বাদশাহ বাবরের সেনাপতি ইফতেখার

লড়াইয়ে এরপর এসে যোগ দেন ইফতেখার আহমেদ; কাঁধে কাঁধে মিলিয়ে দুজন সমান তালে শাসন করেছেন প্রতিপক্ষ বোলারদের।

প্রথমবারের মত বড় মঞ্চে খেলতে নেমেছে নেপাল। কিন্তু না, নিজেরে ভড়কে যায়নি; উল্টো ভড়কে দিয়েছিল পাকিস্তানকেই। নিয়ন্ত্রিত বোলিং আর দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়ে স্বাগতিকদের হাত খুলে খেলতেই দেয়নি দলটি। ৩০ ওভারের মধ্যে চার উইকেট হারিয়ে মাত্র ১৩৯ রান তুলতে পেরেছিল রিজওয়ানরা।

অস্বস্তি যখন মাথা চাড়া দিয়ে উঠছিল, শঙ্কার মেঘ যখন আকাশে জমা হচ্ছিল একটু একটু করে – বাবর আজম তখন একাই লড়াই করে যাচ্ছিলেন। আর এই লড়াইয়ে এরপর এসে যোগ দেন ইফতেখার আহমেদ; কাঁধে কাঁধে মিলিয়ে দুজন সমান তালে শাসন করেছেন প্রতিপক্ষ বোলারদের। আর শেষপর্যন্ত পাকিস্তানকে পৌঁছে দিয়েছেন অনন্য উচ্চতায়।

ইফতেখার আহমেদ যখন ক্রিজে আসেন, পাকিস্তান তখন ১২৪ রানে হারিয়েছিল চারজন ব্যাটসম্যানকে; রানরেটও ছিল চারের ঘরে। রাজবানসি, লামিচানেরদের দারুণ বোলিংয়ে শুরুটা রয়ে সয়েই করতে হয়েছিল ইফতেখারকে। তবে সেট হয়ে যাওয়ার পর আর পিছনে ফিরে তাকাননি তিনি, ঝড় তুলেছেন নেপালি বোলারদের উপর।

ডানহাতি এই ব্যাটার হাফসেঞ্চুরি করেছিলেন ৪৩ বলে, এরপর হয়ে উঠেন আরো বিধ্বংসী। পরের ২৪ বলেই তিনি ছুঁয়ে ফেলেন শতকের মাইলফলক। মাত্র ৬৭ বলে করা এই সেঞ্চুরি তাঁর ক্যারিয়ারের প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরি; বড্ড প্রয়োজনের সময়েই এসেছে ‘বিশেষ’ এই সেঞ্চুরি।

শেষপর্যন্ত নির্ধারিত পঞ্চাশ ওভার পর্যন্ত খেলে ৭১ বলে ইফতেখার আহমেদের সংগ্রহ ১০৯ রান। ১৫৩.৫২ স্ট্রাইক রেটের এই ইনিংসে চারটি ছয়ের বিপরীতে চার আছে এগারোটি। ইনফর্ম বাবর আজমকে সঙ্গ দেয়া, ডেথ ওভারে প্রত্যাশিত ফিনিশিং আর গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বড় রান – ৩২ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার সবকিছু করেছেন এক ইনিংসে।

হার্ডহিটার হিসেবে আগে থেকেই সুনাম রয়েছে ইফতেখার আহমেদের। টি-টোয়েন্টি দলেরও নিয়মিত সদস্য তিনি; তবে ওয়ানডে ফরম্যাটের সাথে নিজেকে ঠিকঠাক মানিয়ে নেয়ার কাজটা করতে পারেননি লম্বা একটা সময়।

২০১৫ সালে এই সংস্করণে অভিষেক হলেও এখন পর্যন্ত ম্যাচ খেলেছেন মাত্র ১৫টি। পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট, ওয়ানডে ফরম্যাটে অন্তত ইফতেখার আহমেদ পাকিস্তানের সেরা পছন্দ ছিলেন না কখনোই। এমনকি এশিয়া কাপ, বিশ্বকাপের মত বড় মঞ্চে তাঁকে সুযোগ দেয়ার বিপক্ষে মত দিয়েছেন অনেকে।

কিন্তু এই তারকার সামর্থ্যের উপর ভরসা রেখেছে টিম ম্যানেজম্যান্ট; আর সেটারই প্রতিদান দিলেন নেপালের বিপক্ষে ম্যাচে। বিপর্যয়ের মুখে সম্রাট বাবর আজমের অনুগত সেনাপতির মতই দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।

পুরো এশিয়া কাপ, এরপর বিশ্ব আসর – সবখানেই এভাবে এগিয়ে আসবেন এই ব্যাটসম্যান সেটাই এখন ভক্ত-সমর্থকদের প্রত্যাশা।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...