্ন দেখতে পারে বাংলাদেশ। আর এই এগিয়ে যাওয়ার একটা মঞ্চায়ন হল মিরপুরে, আফগানদের বিপক্ষে সিরিজের একমাত্র টেস্টে।

নিজেদের ২৩ বছর ও ১৩৮ বছরের টেস্টে ইতিহাসেই রানের বিবেচনায় বড় জয়ের স্বাদ পেয়েছে টাইগাররা। এমনকি টেস্ট ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জয়ে এটি তৃতীয় সেরা। কিন্তু শতাব্দীর সবচেয়ে বড় জয়ের রেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশ। গত ৮৯ বছরের মধ্যে এটিই সবচেয়ে বড় জয়ের রেকর্ড।

এর আগে সর্বশেষ বড় জয় ছিল ১৯৩৪ সালে। দ্য ওভালে ১৯৩৪ সালে অস্ট্রেলিয়া ৫৬২ রানে হারিয়েছিলো ইংল্যান্ডকে। টেস্টের সবচেয়ে বড় জয়ের বিশ্ব রেকর্ড ইংল্যান্ডের। ১৯২৮ সালে ব্রিজবেনে ইংল্যান্ড ৬৭৫ রানে হারিয়েছিল অস্ট্রেলিয়াকে।

এতদিন তৃতীয় বড় জয় ছিলো ৫৩০ রানের। ১৯১১ সালে মেলবোর্নে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৫৩০ রানে হারিয়েছিলো অস্ট্রেলিয়া। ১১২ বছর পর অস্ট্রেলিয়ার সেই রেকর্ড ভেঙ্গে দিয়ে নিজেদের জয়কে তৃতীয়স্থানে তুললো বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের এই অনন্য রেকর্ড জয়ের পেছনে বড় অবদান ছিলো দলের পেসারদের। আফগানিস্তানের বিপক্ষে রেকর্ড জয়ের টেস্টে ১৪ উইকেট নিয়েছেন বাংলাদেশের তিন পেসার তাসকিন-এবাদত ও শরিফুল। যা কোন টেস্টে বাংলাদেশ পেসারদের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারের রেকর্ড।

আগেরটি ছিলো ২০২২ সালে মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১৩ উইকেট নিয়েছিলো বাংলাদেশের পেসাররা। আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্টে শরিফুল-এবাদত ৫টি করে এবং তাসকিন ৪ উইকেট নেন।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৮ উইকেট নেন বাংলাদেশের পেসাররা। এখানেও নতুন রেকর্ডের জন্ম দিয়েছেন তাসকিন-এবাদত ও শরিফুলরা।

ঘরের মাঠে বাংলাদেশের কোন টেস্টেও এক ইনিংসে পেসারদের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারের নজির এটি। আগেরটি ছিলো ২০০২-০৩ মৌসুমে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ৭ উইকেট নিয়েছিলেন পেসাররা।

পেসারদের এই ফর্ম হয়তো সব টেস্টেই থাকবে না। তারপরও ভরসার ছায়াটা যেন থাকে। তাহলেই আসবে ধারাবাহিকতা।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...