ইউরোপ ছাড়লেও শিরোপায় মিলেছেন তাঁরা

দুইজনেরই বয়স হয়েছে, দুইজনেই ইউরোপের ইন্টেন্স ফুটবল ছেড়েছেন – বলছি লিওনেল মেসি আর ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর কথা। পিএসজিকে বিদায় বলে মেসি চলে গিয়েছেন আমেরিকান ক্লাব ইন্টার মিয়ামিতে, আর রোনালদো তো নতুন করে চিনিয়েছেন সৌদি প্রো লিগকে।

তবে, ইউরোপ ছেড়ে দুজন দুই পথে হাঁটলেও শিরোপা জিতে ঠিকই একই মোহনায় মিলেছেন তাঁরা। এইতো গত সপ্তাহের কথা, আরব ক্লাব কাপ চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছিলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। দশজনের দল নিয়েই ফাইনালে আল নাসেরকে চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন তিনি। ৪২ বছর ধরে যে টুর্নামেন্টের ফাইনালে ওঠেনি দলটি, তাঁরাই শিরোপা জিতেছে রোনালদোর পায়ে ভর করে।

ফাইনালের ধ্রুপদী সেই লড়াইয়ে জোড়া গোল করে একাই শিরোপার গন্তব্য নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন পর্তুগিজ তারকা; তাঁর প্রথম গোলে সমতায় ফিরেছিল আল নাসের, এরপর অতিরিক্ত সময়ের দারুণ এক হেডারে জয় নিশ্চিত হয় দলটির। কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনালের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে গোল সহ পুরো আসর জুড়েই আল নাসেরকে এগিয়ে নিয়েছেন রোনালদো, গোল্ডেন বুটও নিজের করে নিয়েছেন তিনি।

চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রোনালদো নতুন ক্লাবের হয়ে ট্রফির স্বাদ পেয়েছে; লিওনেল মেসি কি বসে থাকবেন? না, সেটা তো গত দুই দশক ধরে চলতে থাকা ফুটবল নিয়মের বিরুদ্ধ। তাই তিনিও চুপচাপ বসে থাকেননি; সামনে থেকে পারফর্ম করেই ইন্টার মিয়ামিকে লিগ কাপ জিতিয়েছেন বিশ্বকাপজয়ী এই ফুটবলার।

ফাইনালে এক গোলের পাশাপাশি পুরো আসরে ১০ গোল করেছেন তিনি; শিরোপার সাথে জিতেছেন টুর্নামেন্ট সেরার পুরষ্কারও। মাস কয়েক আগেও ধুঁকতে থাকা মিয়ামি হঠাৎ করেই চ্যাম্পিয়ন বনে গেলো, আর সেটার পেছনে অনবদ্য অবদান আর্জেন্টিনা অধিনায়কেরই।

ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর বয়স ৩৮, লিওনেল মেসির ৩৬। ফুটবল সাম্রাজ্যকে দেয়ার মত আর তেমন কিছুই বাকি নেই তাঁদের মাঝে। তবু তাঁরা লড়ছেন দলের জন্য একটা জয় আনতে, লড়ে যাচ্ছেন নিজের শেষটুকু দিয়েই।

লিওনেল মেসি যোগ দেয়ার আগে লিগ টেবিলের তলানিতে ছিল ইন্টার মিয়ামি, অথচ সেই দলটাই এখন দাপটের সাথে জিতে নিল লিগ কাপ। আর ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো যাওয়ার পর থেকে তো নতুন জীবন পেয়েছে সৌদি লিগ; নেইমার জুনিয়র, করিম বেনজেমাদের মত বড় মাপের ফুটবলাররাও রোনালদোর দেখাদেখি যোগ দিয়েছেন সৌদি ক্লাবে।

সবমিলিয়ে তাই নিজেদের জায়গায় রোনালদো কিংবা মেসি দুজনেই সফল; সফল তাঁদের দলও। নিজেদের ক্যারিয়ারের শেষ পর্যায়ে তাই দুজনে উপভোগ করছেন মনের মতই।

বিশ্বকাপ না পেলেও ক্লাব ফুটবলে জেতার কিছুই বাকি নেই ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর; লিওনেল মেসির তো ফুটবল ক্যারিয়ারেই অপূর্ণতা নেই। তবু শিরোপা জয়ের নেশা তাঁদের কাটেনি, তবু মাঠে কিছু করে দেখানোর ক্ষুধা মেটেনি। এজন্যই হয়তো ফুটবল নামক বইয়ের সবচেয়ে গৌরবান্বিত অধ্যায় হয়েছেন দুজনে, পেয়েছেন সর্বকালের সেরার স্বীকৃতিও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link