ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে আফগানদের কদর কেন বেশি!

র‌্যাংকিংয়ে বড় কোনো পার্থক্য না থাকলেও, টি-টোয়েন্টিতে আফগানদেরকে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে রাখার লোকের অভাব নেই। মুখোমুখি লড়াইয়েই তাঁর প্রমাণ পাওয়া যায়। একই সাথে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটেও আছে আফগানদের কদর।

বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের যেখানে শীর্ষস্থানীয় টি-টোয়েন্টি লিগ গুলোতে দেখা যায় না বললেই চলে, সেখানে আফগানরা থাকেন ঝাঁকে ঝাঁকে। কারণ কী? ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে আফগানিস্তানের ক্রিকেটাররা কেন বেশি কদর পান?

ব্যাখ্যা দিলেন অভিজ্ঞ বাংলাদেশি কোচ মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন বলেন, ‘ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে যেসব আফগান ক্রিকেটার খেলছেন, তাদের অধিকাংশই বোলার। তারা প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানের চাপে রাখে। হয় উইকেট পায় সময় মত, কিংবা খুব মিতব্যয়ী বোলেং করে। তারা আমাদের বোলারদের মত নয়। আমি মনে করি, ওরা দেশে যে মানের উইকেট পায় সেটাই ওদের এই উত্থানের কারণ। ওখানে উইকেট খুবই ফ্ল্যাট হয়, ওই উইকেটে ভাল করাটা ওরা শিখে নেয়। ফলে পৃথিবীর যেকোনো জায়গায় ভাল করে। এজন্যই তারা আমাদের মত নয়।’

সালাহউদ্দিন মনে করেন, টি-টোয়েন্টিতে ভাল করার জন্য আনর্থডক্স কিছু দরকার। তিনি বলেন, ‘সত্যি কথা হল, আমাদের বোলারদের মধ্যে বাড়তি কিছু নেই। আমাদের বোলাররা মূলত অর্থডক্স, মানে সাদামাটা। আমাদের ১৪০ কিলোমিটারের বেশি গতিতে বল করতে পারে এমন কেউ নেই। মুস্তাফিজের কিছুটা ডিমান্ড আছে, কারণ ওর স্কিলে কোয়ালিটি আছে। বাকিদের সেটা নেই।’

এক সময় বাংলাদেশ বাঁ-হাতি স্পিনের জন্য প্রসিদ্ধ ছিল। মোহাম্মদ রফিক, আব্দুর রাজ্জাক কিংবা সাকিব এসেছেন। কিন্তু, এরপরে অনেকে আসলেও তাঁরা কেউই এই তিনজনের মত প্রভাব রাখতে পারেননি।

সালাহউদ্দিনের মতে, ‘যদি স্পিনের কথা বলি, তাহলে বলতেই হয় যে তাঁরা খুবই সাধারণ মানের। ব্যাটসম্যানরা সহজেই বুঝে ফেলে। কোনো নতুনত্ব নেই। যথেষ্ট পরিমান বৈচিত্র নেই, ফলে বাইরে তারা সুযোগ পায় না। আফগানিস্তানের টি-টোয়েন্টিতে কার্যকর এমন অনেক খেলোয়াড় আছে। ওরা যে এখানে আমাদের চেয়ে এগিয়ে সেটা না মানার কোনো সুযোগ নেই।’

ব্যাটিয়ের প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিনের দাবি, বাংলাদেশের পাওয়ার হিটিং দক্ষতার অভাব আছে, তাই টি-টোয়েন্টির বাজারে ব্যাটসম্যানরা প্রতিযোগীতা করতে পারছেন না।

তিনি বলেন, ‘আমাদের পাওয়ার হিটিংয়ে যথেষ্ট দক্ষতা নেই। ব্যাটসম্যানদের প্রতিযোগীতা করতে না পারার এটাই মূল কারণ। বিপিএলেও তেমন কাউকে আমরা পাই না। তাই, টপ অর্ডার খেলার মত ব্যাটসম্যানদের বাইরে থেকে আনা হয়। এই সমস্যা ৫, ৬ কিংবা ৭ নম্বর পজিশনেও আছে। কারোরই ফিনিশিং অ্যাবিলিটি নেই। ওরকম শারীরিক সক্ষমতাই নেই। এটা বড় সমস্যা। বাইরের লিগে সুযোগ পেলে সেটা হবে টপ অর্ডারের কেউ। আমাদের টপ অর্ডারে তেমন কেউ নেই।’

টি-টোয়েন্টিতে ব্যাটিংয়ে ভাল করতে পাওয়ার হিটিংয়ের বিকল্প নেই। সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আমাদের খেলোয়াড়দের পাওয়ার হিটিং শিখতে হবে। কেবল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের এই দক্ষতা আছে। ও লম্বা, নিচের দিকে ব্যাটি কিংবা ব্যাকফুটে ভাল খেলেন। খেলাটা শেষ করতে পারেন। ও যদি নিজের বোলিংয়ে আরেকটু গুরুত্ব দিত, তাহলে টি-টোয়েন্টিতে দারুণ এক প্যাকেজ হত। এখনো সেটা সম্ভব, সে জন্য বোলিয়য়ে আরেকটু গুরুত্ব দিতে হবে। ভারসাম্য আনার জন্য দলগুলো অলরাউন্ডারদের দিকে বেশি ঝুঁকে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link