তামিম ইকবালকে নিজের ইনজুরির ব্যাপারে এই সপ্তাহের মধ্যেই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলতে হবে। তবে, ইনজুরির পরিস্থিতি যত দিন যাচ্ছে ঘোলাটে হচ্ছে। এই অবস্থায় ইনজেকশন দিয়েও ফল পাওয়াটা নিশ্চিত নয়।
লন্ডনের স্পাইন ফিজিশিয়ান টনি হ্যামন্ড তামিমকে দেখছেন । ব্যক্তিগত উদ্যোগেই তাঁর সাথে যোগাযোগ করেছিলেন তামিম। ঢাকা, দুবাই ও লন্ডনকে সংযুক্ত করে তামিম ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) ডাক্তারদের সাথে তাঁর একটা অনলাইন বৈঠকও হয়েছে।
সহজ বাংলায় বললে, মেরুদণ্ডের নিচের দুটি হাড়ের মাঝের ডিস্কে ক্ষয় ধরেছে তামিমের। ডাক্তারি ভাষায়, চোট ফোর্থ ও ফিফথ লাম্বার স্পাইন ভার্টিব্রার (এল-ফাইভ) মাঝের ডিস্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এই ধরণের সমস্যা কাটিয়ে ওঠার মূল শর্ত হল বিশ্রাম। একই সাথে চলাফেরা, ওঠাবসা এমনকি বিছানায় শোবার ক্ষেত্রেও সতর্ক থাকতে হবে। সেখানে তামিম অনুশীলনের মধ্যে ছিলেন, জিমও করেছেন। জিম করা মানে হল, তামিমকে ভারী ওজন তুলতে হয়েছে, যেখানে এল-ফাইভ রোগীদের ক্ষেত্রে আড়াই কেজি ওজন তোলাও নিষেধ।
সেজন্যই হয়তো, জাতীয় দলের এক ফিজিওর দিকে আঙুল তুলেছিলেন তামিম। আর টনি হ্যামন্ড যে স্ক্যান রিপোর্ট দেখেছেন সেটা গত মে মাসে করা। তখন ইংল্যান্ডের চেমসফোর্ডে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলছিল বাংলাদেশ।
তখন, কোচ চান্দিকা হাতুরুসিংহের পরামর্শে একজন স্পোর্টস অস্টিওপ্যাথ ও একজন স্পোর্টস ফিজিশিয়ান দেখান বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক। স্ক্যানও করানো হয়েছিল। সেই রিপোর্টটাই দেখেন টনি হ্যামন্ড। এরপর প্রায় মাস দুয়েক কেটে গেছে।
ফলে, খুব স্বাভাবিক ভাবেই তামিমের জটিলতা বেড়েছে। এখন বিশ্রাম ও সতর্কতা তো বটেই, ইনজেকশন নিয়েও ফল হবে কি না – সেটা বলা মুশকিল। এই ইনজেকশন তামিম আগেও নিয়েছিলেন, আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ খেলেন ইনজেকশন নিয়েই।
এই ইনজেকশন আবার রীতিমত অপারেশন থিয়েটারে রোগীর শরীরকে নিস্তেজ করে নিতে হয়। ইনজেকশনের কার্যকারিতা আবার নির্দিষ্ট সময় পর শেষ হয়ে যায়। আর এর কার্যকারিতা একেকজনের ক্ষেত্রে একেক ভাবে কাজ করে।
তবে, ইনজেকশন নিয়ে মাস তিনেক ব্যাথামুক্ত থাকার একটা সম্ভাবনা আছে। তবে, সেটা নিশ্চিত নয়। বিশ্বকাপের মাঝপথে যদি ওষুধের প্রতিক্রিয়া শেষ হয়ে যায়, তখন তামিমের সাথে সাথে বিপদে পড়তে পারে বাংলাদেশ দলও। ফলে, অনেকগুলো ঝুঁকি আছে।
এতসব ঝুঁকি বিবেচনা করে তামিম কোন দিকে যাবেন, সেই সিদ্ধান্ত হয়ে যাবে দ্রুতই। তামিম দুবাই থেকে লন্ডন গেছেন সোমবার। আজ মঙ্গলবার ঢাকা থেকে লন্ডনের বিমানে উঠেছেন বিসিবির ডাক্তার দেবাশীষ চৌধুরী।
আগামীকাল মানে বুধবারই আরেকটি এমআরআই করাবেন তামিম। এর পরদিন লন্ডনের একজন স্পাইন ফিজিশিয়ানকে দেখানো হবে। মানে এই সপ্তাহের মধ্যে তামিম নিজের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলবেন। আপাতত না হয়, সেই পর্যন্ত অপেক্ষা করা যাক।