ব্যাটিং এলিগেন্সের পাকিস্তানি সম্রাট

সোনার অক্ষরে বুকে ধরা আছে, তাঁকে নিয়ে কয়েকটা আলোমাখা কথা বলে শুরু করা যাক।

প্রথম পরপর তিনটা ওডিআই শতরানের কথা বলা যায়। পরপর তিনটি টেস্ট ইনিংসে শতরানের কথাও আসে।

একই টেস্টে ভারতের বিরুদ্ধে ১৭৬ ও ৯৬ রান করেছিলেন। কপিল দেবের অভিষেক টেস্ট ছিল সেটা। আইসিসি হল অফ ফেম-এ যাওয়ার কথা তো না বললেই নয়।

১৯৭১ সালে এজবাস্টন টেস্টে ৩৮ টি চার মেরে ২৭৪ রান করেন। উইলো কাঠের ছদ্মবেশে ব্যাটিং এলিগেন্সকে ক্রিকেট মঞ্চে আলিঙ্গন করার নায়ক এই জহির আব্বাস।

‘এশিয়ান ব্র্যাডম্যান’ যে কাউকে বলা যায়, এই তথ্যটা জেনে চমৎকৃত হওয়ার কথা অনেকেরই। সেই মানুষটি হলেন জহির আব্বস।

দেড় দশক ধরে ব্যাট হাতে চোখকে শান্তি দিয়েছিলেন তিনি। টেস্ট আর ওডিআই মিলিয়ে ১৯৮২-৮৩ মৌসুমে ভারতের বিরুদ্ধে টানা পাঁচটি শতরান করার নজীর আছে তাঁর।

প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে ৪৫৯ ম্যাচে ১০৮ শতরান ও ১৫৮ অর্ধশতরান সমেত ৩৪৮৪৩ রান করে জহির আব্বাস নিজেকে নিয়ে যান ইতিহাসের পাতায়।

এবং শেষ কথা না বললেই নয়। সে দিনটা হল ১০ মার্চ ১৯৮৫। সুনীল গাভাস্কারের শেষ ম্যাচ ছিল এদিন – অধিনায়ক হিসেবে। মেলবোর্নে পাকিস্তানকে উড়িয়ে বেনসন-হেইজেস বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ কাপ জিতেছিল ভারত সেদিন।

এই ম্যাচের আগে আপনাকে জনৈক ইংরেজ সাংবাদিক প্রশ্ন করেছিলেন – ‘কারা জিতবে?’ জহির আব্বাস উত্তর দিয়েছিলেন – ‘আমাদের উপমহাদেশের ব্যাপার। আমরাই বুঝে নেব। আপনি আসতে পারেন খেলা দেখতে।’

আপনি চিরদিন আলাদাই ‘জেড’। তাই ভারতের এক ‘আলাদা’ বেঁটের সঙ্গে আপনার জমে খুব, এখনও।

সেই জমে যাওয়া পেরিয়ে আপনার ৭৮ টেস্টে একটা ডাবল সেঞ্চুরি সহ ১২ টি শতরান আর ২০ টি হাফ সেঞ্চুরি সহ ৪৪ গড়ে ৫০৬২ রান, তিনটি উইকেট আর ৩৪াটা ক্যাচ দাঁড়িয়ে থাকে মাথা উঁচু করে।

তাতে সঙ্গত করে আপনার ৬২ টি ওডিআইতে সাতটি শতরান আর ১৩ টি অর্ধশতরান সহ ৮৪.৮০ স্ট্রাইক রেটে ২৫৭২ রান, ৭টি উইকেট আর ১৬টি ক্যাচ। অথবা আজও দ্বিতীয় দ্রুততম ৪৫টি ওডিআই খেলে ২০০০ রান।

কিংবা টেস্ট ও ওডিআই মিলিয়ে টানা পাঁচটি ইনিংসে শতরান, যা আজও যুগ্ম সর্বোচ্চ রেকর্ড, ক্যারিবিয়ান গ্রেট এভারটন উইকসের সঙ্গে। বাইশ গজ কিংবা জীবনের পিচে এতটাই রঙিন জহির আব্বাস, জহির ‘জেড’ আব্বাস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link