নেপাল বাঁধাই হতে পারেনি পাকিস্তানের

কোন চমক নয়, কোন অঘটন নয় – যা ভেবেছিলেন তাই হয়েছে। নবাগত নেপালকে উড়িয়ে দিয়েই এশিয়া কাপের এবারের আসর শুরু করেছে পাকিস্তান। ম্যাচের একটা সময় নেপাল কিছুটা এগিয়ে থাকলেও শেষ পর্যন্ত প্রতিপক্ষের কোন পরীক্ষাই নিতে পারেনি তারা।

পাকিস্তানের ছুড়ে দেয়া ৩৪২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে নেপাল হেরেছে রেকর্ড ব্যবধানে; সংখ্যার হিসেবে ২৩৮ রানের। বাবর, ইফতেখারের অতিমানবীয় ব্যাটিংয়ের পর শাহীন, শাদাবদের বোলিং নৈপুণ্যে বিশ্বকে অবাক করার মত কিছু করতে পারলো না লামিচানেরা।

এশিয়ার কাপে শুরুটা ব্যাট হাতেই করতে চেয়েছে পাকিস্তান, তাই তো টসে জিতে ফিল্ডিংয়ে পাঠিয়েছিল নেপালকে। প্রথম বলেই চার মেরে অবশ্য এশিয়ান ক্রিকেটের ঝাঁঝ নবাগতদের বুঝিয়ে দিয়েছিলেন ফখর জামান, তবে নিয়ন্ত্রিত বোলিং আর দারুণ ফিল্ডিংয়ে একটা সময় পাকিস্তানকে চাপে ফেলে দেয় কারান কেসিরা।

মাত্র ১৪ রানের মাথায় ফখর আউট হওয়ার পর রান আউটের ফাঁদে পড়ে ফিরে যান আরেক ওপেনার ইমাম উল হকও। অধিনায়ক বাবর আজমের সঙ্গে রিজওয়ান হাল ধরার চেষ্টা করলেও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি রিজওয়ান, ৪৪ রান করে তিনিও হাঁটেন ইমামের পথে। এরপর দ্রুত আঘা সালমান বিদায় নিলে খানিকটা অস্বস্তিতে পড়ে দলটি।

রানরেটও কমে এসেছিল অনেকটা; ৩০ ওভার শেষে স্বাগতিকের সংগ্রহ ছিল মাত্র ১৩৯ রান। শঙ্কা জেগেছিল ৩০০ রানের কাছাকাছি যাওয়া নিয়েও; কিন্তু ঝড়ো বাতাসে শঙ্কার মেঘকে উড়িয়ে নিয়ে যান ইনফর্ম বাবর আর ইফতেখার আহমেদ। দুজনের ২১৪ রানের অতিমানবীয় জুটতে ভর করে ৩৪২ রানের পাহাড়সম পুঁজি পায় পাকিস্তান। বাবরের ব্যাট থেকে এসেছে ১৫১ রান, আর ইফতেখার পেয়েছেন প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরির স্বাদ।

শুরুতে রয়ে সয়ে খেললেও শেষ দশ ওভার নেপালি বোলারদের উপর তান্ডব চালিয়েছিলেন এই দুই ডানহাতি। এই দশ ওভারেই তাঁরা করেছেন ১২৯ রান। একমাত্র ললিত রাজবানসি ছাড়া সব নেপালি বোলারদের ইকোনমি ছিল ছয় বা তার উপরে।

বিশাল টার্গেট তাড়া করতে নেমে সূচনাতেই এলোমেলো হয়ে যায় নেপাল। প্রথম ওভারেই শাহীন শাহ আফ্রিদির চিরচেনা ইনসুইং ডেলিভারিতে এলবিডব্লুর ফাঁদে আটকা পড়েন দলটির অধিনায়ক রোহিত পাউডেল। এর আগের বলেই উইকেটের পিছনে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছিলেন ওপেনার কুশল বার্টেল। সেই ধাক্কা সামলে উঠার আগেই দ্বিতীয় ওভারে নাসিম শাহ সাজঘরে পাঠান আরেক ওপেনার আসিফ শেখকে।

সম্পাল কামি আর আরিফ শেখ অবশ্য এরপর খানিকটা প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন। দুইজনের ধৈর্যশীল ব্যাটিংয়ে লজ্জার হাত থেকে রক্ষা পায় নেপাল। ১৫তম ওভারে হারিস রউফের বলে আরিফ বোল্ড হলে ভাঙে ৫৯ রানের পার্টনারশিপ; সেই সঙ্গে ধ্বস নামে ব্যাটিং লাইনআপে। একে একে ফিরে যান গুলসান ঝা, দীপেন্দ্র সিংরা।

শেষমেশ ১০৪ রানে থামে নেপালের ইনিংস। দলটির মাত্র তিনজন ব্যাটসম্যান দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে পেরেছিল। পাকিস্তানের হয়ে শাদাব খান নিয়েছেন তিন উইকেট; শাহীন এবং রউফ শিকার করেছেন দুইটি করে।

পাকিস্তান এবং নেপাল দুই দলেরই পরবর্তী ম্যাচ শক্তিশালী ভারতের বিপক্ষে। নেপালের বিপক্ষে ভারত পরিষ্কার ফেভারিট হলেও দুই তারিখের ম্যাচে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে পারে দুই প্রতিবেশীর মাঝে। যদিও প্রথম ম্যাচ জিতে কিছুটা হলেও স্বস্তিতে থাকবে বাবর আজমের দল।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link