তামিম ইকবাল নেই, বাংলাদেশের টপ অর্ডারে সবচেয়ে অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানের নামটা তাই লিটন দাস। এশিয়া কাপেও লিটনের উপর প্রত্যাশা আর দায়িত্ব দুই-ই বেশি; কিন্তু এই ডানহাতি সেই প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবেন কি না সেটা নিয়ে সংশয় উঠেছে। সাম্প্রতিক সময়ে তাঁর ফর্ম অন্তত কোন আশা দেখাচ্ছে না।
সর্বশেষ আফগানিস্তানের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছিল বাংলাদেশ। সেই সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডেতে করা একটা ফিফটি বাদ দিলে রঙিন পোশাকের বাকি সব ম্যাচেই লিটন ছিলেন ছন্দহীন। দুই টি-টোয়েন্টিতে ব্যাটিং করেছেন ১০০ ছুঁই ছুঁই স্ট্রাইক রেটে, আর প্রথম দুই ওয়ানডেতে রানই পাননি এই ডানহাতি।
ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটেও অনুজ্জ্বল লিটন দাসের ব্যাট। গত এক মাসে কানাডা আর শ্রীলঙ্কার মাটিতে টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট খেললেও কোথাও বলার মত কিছু করতে পারেননি তিনি। কানাডার গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি লিগে সারে জাগুয়ার্সের হয়ে খেলা লিটন করেছেন কেবল মাত্র একটি ফিফটি; বাকি সব ম্যাচেই ড্রেসিংরুমে ফিরেছেন অসন্তোষ নিয়েই।
এরপর লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগে খেলতে গেলেও বদলায়নি লিটন দাসের ভাগ্য। সাকিবের দল গল টাইটান্সের জার্সিতে দুই ম্যাচ খেলে করেছেন মাত্র নয় রান।
কম রানে আউট হওয়ার চেয়ে ভক্ত-সমর্থকদের বেশি কষ্ট দেয় লিটন দাসের আউটের ধরন। প্রিয় ব্যাটারকে প্রতিনিয়ত সফট ডিসমিসালের শিকার হতে দেখে একরকমের বিরক্ত হয়ে গিয়েছে দেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা। কখনো হাফ হার্টেড পুল শট, কখনো আবার ক্ল্যাসিক লফটেড ড্রাইভ খেলতে গিয়ে ফিল্ডারের হাতে ধরা পড়েন তিনি।
মানিয়ে নেয়া, খেলার পরিস্থিতির সাথে নিজেকে ভেঙে গড়া লিটন দাসের মধ্যে দেখাই যায় না। পিচের অবস্থা কিংবা বোলারের বল কোন কিছু না বুঝেই খেলতে থাকেন তিনি। যেদিন ব্যাটে বলে হয়ে যায় সেদিন অবশ্য লিটনকে থামানোর সাধ্য নেই; কিন্তু বাকি সময় লিটনকে ফিরতে হয় দ্রুতই।
বাবর আজম, বিরাট কোহলিরা যেমন নিজেকে ভেঙে গড়েন, খেলার মাঝেই এপ্রোচে পরিবর্তন এনে বড় ইনিংস খেলতে চান তেমন কোন কিছুই দেখা যাচ্ছে না লিটন দাসের মাঝে। বিশ্বের অন্যতম সেরা ক্ল্যাসিক্যাল ব্যাটসম্যান হওয়া সত্ত্বেও লিটনের ব্যাটে তাই তেমন বড় রান নেই।
সামনের এশিয়া কাপ আর বিশ্বকাপে দারুণ কিছু করার সুযোগ আছে লিটন দাসের। তবে এখনের মত রান না করে শুধু ব্যাটিং শিল্প দেখালে লাভের লাভ হবে না কিছুই। বরং ব্যর্থতার বৃত্তে আটকে থাকা শিল্পী হয়েই থাকতে হবে তাঁকে।