প্রায় মাস দেড়েক বাংলাদেশ ক্রিকেটে নেই কোন আন্তর্জাতিক ম্যাচ। তবে ঠিক এরপরই একটানা ক্রিকেট খেলোয়াড়রা যেমন ব্যস্ত থাকবেন, ঠিক তেমনি ব্যস্ত দিন যাবে সমর্থকদের। ছেলেদের এশিয়া কাপ থেকে শুরু। এরপর এশিয়ান গেমস আরও কত আয়োজন।
হ্যা, ২০১৪ সালের পর আবারও এশিয়ান গেমসে যুক্ত হয়েছে ক্রিকেট। এই ডিসিপ্লিনে স্বর্ণ জয়ের ক্ষেত্রে বেশ আশাবাদী বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন। বাংলাদেশ নারী দল বেশ শক্তপোক্ত এক দল নিয়েই যাবে চীনের হ্যাংজু শহরে যাবে। কিন্তু পুরুষদের ঠিক কোন দলটা যাচ্ছে এশিয়ান গেমসে, সে বিষয়টি এখনও খোলাস হয়নি।
ধারণা করা হচ্ছে সদ্যই ইমার্জিং এশিয়া কাপ খেলা দলটাকেই পাঠানো হবে সেখানে। তবে বেশ কিছু পরিবর্তন আসতে পারে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন খেলা ৭১ কে বলেন, ‘হুবহু ইমার্জিং এশিয়া কাপের দল হবে না, তবে ওই দলের অনেকেই এশিয়ান গেমসে থাকবে।’
জয়ের আশায় বেশ শক্তিশালী এক দলই পাঠাতে চায় বাংলাদেশ। তবে এশিয়ান গেমসে সময়টাতেই বাংলাদেশ জাতীয় দলের রয়েছে এশিয়া কাপ ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ। এরপর আবার বিশ্বকাপের মত বড় আসর।
তাইতো স্বাভাবিকভাবেই জাতীয় দলের কোন খেলোয়াড়কে অন্তর্ভুক্ত করা যাচ্ছে না এশিয়ান গেমসের ১৫ সদস্যের দলে। তবে দলে অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দেরকে দেখা যাওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না মোটেই। যেমন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, সৌম্য সরকারদের মত খেলোয়াড়দের সঙ্গী করে উড়াল দিতে পারে বাংলাদেশের দল।
এবারের এশিয়ান গেমসে বয়সের তেমন প্রতিবন্ধকতা নেই। সর্বনিম্ন বয়স ১৫ বছর নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। সেদিক থেকে অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের চাইলেই অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে বাংলাদেশের দলে। নুরুল হাসান সোহান ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের মত অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের নিশ্চিতভাবেই দলের সাথে যুক্ত করা সম্ভব।
কিন্তু বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড চাইছে তারুণ্য নির্ভর একটা দল পাঠাতে। বাংলাদেশের পাইপলাইন সচল রাখতে এটিও একটি কার্য্যকর পদক্ষেপ। জাতীয় দলের আশেপাশে থাকা খেলোয়াড়দের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার সুযোগ করে দেওয়াটা বাংলাদেশের জন্যেই মঙ্গল বয়ে নিয়ে আসতে পারে।
ঠিক একই রকম পথে হেটেছে ভারতের ক্রিকেট বোর্ডও। তারা রুতুরাজ গায়কড়কে অধিনায়ক করে ১৫ সদস্য়ের একটি দল ঘোষণা করেছে। সেখানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা খেলোয়াড়রা যেমন জায়গা পেয়েছেন। পাশাপাশি অভিষেক না হওয়া বেশ ক’জন ক্রিকেটার রয়েছেন সেই দলে।
এবারের এশিয়ান গেমসে স্বর্ণ জয়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রধান অন্তরায় হতে পারে ভারত। তাছাড়া বাকিদের থেকে শক্তিমত্তার বিচারে বেশ এগিয়ে থাকা একটি দল নিয়েই হ্যাংজু শহরে ঘাটি করবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। বাংলাদেশের অধিনায়কের দায়িত্বটা পেতে পারেন সাইফ হাসান। যেহেতু সাম্প্রতিক সময়ে তিনি ইমার্জিং এশিয়া কাপে বাংলাদেশকে সেমিফাইনাল অবধি নিয়ে গিয়েছিলেন।
তবে মোসাদ্দেক হোসেনের দলে জায়গা হলে, তিনিও দিতে পারেন নেতৃত্ব। কেননা ঘরোয়া ক্রিকেটে শিরোপা জয়ের অভিজ্ঞতা রয়েছে মোসাদ্দেকের। শেষ অবধি ঠিক কোন দলটা নিয়ে বাংলাদেশ যাবে চীনে সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা।
এশিয়ান গেমস থেকে ২০১৪ সালে শেষ বোঞ্জ পদক এসেছিল। মাশরাফি বিন মর্তুজার নেতৃত্বে বেশ শক্তিশালী এক দলই পাঠানো হয়েছিল সেবার। সাকিব আল হাসান, সাব্বির রহমানদের মত খেলোয়াড়রা ছিলেন সে আসরে। এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় অর্জনটা এসেছিল ২০১০ আসরে।
সেবার মোহাম্মদ আশরাফুলের নেতৃত্বে স্বর্ণ পদক জিতেছিল বাংলাদেশ। এবারও স্বর্ণ জয়ের ক্ষণ গুনছে বাংলাদেশ। শেষ অবধি বাংলাদেশ ক্রিকেটের অর্জনের মুকুটে আরও একটি পালক যুক্ত হবে নাকি সেটা সময়ই বলে দেবে।