একটা ইতিহাস হতেই পারতো। প্রথম দুই ম্যাচে হেরেও পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের প্রত্যাবর্তনের গল্প এর আগে লেখা হয়নি কখনোই। ভারত হতে পারতো সেই ইতিহাসের অংশীদার।
কিন্তু দিনশেষে সেটি আক্ষেপের গল্পই হয়ে রইল। সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে ভারতকে ৮ উইকেটে হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আর তাতেই সিরিজ জয়ের গল্প লিখেছে আসন্ন বিশ্বকাপে নিজেদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হওয়া ক্যারিবিয়ানরা।
টানা দুই জয়ের পর টানা দুই হার। ছন্দটা কেটে যাওয়ার একটা শঙ্কা জেগেছিল ক্যারিবিয়ানদের সামনে। তবে কিভাবে শেষমেশ ভারত বধ হলো, সেই রহস্যই খোলাসা করেছেন ম্যাচসেরা রোমারিও শেফার্ড।
ম্যাচশেষে ক্যারিবিয়ান এ পেসার বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্যই ছিল ভারতের দুই ব্যাটার সুরিয়াকুমার যাদব আর সাঞ্জু স্যামসনকে আটকানো। সেই লক্ষ্যে আমরা স্যামসনকে শুধু উইকেটেই বল করে গিয়েছি। আর সুরিয়ার বেলায় আমরা শুধু গ্রাউন্ডেই বল করার চেষ্টা করেছে। যাতে করে নিচু হয়ে আসা বল খেলতে বলের লাইন মিস করেন সুরিয়া কুমার যাদব।’
শেফার্ডদের এমন রণকৌশল অবশ্য কাজেও দিয়েছে। সাঞ্জু স্যামসনকে টানা উইকেটে বল দিতে থাকেন শেফার্ড। এক পর্যায়ে পরাস্তও হন ভারতীয় এ ব্যাটার। ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার আগেই শেফার্ডের একটি বল ব্যাট ছুঁয়ে যায় উইকেটরক্ষকের গ্লাভসে। ফলত, ৯ বলে ১৩ রান করে প্যাভিলিয়নের পথে হাঁটা দিতে হয় এ ব্যাটারকে।
সুরিয়াকুমার যাদব অবশ্য এ ম্যাচে ক্যারিবীয় পেসারদের ভুগিয়েছিলেন। কিন্তু ফিফটি পূরণের পর জেসন হোল্ডার নিচে নেমে আসা বলটাতে আর সেভাবে সংযোগ ঘটাতে পারেননি। ক্যারিবিয়ানদের পাতা ফাঁদে ধরা দেন তিনিও।
শেষ কয়েক মাসে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বেশ বাজে সময় কাটাচ্ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রথম দুই বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন এবারের বিশ্বকাপেই খেলতে পারছে না। এমন তিক্ত অভিজ্ঞতার পর তাই তাদের জানান দেওয়াটা খুবই জরুরি ছিল। তাই ভারতের মতো দলকে হারানোয় দল পুরনো উদ্দীপনা ফিরে পেয়েছে বলে মনে করেন রোমারিও শেফার্ড।
তিনি বলেন, ‘শেষ কয়েক মাসে আমরা খুবই বাজে সময় কাটিয়েছি। এই সিরিজটা দুর্দান্ত হলো। ভারতের মতো দলকে হারানো সত্যিই দুর্দান্ত ব্যাপার। এটা আমাদের জন্য যতটা স্বস্তিদায়ক, ঠিক ততটাই আনন্দের উপলক্ষ্য হয়ে এসেছে আমাদের সমর্থকদের জন্য।’
৫ ম্যাচের সিরিজে প্রথম দুই ম্যাচ হেরে এক প্রকার ব্যাকফুটেই পড়ে গিয়েছিল হার্দিক পান্ডিয়ার দল। তবে এরপরই ঘুরে দাঁড়ায় টিম ইন্ডিয়া। টানা দুই ম্যাচ জিতে দুর্দান্তভাবে সিরিজে ফিরে আসে। সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচেও প্রথমে ব্যাট করে ১৬৫ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর তুলেছিল ভারতীয়রা। তবে ব্রেন্ডন কিংয়ের এক ৮৫ রানের ঝড়েই ১২ বল হাতেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ক্যারিবিয়ানরা।
৫ চার আর ৬ ছক্কায় ৫৫ বলে ৮৫ রানের ইনিংস খেলার পরও অবশ্য ম্যাচসেরা পুরস্কার গিয়েছে রোমারিও শেফার্ডের হাতে। কারণ তাঁর বোলিংয়েই যে ১৬৫ তে আটকে যায় ভারত। ৩১ রানে ৪ উইকেট নেন এ পেসার। এর মাঝে ভারতের ইনিংসের ১৯ তম ওভারে একবার হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও জাগিয়েছিলেন শেফার্ড।
উল্লেখ্য, এটিই শেফার্ডের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের সেরা বোলিং ফিগার। শেফার্ড শুধু এই ম্যাচেই নয়, পুরো সিরিজেই দারুণ বোলিং করেছেন। সব মিলিয়ে সিরিজের ৫ ম্যাচে ৯ টি উইকেট পেয়েছেন তিনি।