চলতি বছরের মে মাসে প্রকাশিত হয়েছিল আইসিসির রাজস্ব বন্টন মডেল। তবে প্রস্তাবিত সে মডেল নিয়ে মতবিরোধ ছিল অনেক। বিশেষত, পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) প্রকাশ্যেই আইসিসির এ রাজস্ব বন্টন মডেল নিয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছিল। অবশ্য তাতে কাজও হয়েছে। সম্প্রতি আইসিসির অনুমোদন-কৃত রাজস্ব মডেলে আগের চেয়ে দ্বিগুণ লভ্যাংশ পেতে যাচ্ছে পিসিবি।
গত ১৬ জুলাই ডারবানে আইসিসির বোর্ড সভায় অনুমোদন দেয়া হয়েছে নতুন এই রাজস্ব-বন্টন মডেলটিকে। ২০২৪ সাল থেকে ২০২৭ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর ৬০ কোটি মার্কিন ডলার আয় করবে আইসিসি। যার মধ্যে ৩৮.৫ শতাংশই পাবে ভারত।
এর অর্থ হল, ২৩ কোটি মার্কিন ডলার একাই পাবে বোর্ড অব কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়া (বিসিসিআই)। যা বাংলাদেশি অর্থমূল্যে ২ হাজার ৪৫০ কোটি টাকারও বেশি। আইসিসির এ লভ্যাংশ বণ্টনের হিসেবে ভারতের ধারেকাছেও নেই কেউ।
ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) পাবে ৬ দশমিক ৮৯ শতাংশ, অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট বোর্ডের কাছে যাবে ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ। এর আগে পাকিস্তানের জন্য মাত্র ৫.৭৫ শতাংশ লভ্যাংশ প্রস্তাব করেছিল আইসিসি।
তখনই অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছিলেন পিসিবির তখনকার চেয়ারম্যান নাজাম শেঠি। ডারবানে আইসিসির সভায় বর্তমান পিসিবি প্রধান জাকা আশরাফও এ মডেল নিয়ে বিরোধিতা করেন। তাদের মতে, বিগত বছর গুলোতে পাকিস্তানের ভাল পারফরম্যান্স ছিল।
তারপরও কেন এত কম লভ্যাংশ? পিসিবির এ দাবি মেনে নতুন মডেলে পাকিস্তানের জন্য আগের চেয়ে দ্বিগুণ লভ্যাংশ বরাদ্দ করেছে আইসিসি। যার অর্থ, বার্ষিক ৩ কোটি ৪৫ লাখ ডলারের বেশি পাবে পিসিবি।
আইসিসির এ রাজস্ব বন্টনে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড পাবে ২ কোটি ৬৭ লাখ ডলারের একটু বেশি, যা মোট আয়ের যা ৪.৪৬ শতাংশ। বাকি ৭ টি দেশের কেউই অবশ্য ৫ শতাংশের বেশি পাবে না।
পূর্ণ সদস্য দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম এক কোটি ৬৮ লাখ ডলার আয় করবে আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। সব মিলিয়ে আইসিসির পূর্ণ সদস্য ১২ দেশ সম্মিলিতভাবে পাবে মোট আয়ের ৮৮.৮১ শতাংশ। আর বাকিটা ভাগ করে দেওয়া হবে ৯৪ টি সহযোগী দেশের মধ্যে।
তবে, এর পরও ভারতের সাথে অন্যান্য বোর্ডের এত তারতম্য নিয়ে প্রশ্নও উঠছে জোরেশোরে। অবশ্য এমন ব্যবধানের কারণও ব্যাখ্যা করেছে আইসিসি। তাদের ভাষ্যমতে, কোন দেশের ক্রিকেট বোর্ড কত টাকা পাবে তা নির্ভর করে তিনটি বিষয়ের ওপর।
এর মধ্যে রয়েছে,আইসিসি র্যাংকিংয়ে দেশের অবস্থান, আইসিসি প্রতিযোগিতায় সেই দেশের ফলাফল ও সম্প্রচার ও বিজ্ঞাপন থেকে সেই দেশ কত টাকা আয় করছে। মূলত ভারতে ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা এবং বড় ধরণের স্পন্সরশিপের কারণেই অন্য যে কোনো বোর্ডের তুলনায় লভ্যাংশের ভাগ বেশি পাচ্ছে দেশটি।