জাতীয় দলের ব্যস্ততা নেই। তাই নাজমুল হোসেন শান্ত খেলছেন ইনডোর ক্রিকেট টুর্নামেন্ট। সেখানে তিনি তার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিত্ব করছেন। আর সেই টুর্নামেন্ট খেলতে গিয়েই সতীর্থ এক খেলোয়াড়ে মুগ্ধ হয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। মূলত সতীর্থের ব্যাট সুইংই মুগ্ধ করেছে শান্তকে। অনুশীলন শেষে সেই গল্পই বলছিলেন তিনি।
সেই মুগ্ধতা অবশ্য শান্তকে অনুপ্রাণিতও করেছে। জাতীয় দলের কন্ডিশনিং ক্যাম্প শুরু হতে মাত্র কয়েকদিনই বাকি। তবুও শান্ত নিয়মিত মিরপুর একাডেমি মাঠে আসছেন। ব্যক্তিগতভাবে অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছেন। তাইতো নিজের ব্যাট সুইংয়ের দিকেও দিয়েছেন বাড়তি নজর।
‘পাওয়ার বল’ দিয়ে ব্যাটিং ড্রিল করতেও দেখা গেছে নাজমুল হোসেন শান্তকে। বেশ খানিকক্ষণ তিনি নিজের ব্যাট চালানোর গতির অনুশীলনই করেছেন একাডেমি মাঠের নেটে। মূলত পাওয়ার বল ওজনে ক্রিকেট বলের তুলনায় বেশ ভারি হয়।
‘পাওয়ার হিটিং’ অনুশীলনের ক্ষেত্রে ব্যাটাররা এই বলগুলো ব্যবহার করে থাকেন। দ্রুত ব্যাট চালানো, পেশি শক্তির সঞ্চার ঘটানোর ক্ষেত্রে এই বলগুলো বেশ ফলপ্রসূ। তাই হয়ত নিজের ব্যাটিং দৃঢ়তা আরও একটু বাড়িয়ে নেওয়ার প্রচেষ্টায় শান্তর এই ‘পাওয়ার বল’ ব্যবহার।
ব্যাট সুইং বাড়ানো বা অতিরিক্ত শক্তি জেনারেট করার এই অনুশীলনটা অবশ্য শান্ত বেশ কিছুদিন ধরেই করে যাচ্ছেন। মূলত লো পুল শট খেলার সময় যথাযথ টাইমিং হলেও, বাউন্ডারি ছাড়া করার জন্য শক্তির প্রয়োজন পড়ে। সে দিক থেকে বাউন্ডারি লাইনে শান্তর ক্যাচ আউট হওয়ার প্রবণতাও রয়েছে। তাইতো শান্ত নিজের সেই দুর্বলতার সমাধান খুঁজতে বেশ মরিয়া।
নিয়ম করেই সেই দূর্বলতা নিয়ে কাজ করছেন তিনি। বয়সভিত্তিক দলে তিনি কোচ সোহেল ইসলামের সান্নিধ্য পেয়েছেন। সেই কোচের শরণাপন্নই হয়েছেন শান্ত আবার। পুল শটে শক্তি স্থানান্তরের ক্ষেত্রে শান্তর মূল অন্তরায়, তার কোমর বাঁকা এবং একটু নিচু না হওয়া।
সোহেল ইসলাম তাকে সে টোটকাই দিয়েছেন অনুশীলনে। বাঁকানো কোমড় থেকে চাইলেই শক্তির সাহায্যে দৃষ্টিনন্দন পুল শট খেলা সম্ভব। তাছাড়া তাতে ব্যাটের সুইংটাও হয় দুর্দান্ত। এই একটি শটে শক্তি সঞ্চার করা এবং আরও তীক্ষ্ণ করবার কাজটাই করে গেছেন শান্ত।
নাজমুল হোসেন শান্ত, এই মুহূর্তে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ব্যাটারদের একজন। তবে সময়ের সাথে বিবর্তন হতে থাকে সবকিছুই। সেই বিবর্তনের স্রোতে শান্ত হারিয়ে যেতে চান না। তাইতো নিজের দুর্বলতা খুঁজে বের করছেন, সাথে সমাধানও। পরামর্শ নিচ্ছেন অভিজ্ঞদের। ঘাম ঝড়াচ্ছেন নেট অনুশীলনে।
রানের ক্ষুধা তার তীব্র। একটা সময় প্রবল রান খরায় ভুগেছেন। সমালোচনার আর নিন্দার ঝড় সামলেছেন। এরপর নিজের ভেতরে থাকা সম্ভাবনার প্রতিফলন অবশেষে ঘটাতে শুরু করেছেন। শুরুতেই থমকে যেতে কেই বা চায়? শান্তদের মত ব্যাটাররা নিশ্চয়ই তেমনটি চান না। আর এই না চাওয়ার তৃষ্ণাতেই এক একজন হয়ে ওঠেন মহারথী।